“আমি চাই না আবরাম পাবলিক লাইফ সার্কাসের অংশ হোক!” – শাহ রুখ খান

সুপারস্টার শাহরুখ খান বলেছেন, তিনি চান না তার ছেলে আবরাম তার মত পাবলিক লাইফের সার্কাসে আসুক।

গত বছরের মে মাসে শাহরুখ খান এবং গৌরী দম্পতির ছোট সন্তান আবরাম সারোগেসী’র (অন্যের গর্ভে বাচ্চা ধারণ) মাধ্যমে জন্মগ্রহণ করে।

পিটিআইকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে শাহ রুখ বলেন, তার সম্পর্কে কথা বলতে আমি স্পষ্টতই খুশি না। সে আমার সন্তান, অন্য কারো নয়। যদি আমি আপনাকে আমার বাড়িতে আসার অনুমতি দেই তাহলে আপনি আমার বাড়িতে এসে তাকে দেখতে পারেন।

তিনি আরো বলেন, সে আলোকচিত্রের জন্য কোনো বস্তু না। আমি যেরকম পাবলিক লাইফের সার্কাসের অংশ, আমি তাকে এটাতে অংশগ্রহণ করাতে চাই না। আমি এটাতে আছি… পাবলিক লাইফ… ভালো, খারাপ, কুৎসিত, মিডিয়ার মহত্ব, অবাক হওয়া… আমি এগুলির অংশ, আমার সন্তানেরা নয়।

গর্ভকালীন সময়ের চৌত্রিশতম সপ্তাহে আবরাম জন্মগ্রহণ করে। জন্মের পর প্রথম দিকের বেশিরভাগ সময় সে হাসপাতালেই কাটায়।

শাহ রুখ খান বলেন, আমার ক্যারিয়ারের সময়ের মধ্যে এই জিনিসটিই আমাকে অস্বস্তিতে ফেলেছে যে, একটি বাচ্চা যখন অসুস্থ আর আপনারা তাকে একটি ইস্যু বানিয়েছেন… আমার কাছে এটা খুব অপমানজনক মনে হয়েছে। আমি একজন মুভি স্টার, আমাকে অপমান করুন কিন্তু আমার সন্তানদেরকে না।

তার আগের দুই সন্তান — আরিয়ান এবং সুহানা তার সাথে মিডিয়ার সামনে পোজ দিয়েছে, এ প্রসঙ্গে শাহ রুখ বলেন, কারণ তারা বড় হয়েছে এবং তারা আমার সাথে ঘোরাঘুরি করে।

সে খুব ছোট, আমার কাজের যে ধরন সেখানে আমি এই নিষ্পাপকে অ্যালাউ করব না। অন্যরা করে, তা ভালো… আমি এটা করি না, সুতরাং আমি অন্যদের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে পারব না। একদিন যদি আমার মনে হয় বের হয়ে আসা উচিৎ আমি আসব। আমার বাচ্চা, আমার জীবন… যখন লোকজন বলে আমি কেন তাকে পাবলিকের সামনে নিয়ে আসি না তখন আমার খুব বাজে অনুভূতি হয়। আপনি কোনো ছবিও নিতে পারবেন না কারণ আমি এটা পছন্দ করি না। আমার অস্বস্তি হয়।

জন্মের আগেই লিঙ্গ পরীক্ষা করার ব্যাপার রিপোর্ট হওয়া নিয়ে শাহ রুখ খান এখনো নারাজ। জন্মের আগেই লিঙ্গ নির্ধারণ করা ভারতে নিষিদ্ধ। এই ঘটনাটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য মুম্বাই প্রশাসন তার বাড়িতে একটি দল পাঠায়।

শাহ রুখ বারবার এই ঘটনা অস্বীকার করেছেন।

তিনি বলেন, মিডিয়া যখন সারোগেসি’র ব্যাপারটি প্রকাশ করেছে আমার তা ভালো লাগে নি। আমি এটা ঘৃণা করি। তারা বলে আমি লিঙ্গ নির্ধারণী পরীক্ষা করিয়েছি, এটা বাজে কথা। এইসব বাজে ব্যাপার ক্ষমা করে দেয়ার জন্য আমি যথেষ্ট শিক্ষিত। সে অসুখে ভুগছিল… সে অসুস্থ ছিল আর মানুষজন লিঙ্গ নির্ধারণ নিয়ে কথা বলছিল কারণ সে একজন বিখ্যাত মুভি স্টারের সন্তান।

শাহ রুখ বলেন, সে একদিন বড় হবে এবং এগুলি হয়ত পড়বে অথবা হয়তো পড়বে না… কিন্তু এগুলি খুব দুঃখজনক। সে শুধু আমার সন্তান হওয়ার কারণে সে কারো থেকে কমও না অথবা বেশিও না… একটা বাচ্চা একটা বাচ্চা-ই। সে অসুস্থ ছিল এবং এই ব্যাপারগুলি ঘটছিল। আমার খুব বাজে অনুভূতি হয়েছে।

শাহ রুখ জানিয়েছেন এত সুন্দর একটি বাচ্চা থাকার জন্য তিনি অনেক সুখী।

তিনি বলেছেন, সে খুব দেখতে মিষ্টি, সুন্দর এবং চমৎকার। সে অনেক হাস্যোজ্জ্বল একটি শিশু। সে অনেক আনন্দ এবং সুখ নিয়ে এসেছে। তার সাথে থাকাটা আনন্দের। সবাই তার সাথে থাকতে চায়। তার মাঝে অনেক ইনোসেন্স এবং ভালোবাসা আছে… সে খুব মিষ্টি। বাচ্চারা তাকে পছন্দ করে… আমি পছন্দ করি।

শাহ রুখ আরও বলেন, আমার অফিসের লোকজন তাকে দেখতে বাড়িতে আসার জন্য অজুহাত তৈরি করে। এখন আমাকে বাচ্চাদের শপিং আবার করতে হয়… যেটা আমি দশ বছর আগে করেছি।

তার অন্য দুইজন সন্তান ছাড়াও মাঝে মাঝে আবরামও শাহরুখ খানের শ্যুটিং দেখতে আসে। শাহ রুখ বলেন, সে সেটেও আসে। আরিয়ান এবং সুহানা পড়াশোনা করছে ফলে আমি তাদেরকে স্কুল থেকে নিয়ে আসতে পারি না। আবরাম অনেক ছোট, কিন্তু সে মুম্বাইতে আমার শ্যুটিং দেখতে এসেছে কিন্তু বিদেশে নয়।

তিনি বলেন, আমার পরিবার শ্যুটিং দেখতে পছন্দ করে না। আমি যদি সকাল নয়টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত শ্যুটিং করি তারা বিরক্ত হয়। আমি যখন জাব তাক হ্যায় জান ছবির শ্যুটিং করছিলাম তারা সবাই লন্ডনে ছিল, তারা দুবাইয়েও ছিল।



মন্তব্য চালু নেই