আমি আচরণবিধির ঊর্ধ্বে : এরশাদ

আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দল সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রী পদমর্যাদার বিশেষ দূত ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

ভোট চাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি আচরণবিবির ঊর্ধ্বে। আমার জন্য আচরণবিধির কোনো লঙ্ঘন নেই। আমি পার্টির চেয়ারম্যান, কর্মীদের পাশে আমাকে দাঁড়াতেই হবে।’

অথচ নির্বাচন কমিশনের আচরণ বিধির ১৪ নং অনুচ্ছেদে সরকারি সুবিধাভোগী কতিপয় ব্যক্তির নির্বাচনী প্রচারণা এবং সরকারি সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত বাধা নিষেধ সংক্রান্ত বিধির ‘ক’ ধারায় বলা হয়েছে, ‘জাতীয় সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, চীপ হুইপ, হুইপ এবং সরকারের কোনো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা তাঁহাদের সমমর্যাদার সরকারি সুবিধাভোগী কোনো ব্যক্তি, নির্বাচনপূর্ব সময়ে নির্বাচনী প্রচারণায় বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন না।’

মন্ত্রী পদমর্যাদার হওয়া সত্ত্বেও সরাসরি ভোট চাওয়া আচরণ বিধির লঙ্ঘন কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং অফিসার মিহির সারওয়ার মোর্শেদ  বলেন, ‘আমি আপনার কাছে শুনলাম। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’

রাজধানীর উত্তর জুরাইন মুন্সীবাড়ী শাহাদাত হোসেন রোডে জাতীয় পার্টি শ্যামপুর-কমদতলী থানা আয়োজিত কর্মিসভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এরশাদ প্রার্থীদের পক্ষে সরাসরি প্রচারণা চালান।

এর আগে এরশাদ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলনের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন।

তিনি বলেন, ‘মিলন আমাদের প্রার্থী। ওর জেতার সম্ভাবনা আছে। আমাদের অর্থের অভাব আছে, সংগঠনের অভাব আছে। তারপরও ওর জেতার সম্ভাবনা আছে। ওর জন্য দোয়া চাই। তোমরা ওকে ভোট দেবে।’

এ ছাড়া এরশাদ ঢাকা-৪ আসনের শ্যামপুর-কদমতলী এলাকার চারটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়েও সরাসরি ভোট চান।

এরশাদ বলেন, ‘৫৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ইব্রাহিম মোল্লা আমার স্নেহভাজন। তাকে জয়ী করতে হবে। তোমরা রাজি আছ? ৫১ নং ওয়ার্ডে কাওছার আহমেদ, ৫২ নং ওয়ার্ডে মাঈনুদ্দীন বাবু, ৪৭ নং ওয়ার্ডে ফারুক হোসেন আমাদের প্রার্থী। ওদেরকে জয়ী করতে হবে।’

সভায় আগত পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ এ সময় হাত তুলে এরশাদকে তার সমর্থিত প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

এরশাদ চারজন কাউন্সিলর প্রার্থীকে তার ডানে-বামে রেখে বলেন, ‘একটু আগে ইব্রাহিম মোল্লা বক্তৃতা করেছে। ও আমার চেয়ে সুন্দর করে কথা বলে। ও কাউন্সিলর হওয়ার যোগ্য কি না? আপনারা ওকে ভোট দেবেন?’

এ সময় আবারও সবাই হাত তুলে ৫৪ নং ওয়ার্ডে জাপা সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ইব্রাহিম মোল্লাকে ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

এরশাদ বলেন, ‘আমরা ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করি না। আমরা পরিবর্তনের রাজনীতি করি। এবার কাউন্সিল ও পরে সংসদ সদস্যপদে পরিবর্তন আনতে হবে। ইনশাআল্লাহ আমরা ক্ষমতায় যাবই।’

এরশাদ আরও বলেন, ‘আমার বয়স হয়েছে, উদ্যম কমেনি। আমাকে আরেকবার আপনারা সেবা করার সুযোগ দিন। আগামী নির্বাচনে আমরা অংশ নিব। আপনারা আমাকে ভোট দেবেন।’

কর্মিসভার সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, মহানগর জাপা নেতা সুজন দে প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।



মন্তব্য চালু নেই