আমিতো দেশে যেতে চাই, কিন্তু সরকার ভয় পায় : নূর হোসেন

‘আরিফুল হক হাসানকে উপ-নির্বাচনে আমিই দাঁড় করিয়েছি। আপনি নিশ্চিত থাকেন, সে পাস করবে (নির্বাচনে জিতবে)। ২৩ বছর আমাকে কেউ হারাতে পরেনি।’

বারাসত আদালতে প্রবেশের মুখে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নূর হোসেন এমন মন্তব্য করেন। দেশে ফেরার প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি তো দেশে ফেরত যেতে চাই, আমি আগেও বলেছি আমি যেতে চাই। কিন্তু কেন নিচ্ছে না, সরকার ভয় পায়।’

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনায় চার্জশিটভুক্ত আসামি নূর হোসেনকে তিন মাস পর বুধবার সকাল ১১টা নাগাদ কলকাতার আদালতে হাজির করা হয়।

৯১ দিন জেলহাজতের মেয়াদ শেষে বুধবার নূর হোসেন এবং ওই মামলার অন্য দুই অভিযুক্ত ওয়াহেদুজ্জামান সেলিম ও খান সুমনের হাজিরার কথা ছিল। কিন্তু নূর ও সেলিম আদালতে উপস্থিত থাকলেও অনুপস্থিত ছিলেন খান সুমন। এরপর আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। ২৪ আগস্ট আসামিদের ফের আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেন বারাসত আদালত।

খান সুমনের আইনজীবী অনুপ ঘোষ বলেন, মামলায় বুধবার তিনজনের আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু খান সুমন গত তারিখেও অনুপস্থিত ছিল, আজও সে অনুপস্থিত। এ কারণে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।

তিনি বলেন, গত তিন মাসে সুমনের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ হয়নি। সুমন এখন কোথায় আছে তাও বলতে পারব না।

খান সুমনের নিরুদ্দেশের বিষয়ে নূর হোসেনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘কে বলেছে এই কথা? সে কোথাও যায়নি। সুমন আমার লোক। সে পালাতে পারে না।’

প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জে সেভেন মার্ডারের প্রধান আসামি নূর হোসেনের ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২ আগস্ট উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। হত্যার ওই ঘটনার পর ভারতে পালিয়ে গেলে ৭ মে নূর হোসেনকে ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। একই সঙ্গে ওই পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়।

২৯ জুন নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন অফিসার ও উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার তারিফুজ্জামান ২ আগস্ট এ ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন।

শিমরাইল, টেকপাড়া, ওয়াপদা কলোনি, আটি ও উত্তর আজিবপুর নিয়ে নাসিকের ৪ নম্বর ওয়ার্ড। ওয়ার্ডের পাঁচ কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ১৪ হাজার ১০৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ১৮১ জন এবং মহিলা ভোটার ৬ হাজার ২২৫ জন। বুথ সংখ্যা ৩৭টি।

উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন পাঁচজন। তারা হলেন- কেন্দ্রীয় ওলামা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমির হোসেন ভাণ্ডারী, সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম, সেভেন মার্ডারের প্রধান আসামি নূর হোসেনের অর্থ উপদেষ্টা আরিফুল হক হাসান, ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ ও রাসেল।

নূর হোসেনের সঙ্গে এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর এক বছর পলাতক থেকে ১১ জুলাই নূর হোসেনের ক্যাডার বাহিনীবেষ্টিত হয়ে এলাকায় ফিরে আসেন তারই অর্থ উপদেষ্টা আরিফুল হক হাসান। ঈদের পরদিন নূর হোসেনের ক্যাডারদের নিয়ে গাড়িবহর বের করে প্রচারণা শুরু করেন তিনি। সেই থেকে এলাকায় বিরাজ করছে ভীতিকর পরিস্থিতি।



মন্তব্য চালু নেই