আমরা খাই ৩ কেজি, আমেরিকানরা ৫০ কেজি!

বাংলাদেশিরা বছরে মাংস খায় মাত্র সাড়ে তিন কেজি আর আমেরিকানরা খায় ৫০ কেজির বেশি। অপরদিকে জাপানিরা বছরে ডিম খায় ৬০০টি আর বাংলাদেশিরা খায় সর্বোচ্চ ৫০টি। ফলে আমাদের দেশের মানুষের পুষ্টিচাহিদার সিংহভাগ অপূর্ণ থাকে। এতে শারীরিক গঠন উন্নত দেশের মানুষের চেয়ে অনেক দুর্বল হয়।
রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশনের বাংলাদেশ শাখার আয়োজনে ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ থাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পুরণে পোল্ট্রি শিল্পের ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়।
১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় শুরু হচ্ছে যাচ্ছে তিনদিনব্যাপী নবম আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি শো ও সেমিনার-২০১৫। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিতব্য এ শো বাংলাদেশে পোল্ট্রি শিল্পের সবচেয়ে বড় আসর বলে জানান আয়োজকরা।
সেমিনারে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশনের বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মসিউর রহমান।
তিনি জানান, আন্তর্জাতিক মানের এ আয়োজনটি ১৯৯৯ সাল থেকে প্রতি ২ বছর পর পর আয়োজন করে আসছে। পূর্বের যেকোনো সময়ের তুলনায় এবারের আয়োজনটি হবে বেশি আকর্ষণীয়। এবারের শোতে থাকছে ২৯৭টি স্টল। অংশ নিচ্ছে ১৪৭টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান। শোর পাশাপাশি থাকবে সেমিনার। যেখানে দেশি-বিদেশি ৪৭টি টেকনিক্যাল পেপারের মাধ্যমে পোল্ট্রি শিল্পের গুরুত্ব তুলে ধরা হবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশে শূন্য থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের মধ্যে ৩৮ দশমিক ৭ শতাংশ খর্বাকৃতির, ৩৫ দশমিক ১ শতাংশ কম ওজনের এবং ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ ক্ষীণকায়। অপুষ্টির শিকার মা ও শিশুর সংখ্যা পূর্বের তুলনায় কমলেও তা আশাব্যঞ্জক নয়। তাই মেধাবী ভবিষ্যত প্রজন্ম গড়ে তুলতে হলে পুষ্টিকর খাদ্য যেমন ডিম ও মুরগির মাংস খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি বিজ্ঞান ইনিস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. নাজমা শহীন বলেন, ‘প্রান্তিক দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে ডিম ও মুরুগির মাংস খাওয়ার পরিমাণ খুবই কম। জাপানের মানুষ বছরে ডিম খায় গড়ে ৬০০টি। সেখানে বাংলাদেশের মানুষ খায় গড়ে মাত্র ৪৫-৫০টি ডিম। আমরা মুরগির মাংস খাই বছরে গড়ে মাত্র ৩ দশমিক ৬৩ কেজি। অন্যদিকে আমেরিকার মানুষ খায় গড়ে প্রায় ৫০ দশমিক ১ কেজি। এ অবস্থায় খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা ছাড়া আমাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করার আর কোনো উপায় নেই।’
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এমএ সাত্তার মণ্ডলের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ন্যাশনাল কনসালট্যান্ট ড. নিতিশ চন্দ্র দেবনাথ, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষেণা ইনস্টিটিউটের প্রধান গবেষক ড. মো. গিয়াস উদ্দিন, ন্যাশনাল ইনিস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির সিএসও ড. জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই