স্থায়ী কমিটির সঙ্গে খালেদার বৈঠক, কার্যালয়ের সামনে থেকে পুলিশ প্রত্যাহার
অবরোধ চলবে : খালেদা জিয়া
পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধ চলতে থাকবে বলে জানিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া।
রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরো বলেন, ‘অতীতের ধারাবাহিকতায় গত এক বছর ধরে এ সরকার দেশ জুড়ে গুম, খুন, ও হত্যার রাজনীতিতে মেতে উঠেছে। তারই প্রতিবাদে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামের অংশ হিসেবে শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি জোট।’
বিএনপি গুম, খুন, হত্যা ও পুড়িয়ে মারার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না বলে দাবি করেন বেগম খালেদা জিয়া।
স্থায়ী কমিটির সঙ্গে খালেদার বৈঠক
দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণো ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আর এ বৈঠকের মাধ্য দিয়ে আসতে পারে নতুন সিদ্ধান্ত। সোমবার সন্ধ্যায় গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক শুরু হয়। এর আগে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বিকেল পৌনে ৫টার দিকে পরপর কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার (অব.) হান্নান শাহ, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, আরএ গনি, নজরুল ইসলাম খান ও সারোয়ারি আলম কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকেছেন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৫ দিন পর রোববার দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের সামনে থেকে পুলিশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ের সামনে থেকে জলকামান ও ব্যারিকেডও সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
তবে ৮৬ নম্বর রোডের দুই মাথাতেই পুলিশ মোতায়েন আছে কিন্তু ব্যারিকেড নেই।
আপাতত কার্যালয়েই থাকছেন খালেদা
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গুলশানে অবস্থিত তার রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে পরবর্তী কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত বের হবেন না। খালেদা জিয়ার মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শাইরুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করে। সোমবার দুপুরে শাইরুল কবির খান বলেন, ‘বর্তমানে দেশে অবরোধ চলছে। তাই নতুন করে দলের কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত গুলশানের কার্যালয় থেকে বের হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই খালেদা জিয়ার।’
এর আগে রোববার রাত আড়াইটার দিকে বিএনপির চেয়ারপারসনের এই কার্যালয়ের সামনে থেকে পুলিশের দুটি ভ্যান ও জলকামান সরিয়ে নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে কার্যালয়ের সামনে অবস্থানরত অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদেরও প্রত্যাহার করা হয়। এর পর থেকে সেখানে অল্প কয়েকজন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছিলেন। তবে সোমবার দুপুরে সেই অল্প কয়েকজন পুলিশ সদস্যকেও সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
গত ৩ জানুয়ারি রাত থেকে খালেদা জিয়া এই কার্যালয়ে অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন। গতকাল রাতে কার্যালয়ের সামনে থেকে পুলিশের দুটি ভ্যান ও জলকামান এবং সেখানে অবস্থানরত অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহার করা হলেও এখন পর্যন্ত কার্যালয়ের ভেতরেই অবস্থান করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
খালেদার কার্যালয়ের সামনে থেকে পুলিশ প্রত্যাহার
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে পুলিশ সরে গেছে। সেখানে বিএনপি প্রধানের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাহিনীর (সিএসএফ) সদস্যদের দেখা গেছে। সিএসএফের একটি গাড়ি ফটকের সামনে আড়াআড়িভাবে রাখা আছে। ফটকের ভেতরেও সিএসএফের একটি গাড়ি রয়েছে।
এ ব্যাপারে গুলশান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার(এসি) নুরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কখনই অবরুদ্ধ করা হয়নি। তার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছিল। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ায় নিরাপত্তা বলয় শিথিল করা হয়েছে। তিনি বাসায় যেতে চাইলে যেতে পারেন। পুলিশ তাকে সহযোগিতা করবে।
সিএসএফের অবস্থানের ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান বলেন, কেন গাড়ি রাখা হয়েছে তা সিএসএফই বলতে পারবে। গতকাল রাতে হঠাৎ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও পুলিশ তুলে নেওয়া হয়েছে। হয়তো বা নিরাপত্তার কারণেও সিএসএফ রাখা হতে পারে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে তার কবরে খালেদা জিয়া শ্রদ্ধা জানাতে যাবেন কি না—জানতে চাইলে শায়রুল কবির খান দাবি বলেন, জিয়াউর রহমানের কবরে কাউকেই যেতে দেওয়া হচ্ছে না। এর আগে যারা সেখানে গেছেন তাদের বাধা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
এর আগে রোববার রাত আড়াইটার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের এই কার্যালয়ের সামনে থেকে পুলিশের দুটি ভ্যান ও জলকামান সরিয়ে নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে কার্যালয়ের সামনে অবস্থানরত অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদেরও প্রত্যাহার করা হয়। এর পর থেকে সেখানে অল্প কয়েকজন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছিলেন।
গত ৩ জানুয়ারি রাত থেকে খালেদা জিয়ার এই কার্যালয়ে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন। গতকাল রাতে কার্যালয়ের সামনে থেকে পুলিশের দুটি ভ্যান ও জলকামান এবং সেখানে অবস্থানরত অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহার করা হলেও এখন পর্যন্ত কার্যালয়ের ভেতরেই অবস্থান করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
প্রসঙ্গত, গত ৩ জানুয়ারি রাতে গুলশানের কার্যালয় থেকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেতে চাইলে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন খালেদা জিয়া। এরপর থেকেই তিনি গুলশান কার্যালয়ে রয়েছেন। এর মধ্যে গত ৫ জানুয়ারি দলীয় কর্মসূচি পালন করতে না পেরে সারা দেশে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেন বিএনপি প্রধান।
মন্তব্য চালু নেই