আত্মসমর্পণের পর কারাগারে ওসি হেলাল

রাজধানীর খিলগাঁও থানার প্রাক্তন ওসি হেলাল উদ্দিনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার দুপুরে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আলমগীর কবীর রাজের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন হেলাল উদ্দিন। এ সময় তার আইনজীবী সাইদুর রহমান জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

২০১১ সালের জুলাইয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের তৎকালীন ছাত্র কাদেরকে আটকের পর তাকে ছিনতাইকারী হিসেবে দেখানোর জন্য থানায় নিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করেন ওসি হেলাল। কিন্তু স্বীকারোক্তি না পেয়ে চাপাতি দিয়ে তার পায়ে আঘাত ও নির্যাতন করেন।

গত ১৭ মে ওই মামলার রায়ে হেলালকে তিন বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয় আদালত। পাশাপাশি তাকে দশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।

পুলিশের তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত কাদের বর্তমানে একজন সরকারি কর্মকর্তা। বিসিএস (শিক্ষা) দিয়ে তিনি লক্ষ্মীপুর সরকারি মহিলা কলেজে শিক্ষকতা করছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ১৫ জুলাই আব্দুল কাদের তার ছোট বোন ফারজানা আক্তারকে নিয়ে গুলশানের ইন্দিরা গান্দী কালচারাল সেন্টারে বৃত্তি অনুষ্ঠানে যান। সেখান থেকে হলি ফ্যামিলি স্টাফ কোয়ার্টারে তার খালার বাসায় বোনকে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে যাচ্ছিলেন কাদের। সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কার্যালয়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় টহল পুলিশ তাকে আটক করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং পরিচয়পত্র দেখানোর পরও ছিনতাইকারী বলে তাকে খিলগাঁও থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে তাকে শারিরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। এরপর তাকে মোহাম্মদপুর থানার দুটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

একটি জাতীয় দৈনিকে ঢাবি ছাত্র আব্দুল কাদেরকে পুলিশি নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ পেলে ২০১১ সালের ২৮ জুলাই হাইকোর্ট খিলগাঁও থানার ওসি হেলাল উদ্দিন, এসআই আলম বাদশা ও এএসআই শহিদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করতে পুলিশের মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দেন।

পরবর্তীতে কাদেরের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোয় কাদেরকে অব্যাহতির আবেদন জানিয়ে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। ২০১২ সালের ২৩ জানুয়ারি চার্জশিটের গ্রহণযোগ্যতা শুনানি শেষে কাদেরকে মামলাগুলোর দায় হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ওইদিনই কাদের হেলাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।



মন্তব্য চালু নেই