আগরতলায় ইন্টারনেট গেটওয়ে ভিত্তির দিন বাংলাদেশে নেট খরচ কমানোর সুসংবাদ

বাংলাদেশ-ভারত ব্যান্ডউইথ সংযোগ প্রকল্পের জন্য অাগরতলায় ভিত্তি স্থাপনের দিন দেশে ইন্টারনেট খরচ কমানোর সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড। রোববার কোম্পানির বোর্ড সভায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাবে প্রতি মেগাবাইট/সেকেন্ড ব্যান্ডউইথের দাম ৬৬৫ টাকা করার সুপারিশ উঠছে। এখন এ দাম ১০ ডলার বা ৮০০ টাকার মতো।

শনিবার ভারতের টেলিকম মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ আগরতলায় সংযোগ প্রকল্পের ভিত্তি স্থাপন করেন। এর ফলে মুম্বাই এবং চেন্নাইয়ের পর আগরতলায় চালু হবে ভারতের তৃতীয় আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে।

চুক্তি অনুযায়ী, আগরতলায় স্থাপিত ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে বাংলাদেশের আখাউড়া পয়েন্টে কক্সবাজার থেকে আসা অপটিক্যাল ফাইবারে যুক্ত হবে। আর ওই গেটওয়ে ভারতের উত্তরপূর্বের সাত রাজ্যে ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ভারতের অন্য এলাকাতেও ইন্টারনেটের গতি বাড়াবে।

প্রকল্পে বাংলাদেশ থেকে অংশীদার বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার হোসেন মনে করেন, দু’ পক্ষই চুক্তির সুবিধাভোগী। চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এই চুক্তির ফলে তার অব্যবহৃত ব্যান্ডউইথ বিক্রি করে কিছু টাকা আয় করার সুযোগ পেলো।

বছরে টাকার অংকে তা ৯ কোটি।

মনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশ থেকে ইন্টারনেট কিনে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্য এখনকার চেয়ে কিছুটা কম মূল্যে দ্রুত গতির ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পাবে। তবে আমরা দেশের বাজারে যে মূল্যে ইন্টারনেট বিক্রি করছি, ভারত তার চেয়ে বেশি দামে আমাদের কাছ থেকে ব্যান্ডউইথ কিনবে।

আইটি বিশেষজ্ঞ মোস্তফা জব্বার মনে করছেন, চুক্তির ফলে ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশও উপকৃত হবে। কেননা এখন আমাদের ২০০ জিবির মত ব্যান্ডউইথ অব্যবহৃত পড়ে আছে।

‘এই পড়ে থাকা ব্যান্ডউইথ বিক্রি করে যদি আমাদের কিছু টাকা আসে, তা হলে ক্ষতির কিছু নাই,’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বের যেসব রাজ্য মুম্বাই ও চেন্নাই থেকে ব্যান্ডউইথ এনে ব্যবহার করছে, তারাও আগের তুলনায় কম মূল্যে ও দ্রুত গতির ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা পাবে।

এতো ব্যান্ডউইথ অবিক্রিত থাকতে বাংলাদেশের গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট আরও সহজলভ্য করা হচ্ছে না কেনো? এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে এরইমধ্যে কথা শুরু হয়েছে।

তিনি জানান, রোববার কোম্পানির বোর্ড সভায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাবে প্রতি মেগাবাইট/সেকেন্ড ইন্টারনেটের দাম ৬৬৫ টাকা করার সুপারিশ উঠছে।

এখন এ দাম ১০ ডলার বা ৮০০ টাকার মতো।

ভারতীয় বিএসএনএল প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের কাছ থেকে ১০ গিগাবাইট/সেকেন্ড ব্যান্ডউইথ লিজ নেবে। প্রয়োজনে তা বাড়িয়ে ৪০ গিগাবাইট/সেকেন্ড পর্যন্ত নিতে পারবে বিএসএনএল।

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠি লিখে আখাউড়া পথ দিয়ে বাংলাদেশের সহযোগিতায় একটি টেলিকম ব্যবস্থা গড়ে তোলার অনুরোধ করলে দিল্লী থেকে ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পরে দু’ দেশের মধ্যে চুক্তি হয় চলতি বছরের ৬ জুন।

চুক্তি অনুযায়ী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় থাকলেও ভারত তাদের স্বাধীনতা দিবস ১৫ আগস্ট তৃতীয় ইন্টারনেট গেটওয়ে চালুর আগ্রহ দেখায়। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ প্রস্তুতি নিচ্ছে। অার ভারতীয় প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগরতলায় ভিত্তি স্থাপন করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ।



মন্তব্য চালু নেই