আংটির পাথরে লেখা ‘আল্লাহ’র জন্য’

মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের সবচেয়ে প্রাচীন যোগসূত্র হলো বাণিজ্য। এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশে মানুষ পৌঁছেছে বাণিজ্যিক জাহাজে চেপে। ইতিহাসের বিভিন্ন অধ্যায়ে আমরা দেখতে পাই কিভাবে ইউরোপের সঙ্গে এশিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্ক রচিত হয়েছিল। অথবা, আফ্রিকার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের বাণিজ্যের দলিল দস্তাবেজও আমরা দেখতে পাই গবেষকদের কল্যাণে। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নরডিক অঞ্চলের মধ্যে বাণিজ্যের কোনো লিখিত দলিল এখনও পাওয়া যায়নি। কিন্তু গবেষকদের দাবি, মুসিলম বিশ্বের সঙ্গে নরডিক অঞ্চলের বাণিজ্য ছিল এবং নরডিকদের কাছ থেকেই মূলত মুসলিম বিশ্ব জাহাজ তৈরির বিভিন্ন কলাকৌশল আয়ত্ব করে।

সম্প্রতি নরডিক দেশ সুইডেনের একটি ভাইকিং গোরস্থান থেকে প্রায় এক হাজার বছরের পুরনো একটি আংটি উদ্ধার করা হয়েছে। সেই আংটির পাথরে খোদাই করে লেখা আছে ‘আল্লাহ’র জন্য’। যে কবর থেকে এই আংটিটি পাওয়া গেছে সেটা পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, আংটিটি ছিল একজন নারীর হাতের আঙুলে। এই আংটিটি পাওয়ার পর নরডিকদের সঙ্গে যে মুসলিম বিশ্বের যথেষ্ট যোগাযোগ ছিল তার প্রমাণ আরও স্পষ্ট হয়।
DIERসুইডেনের বিরকা নাম অঞ্চলে আংটিটি পাওয়া যায়। প্রাচীন মানচিত্র মোতাবেক এই অঞ্চলটি ছিল নরডিক অঞ্চলের অন্যতম নৌবন্দর। এই বন্দর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়ার উদ্দেশ্যে জাহাজ ভাসান দিতো ভাইকিংরা। গোরস্থান থেকে প্রাপ্ত আংটিতে যে পাথরটি লাগানো আছে সেটাকে প্রথমে ভাবা হয়েছিল বহুমূল্যবান বেগুনী পান্না। কিন্তু স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন যে, বেগুনী ওই পাথরটি আসলে বহুমূল্যবান কোনো পাথরের বদলে খুবই সাধারণ একটি কাচ মাত্র। এই কাঁচের উপরই প্রাচীন ‘কুফিক’ ভাষায় লেখা আছে ‘আল্লাহ’র জন্য’।

ইতিহাস ঘেটে জানা যায়, আজ থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর আগে মিসর এবং মেসোপটেমিয়া থেকে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান অঞ্চলের ব্যবসায়িরা কাঁচ কিনে নিয়ে যেতেন। তাই গবেষকরা ধারণা করছেন যে, এই কাঁচকেই ভাইকিংরা তাদের উত্তরের অভিযানের অংশ হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। আংটিটি উন্নত মানের রুপো দিয়ে তৈরি এবং খুবই দক্ষ কারিগর দ্বারা তৈরি করা হয়েছে এটা।

9



মন্তব্য চালু নেই