‘একটু দেখবেন কী?’

অশ্লীল ড্যান্স, জুয়ার আসর আর নেশার আড্ডায় চলছে কলারোয়ায় কথিত সার্কাস ॥ বন্ধ করার দাবি এলাকাবাসীর

অশ্লীল ড্যান্স, জুয়ার আসর আর নেশার আড্ডার মধ্য দিয়ে চলছে কলারোয়ার বয়ারডাঙ্গায় কথিত সার্কাস খেলা। যতসামান্য ও নামেমাত্র সার্কাসের অন্তরালে গভীর রাতে সেখানে প্রদর্শিত হচ্ছে বেশ কয়েকজন মেয়েদের দিয়ে অর্ধনগ্ন নয় বরং প্রায় উলঙ্গ অশীল ড্যান্স। রয়েছে ওয়ানটেনসহ বিভিন্ন নামীয় জুয়ার আসর। বাদ যাচ্ছে না মদ, ফেনসিডিল, গাঁজাসহ নানান নেশার আড্ডা। প্রত্যদর্শী অনেকে এমনটাই জানালেন। উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের বয়ারডাঙ্গা প্রাইমারী স্কুলের পার্শ্ববর্তী একটি ফসলী মাঠে বিশাল প্যান্ডেল দিয়ে চলছে এমনই অনৈতিক, বিবেক বর্জিত, ঘৃণ্য, অপকর্মমূলক কর্মকান্ড। কিন্তু দেখার যেন কেউ-ই নেই। গত ৫দিন ধরে সেখানে প্রতিরাতে এমন অবস্থা চলছে। জানা গেছে, ঢাকার দোহারের জনৈক সেলিমের মালিকানাধীন কিং স্টার সার্কাস নামে গত কয়েকমাস আগে সেখানে সার্কাসের প্যান্ডেল বসে। সেই সময় ২/৪দিন একটি হাতি নিয়ে নামেমাত্র লোকদেখানো সার্কাস শুরুর পর প্রায় নগ্ন ড্যান্স, জুয়া ও নেশার আসর বসায় এলাকাবাসীর চাপে তা বন্ধ হয়ে যায়। কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও টিনঘেরা সার্কাসের প্যান্ডেল উঠেনি। সম্প্রতি এইচএসসি ও সমমান পরীা চলাকালীন সময়ে আবারো নতুন উদ্যোমে শুরু হয় সেই সার্কাসের কার্যক্রম। তবে এখন নেই সেই হাতি। বিকেল থেকে সন্ধ্যা রাত পর্যন্ত সার্কাসের নামে লোকদেখানো ও নামে মাত্র কয়েকজন ব্যক্তিদের দিয়ে শারীরিক কসরত-জাতীয় খেলা, মোটরসাইকেল খেলা ইত্যাদি প্রদর্শিত হচ্ছে। কোন পশু-পাখি নেই। তবে রাত একটু গভীর হলেই শুরু হচ্ছে সার্কাসের অন্তরালে আসল খেলা। স্থানীয় অনেকে জানালেন, ‘সত্যিকারের হাতি না থাকলেও রাত ১২টার দিকে হাতির মতো মোটাসোটা কয়েকজন মেয়েরা অর্ধনগ্ন নয় বরং প্রায়-নগ্ন হয়ে ড্যান্স করছে।’ এই অশ্লীল ড্যান্সেই থেমে নেই সেখানকার পরিবেশ। পাশের টেন্টেই চলছে ওয়ানটেন নামক জুয়া সহ বিভিন্ন নামীয় নগদ টাকার ছড়াছড়ির জুয়ার আসর। জুয়ায় মশগুল ব্যক্তিরা শুধু নয় পাশের অনেকেই তখন থাকে নেশার মহাসাগরে। রীতিমত মদ, ফেনসিডিল, গাঁজাসহ বিভিন্ন মরননেশার আড্ডাখানায় সেখানে প্রায় প্রকাশ্যে বিকিকিনি হচ্ছে এগুলো। এলাকার উঠতি যুবকসহ অনেকেই মেতে উঠছে এ নেশায়। সাতীরা, কলারোয়াসহ পার্শ্ববর্তী পুটখালী, গোগা, বাঁগআচড়া, বেনাপোলসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে জুয়ারীরা রীতিমত প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল যোগে সেখানে এসে জুয়া ও নেশার আড্ডায় যোগ দিচ্ছে। এমনকি অবৈধপথে ভারত থেকে এসেও অনেকে ওই আড্ডায় মত্ত হচ্ছে। সার্কাসের বেশ কয়েকটি ঊচ্চ শব্দের মাইকের কারণে গভীর রাতে গ্রামের সাধারণ মানুষ যেমন বিরক্ত হচ্ছে তেমনি এইচএসসি ও সমমান পরীার্থীসহ অন্যান্য শিার্থীদের পড়াশুনা চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এই সার্কাসকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পরিবেশ অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। অতিসম্প্রতি স্থানীয় কয়েক যুবক সার্কাসের সামনে স্থানীয় এক আ’লীগ নেতাকে মদের বোতল ও লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক ভাবে আহত করেছে। বর্তমানে সে কলারোয়া হাসপাতালে ভর্তি। এদিকে, ওই সার্কাসকে কেন্দ্র করে টাকা চালাচালি হচ্ছে বলে অনেকে জানালেন। কিছু অসাধু ব্যক্তি ও স্বার্থনেষী মহল সার্কাসের সুস্পষ্ট দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে অনৈতিক ভাবে টাকা পকেটস্থ করছে বলে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা গেছে। স্থানীয় সচেতনমহল ও ইউনিয়নবাসী অবিলম্বে ওই সার্কাস বন্ধ করে দেয়ার জন্য মতাসীন নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ ঊদ্ধর্তন কর্তৃপরে সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। তাদের প্রতি এলাকার সবার দাবি- ‘একটু দেখবেন কী?’



মন্তব্য চালু নেই