অবশেষে সেই সমাজপতি ধর্ষক গ্রেফতার

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার শিলক গ্রামের চাঞ্চল্যকর কিশোরী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি শাহ আলমকে (৫৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বুধবার রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগরীর আন্দরকিল্লা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার হাফিজ আকতার।

পুলিশ জানায়, রাঙ্গুনিয়ার চাঞ্চল্যকর এই ধর্ষণ ঘটনার পর হাইকোর্টের এক রিট মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ শাহ আলমকে গ্রেফতারের নির্দেশ প্রদান করেন। এরপর থেকেই পুলিশ শাহ আলমকে গ্রেফতার করতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। সর্বশেষ আজ রাত ১১টার দিকে নগরীর আন্দরকিল্লা এলাকায় শাহ আলমের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে।

উল্লেখ্য, রাঙ্গুনিয়ার শিলক ইউনিয়নের মিন গাজির টিলা এলাকায় এক রিকশাচালকের ১১ বছর বয়সী কিশোরী কন্যাকে ধর্ষণ করলে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরে মরিয়ম নগর ইউনিয়নের একটি ক্লিনিকে শাহ আলমের উদ্যোগে ওই কিশোরীর গর্ভপাত করানো হলে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়। গত ৯ মে স্থানীয় এলাকাবাসী প্রতিবাদমুখর হয়ে শাহ আলমকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।

কিন্তু একইদিন মধ্য রাতে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আলী শাহ, তিন সংবাদকর্মী এবং পুলিশের মধ্যে মোটা অংকের সমঝোতায় শাহ আলমকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ ধর্ষিতার মাকে দিয়ে কৌশলে ধর্ষিত কিশোরীর বড় ভাই সফুরের (১৪) বিরুদ্ধে বোনকে ধর্ষণের মামলা দায়ের করে। রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ জঘন্যতম ঘটনা ঘটিয়ে ছোটবোনকে ধর্ষণে বড় ভাইকে অভিযুক্ত ও গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।

এ ছাড়া রাঙ্গুনিয়ার স্থানীয় তিন সাংবাদিক ধর্ষককে রক্ষা করতে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ভাইকেই বোনের ধর্ষণকারী অ্যাখ্যা দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করে পুলিশের জঘন্যতাকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আওয়ার নিউজ বিডি সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা ফাঁস হলে হাইকোর্টে রিট আবেন করেন এক আইনজীবী।

রিট মামলায় হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ শাহ আলমকে গ্রেফতার, শাহ আলমের বিরুদ্ধে এফআইআর গ্রহণ এবং রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার ও বুধবার চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ শাহ আলম, রাঙ্গুনিয়ার থানার ওসি হুমায়ুন কবীর, এস আই মুজিবের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন ধর্ষিতার মা নুর নাহার বেগম।

ধর্ষককে রক্ষা করতে ধর্ষিতার ভাইকে ধর্ষণকারী সাজিয়ে জেলে প্রেরণের এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি সমগ্র চট্টগ্রামসহ সাড়া দেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।

আরো পড়ুন :

সেই সমাজপতি ধর্ষক এখনও হয়নি গ্রেপ্তার, প্রশাসনে চলছে তোলপাড়



মন্তব্য চালু নেই