অবশেষে মিজানুরের মরদেহ হস্তান্তর

মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) হাতে নিহত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য মিজানুর রহমানের লাশ অবশেষে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিজিবির কক্সবাজার সেক্টর কমান্ডার কর্নেল ফরিদ হোসেনের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। হস্তান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজিবির বান্দরবান সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সাইফুল ইসলাম।

এর আগে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছিলেন, মরদেহ নেয়ার জন্য সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিজিবি দল নাইক্ষ্যংছড়ির পাইনছড়ি ৫২নং সীমান্ত পিলারের জিরো পয়েন্টে অবস্থান করছিল।
তিনি জানিয়েছিলেন, ‘মিজানের লাশ শনাক্ত করতে বেলা সাড়ে ১১টা থেকেই নাইক্ষ্যংছড়ি ৩১ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল সীমান্তের ৫২নং পিলারের জিরো পয়েন্টে অবস্থান করছে।’ তবে লাশ হস্তান্তরের বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে লোক মারফত যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এর আগে গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে পাইনছড়ি ৫২নং সীমান্ত পিলার এলাকায় বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। নিখোঁজ বিজিবি কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের মরদেহ শনাক্ত করতে বিজিবি কর্মকর্তারা ওই এলাকায় গেলে তাদের ওপরও গুলি চালায় মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যরা।

বান্দরবান নাইক্ষ্যংছড়ি ৩১ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শফিকুর রহমান বলেছিলেন, ‘মিয়ানমারের বিজিপি প্রথমে গুলিবর্ষণ শুরু করে। এরপর পাল্টা গুলি চালায় বিজিবি সদস্যরা।’

গত ২৮ মে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দৌছড়ি সীমান্ত এলাকায় বিজিবির টহল টিমকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে বিজিপি। সেই সময় নিখোঁজ হন নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমান। তাকে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী ধরে নিয়ে গেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।

তবে ঘটনার পর বিজিপি প্রচার করে, গুলিতে আরএসও (রোহিঙ্গা সলিডারেটি অর্গানাইজেশন) বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপের এক সদস্য মারা গেছেন। পরে অবশ্য বিজিপির আরাকান রাজ্যের সিতুইয়ের পুলিশ কর্নেল তুনও গতকাল শুক্রবার দেশটির দ্য ইরাবতী পত্রিকার কাছে বিজিবি সদস্য নিহত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে এ ঘটনায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ পি থান ওকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। সীমান্ত থেকে বিজিবি সদস্যকে ধরে নিয়ে যাওয়ায় কঠোর ভাষায় তাকে তিরস্কার করা হয়। একই সঙ্গে সীমান্তরক্ষীদের কাছে আটক বিজিবির নায়েক মিজানুর রহমানকে অতি দ্রুত ছেড়ে দেয়ারও দাবি জানানো হয়।

এরপর শুক্রবার নিখোঁজ বিজিবি সদস্য মিজানুর রহমানকে ফিরিয়ে দিতে বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয় সে বৈঠক। এরপরই নাইক্ষ্যংছড়ির দোছাড়ি সীমান্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।



মন্তব্য চালু নেই