ঝিনাইদহের কিছু খবর :

অবরোধে ধস নেমেছে ঝিনাইদহের ফুল বাজার ॥ ১৫০ টাকার ঝোপা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায় ফুল চাষীরা বিপাকে

অবরোধের কারণে ফুলের বাজারে সর্বোচ্চ ধস নেমেছে। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন ফুলনগরী খ্যাত ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার হাজার হাজার ফুল চাষী। মাত্র ১৫ দিন আগেও যে ফুল বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা ঝোপা (২০টি মালা) দরে। সেই ফুল এখন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪০ থেকে ৫০ টাকা ঝোপা দরে। ঝোপা প্রতি কৃষক কম পাচ্ছেন একশত টাকা। আর এই লোকসান ঠেকাতে কৃষক সঠিক মূল্য না পেলেও ফুল তুলে বাজারজাত করছেন। তারা খরচ উঠানোর চেষ্টা করছেন।

আর ফুল ব্যবসায়ীরা বলছেন, কৃষক বাঁচাতে তারা জীবনের ঝুকি নিয়ে কিছু কিছু মাল দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন। যদিও কৃষকের সঠিক মূল্য তারা দিতে পারছেন না। তারাও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। কৃষকরা জানিয়েছেন, অবরোধের কারনে হঠাৎ করেই এই দাম পড়ে গেছে। এই অবস্থা কিছুদিন চললে তারা মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। তবে সামনে ভালবাসা দিবস ও আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবসে তারা ভালো দাম পাবেন এমন আশা করছেন। তার জন্য প্রয়োজন দেশের বর্তমান অবস্থার নিরসন হওয়া।

ফুল ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা বলছেন, প্রতিদিন ঝিনাইদহের বিভিন্ন এলাকার মাঠ থেকে আনুমানিক ৫ হাজার ঝোপা ফুল রাজধানী ঢাকা, বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যেয়ে থাকে। যশোরের গদখালীর ফুল বাজারের পরই ঝিনাইদহে ফুলের বাজার রয়েছে। ফুলনগরী হিসেবে খ্যাত কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা মাঠে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় মাঠের পর মাঠ ফুল ক্ষেতে ফুল দাড়িয়ে আছে। হলুদ ও বাসন্তি রং এর গাঁদা ফুলে মাঠ রঙ্গিন হয়ে আছে। কৃষকরা মুল্য না পেয়ে ফুল তুলছে না। ফুল না তুললে যে গাছগুলো মারা যেতে পারে শুধুমাত্র সেই গাছ থেকে ফুল তুলে লোকসানে বাজারে বিক্রি করছেন।

কথা হয় বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের ফুল চাষী আকরাম হোসেনের সাথে। তিনি জানান, ১৫ বছর ফুলের চাষ করছেন এতো কম মুল্যে কখনও ফুল বিক্রি করতে হয়নি। তার এবার ১০ বিঘা জমিতে ফুল চাষ রয়েছে। তিনি আরো জানান, বছরের যে কোন সময় ফুলের চারা রোপন করা যায়। একটি চারা রোপনের তিন মাস পর থেকে ফুল তোলা যায়। আর গাছটি ফুল দেয় আরো ৩ থেকে ৪ মাস। ৩৩ শতাংশের এক বিঘা জমিতে চাষ করে ফুল তোলা পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার টাকা। এই জমিতে ২ হাজার ঝোপা ফুল হয়, যা বিক্রি করলে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় হয়। কিন্তু হঠাৎ করে ফুলের দাম কম হওয়ায় তার অনেক টাকা লোকসান হবে। কৃষকের হিসাব অনুযায়ী বর্তমান বাজার মুল্যে এক বিঘায় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় হবে।

ফুল ব্যবসায়ি আলমগীর হোসেন জানান, চট্ট্রগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তিনি ফুল বিক্রি করেন। নিজের দুই বিঘা জমিতে চাষ রয়েছে। পাশাপাশি মাঠ থেকে ক্রয় করে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান। কৃষককের ক্ষেত থেকে ফুল ক্রয় করার পর ঝোপা তৈরী করতে হয়। একটি ঝোপা (মালা) তৈরী করতে তাদের ব্যায় হয় ১০ টাকা। এছাড়া রয়েছে পরিবহন খরচ। ফুল বিক্রির পর এই খরচটিও তাদের উঠছে না। তিনি বলেন, মুল্য না থাকায় ক্ষেত থেকে অনেকে ফুল তুলছেন না।

আলমগীর হোসেন আরো জানান, শুক্রবার তিনি ২৪০ ঝোপা ফুল ঢাকায় নেবার চেষ্টা করেছিলেন। সেখানে ১শত ঝোপা পাঠাতে পেরেছেন। বাকিগুলো ফেরত নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে ফুল এর এমন অবস্থা দাড়িয়েছে কৃষকের ক্ষেত থেকে তোলা, আর ব্যবসায়ীদের পরিবহন খরচ হচ্ছে না। যে কারনে ফুল বাজারে নিচ্ছেন না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, অবরোধের কারনে তারা ফুল বাজারগুলোতে নিতে পারছেন না। যে কারণে দাম কমে গেছে। এই অবস্থা আরো কিছুদিন চললে অন্যান্য ফসলের সাথে ফুল চাষীরাও মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।

ব্যবসায়িরা জানান, কালীগঞ্জ থেকেই হানিফ, মামুন, ইউনিক ও শ্যামলীর বেশ কয়েকটি গাড়ি ফুল পরিবহন করতো। এই গাড়িগুলো বর্তমানে বন্ধ হয়েছে।

 

 

ঝিনাইদহে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৭৯তম জন্মবার্ষিকী পালিত

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৭৯তম জন্মবার্ষির্কী পালিত হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ১০টায় শহরের কেপি বসু সড়কস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে একটি র‌্যালী বের করা হয়।

র‌্যালীটি স্থানীয় গীতাঞ্জলী সড়ক প্রদক্ষিন শেষে আবার দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে এক আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও কেক কাটা হয়।

এ আলোচনা সভায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি মুন্সি কামাল আজাদ পান্নুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মসিউর রহমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্য বলেন, বালির ট্রাকের চাকার নিচ থেকে গণতন্ত্র উদ্ধার করতে হবে। চলমান আন্দোলনে নেতা-কর্মীদের রাজপথে থাকার আহবান জানান।

 
দূর্নীতি কোটচাঁদপুর উপজেলা ভূমি অফিসের অফিস সহকারীকে স্ট্যান্ডরিলিজ
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা ভূমি অফিসের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেনকে দুর্নীতির অভিযোগে স্ট্যান্ডরিলিজ করা হয়েছে। তাকে কোটচাঁদপুর থেকে জেলা আরএম শাখায় দেয়া হয়েছে।

গত ১২ জানুয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মানোয়ার হোসেন মোল¬ার সভাপতিত্বে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোঃ শফিকুল ইসলাম। সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বক্তব্যে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে উপজেলা ভূমি অফিসের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে মানুষকে হয়রানি করে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে। জেলা প্রশাসক এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভূমি অফিসের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেনকে তাৎক্ষনিকভাবে জেলার আরএম শাখায় বদলী করেন।

বিতর্কিত ভূমি অফিসের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেনকে বদলী করায় এলাকার ভূক্তভোগী মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। অভিযোগ আছে, ভূমি অফিসের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন নাম খারিজের জন্য সরকার নির্ধারিত ফি ২৪৫ টাকার স্থলে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা নিতেন ও সরকারের ‘খ’ শ্রেণীর অর্পিত সম্পত্তির নাম খারিজের জন্য জনসাধারণের কাছ থেকে ৩৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকা আদায় করে আসছিল। মোটা অংকের অর্থ ছাড়া স্থানীয় মানুষ তার কাছ থেকে কোন সেবাই পেত না। অর্থ দিয়েও মানুষকে কারনে-অকারনে হয়রানী করে আসছিলো।



মন্তব্য চালু নেই