অনলাইনেও নিবন্ধন করতে পারবেন সৌদি গমনেচ্ছুরা

সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে গমনেচ্ছুরা অনলাইনেও নিবন্ধন করতে পারবেন। অফিস চলাকালীন জনশক্তি রফতানি ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) অধীনে সব জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয় এবং দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের ইউনিয়ন ডিজিটাল কেন্দ্রের মাধ্যমে নিবন্ধন করা যাবে।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শহিদুল আলম মজুমদার বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নিবন্ধন একটি চলমান প্রক্রিয়া। এ জন্য তাড়াহুড়োর কোনো প্রয়োজন নেই। বিদেশ গমনেচ্ছুরা বিএমইটির ওয়েবসাইটের (www.bmet.gov.bd) মাধ্যমেও অনলাইনে নিবন্ধন করতে পারবেন।

এদিকে রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে নিবন্ধন ফরম জমা দিতে বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই ভিড় করেছেন সৌদি গমনেচ্ছুরা।

সরেজমিন বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে দেখা যায়, সেখানে হাজারো মানুষের ভিড়ে বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সৌদি গমনেচ্ছুদের ভিড় প্রবাসী কল্যাণ ভবন থেকে পূর্বে রমনা থানা ও পশ্চিমে টেলিযোগাযোগ ভবন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।

সৌদি গমনেচ্ছু হাজার হাজার মানুষের চাপ সামাল দিতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং জনশক্তি রফতানি ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর সংশ্লিষ্ট করর্মকর্তারা।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া চার দিনব্যাপী ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড মেলায় সৌদি গমনেচ্ছুদের নাম নিবন্ধনের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয় জনশক্তি রফতানি ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)। এর ফলে সৌদি গমনেচ্ছুদের ভিড় বাড়ে মেলার প্রবাসী কল্যাণ প্যাভিলিয়নে। মেলার দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার সৌদি গমনেচ্ছুদের চাপে প্যাভিলিয়ন ভেঙে পড়ে। ওই দিন থেকেই নিবন্ধন ফরম জমা দিতে চাপ বাড়ে ইস্কাটনের প্রবাসী কল্যাণ ভবনের নিচে।

চার দিনব্যাপী ডিজিটাল মেলার শেষদিন বৃহস্পতিবার। বৃহস্পতিবার নিবন্ধন ফরম জমাদানেরও শেষদিন মনে করে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে নির্ধারিত বিএমইটির সংশ্লিষ্ট দফতরে নিবন্ধন ফরম জমা দিতে ভোর থেকেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকার সৌদি গমনেচ্ছুরা জড়ো হতে থাকেন। যদিও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বার বার বলা হচ্ছে, সৌদি গমনেচ্ছুদের নিবন্ধন একটি চলমান প্রক্রিয়া। শুধু ডিজিটাল মেলার এই চার দিন নয়, নিবন্ধন চলতেই থাকবে।

সৌদি সরকারের সঙ্গে গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ সরকারের একটি চুক্তি সই হয়। চুক্তি অনুযায়ী আপাতত শুধু ৮০০ রিয়াল (প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার টাকা) বেতনে গৃহকর্মী (নারী) নেবে সৌদি আরব। এর পর ধীরে ধীরে মালী ও দারোয়ানসহ অন্য ১১টি গৃহস্থালী কাজে কর্মী নেবে তারা।

এই চুক্তির মাধ্যমে দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর পর সৌদি আরবের শ্রমবাজার উন্মুক্ত হল বাংলাদেশের জন্য। এর ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। তবে প্রতিশ্রুত বেতন-ভাতার চেয়ে প্রায় অর্ধেক বেতনে চুক্তি হওয়ায় হতাশাও প্রকাশ করেছেন অনেকে।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরবে। দেশটিতে ২০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশী কর্মরত রয়েছেন। ২০০৮ সালের পর থেকে বাংলাদেশের জন্য শ্রমবাজার বন্ধ করে দেয় সৌদি আরব। দীর্ঘ চেষ্টা-তদবিরের পর গত ১ ফেব্রুয়ারি সৌদি সরকার বাংলাদেশের ওপর থেকে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে বাজার আবার উন্মুক্ত করে দেয়।



মন্তব্য চালু নেই