সুস্বাদু কদবেলের অসাধারণ গুণ

চলছে সুস্বাদু কদবেলের ভরা মৌসুম। বাজারে এর প্রাপ্তিও বেশ। লবণ মরিচের গুড়ায় কদবেল ভর্তার নাম শুনলে সহজেই জিভে জল আসে যে কারো। শক্ত খোলসে আবৃত ভিটামিন সি সমৃদ্ধ মৌসুমী এ ফল মূলত স্বাদের কথা বিবেচনা করেই খাওয়া হয়। তবে পুষ্টিগুণ বিচারে কদবেল সত্যিই অনন্য। কদবেলের আছে নানা পুষ্টিগুণ। এতে খাদ্যশক্তি রয়েছে কাঁঠাল ও পেঁয়ারার প্রায় সমান। আমিষের পরিমাণ রয়েছে আমের চেয়ে সাড়ে ৩ গুন, কাঁঠালের দ্বিগুন, লিচুর চেয়ে ৩ গুস, আমলকী ও আনারসের চেয়ে ৪ গুন বেশি এবং পেঁপের চেয়ে দ্বিগুনের একটু কম। প্রতি ১০০ গ্রাম কদবেলের পুষ্টিমান পানীয় অংশ ৮৫.৬ গ্রাম, খনিজপদার্থ ২.২ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৪৯ কিলোক্যালোরি, আমিষ ৩.৫ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, শর্করা ৮.৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৫.৯ মিলিগ্রাম, লৌহ ০.৬ মিলি গ্রাম, ভিটামিন-বি ০.৮০ মিলিগ্রাম এবং ভিটামিন-সি ১৩ মিলিগ্রাম। জেনে নিন কদবেলে থাকা এসব উপাদান মানুষের শরীরে কী কী উপকার করতে সক্ষম।

পেটের রোগ নিরাময়

কদবেলে থাকা ট্যানিন নামক উপাদান দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া ও পেট ব্যথা ভালো করে। কদবেল গাছের বাকল মধু সঙ্গে মিশ্রিত করে খেলে পেটের রোগ আমাশয় ভারো করে। কাঁচা কদবেল ছোট এলাচ, মধু দিয়ে মাখিয়ে খেলে বদহজম দূর হয়। এই ফলের নির্যাস কলেরা এবং পাইলসের জন্য প্রতিষেধক ওষুধ হিসাবে কাজ করে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধক

কদবেলের নির্যাস ব্যাপকভাবে ডায়াবেটিস চিকিৎসার জন্য আয়ূর্বেদী ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ

কদবেল শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্নায়ুর শক্তি যোগায়। ত্বকের জ্বালা পোড়া কমাতে কদবেলের ক্বাথ মলম হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

কিডনি সুরক্ষা

কদবেল উদ্দীপক ও মূত্রবর্ধক কাজে বিশেষ উপাদেয়। এ ফল নিয়মিত খেলে কিডনি সুরক্ষিত রাখে। প্রাচীন ভারতীয় চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা কিডনি সমস্যা দূর করার জন্য সেরা প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে এটি ব্যবহার করতেন। এ ফল যকৃত ও হৃৎপিণ্ডের জন্যও বিশেষ উপকারী।

পেপটিক আলসার নিরাময়ে

কদবেল পাতার ক্বাথ পানীর সঙ্গে নিয়মিত পান করলে পেপটিক আলসার দ্রুত ভালো হয়। আলসারের খত সারাতে তাজা কদবেল বেশ কার্যকরী।

রূপচর্চায় সহায়ক

ব্রুণ ও মেছতায় কাঁচা কদবেলের রস মুখে মাখলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।

শ্বাসযন্ত্রের রোগ নিরাময়

কদবেল পাতার নির্যাস শ্বাসযন্ত্রের চিকিৎসায় কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। দুধ এবং চিনি দিয়ে কদবেলের পাতা মিশিয়ে স্নেহপূর্ণ খাদ্য তৈরি হয়। এই রস শিশুদের পেটের ব্যথার চিকিৎসায় চমৎকার কাজ করে। কদবেল যকৃত ও হৃৎপিণ্ডের জন্যও বিশেষ উপকারী।

রক্ত স্বল্পতা রোধ

এই ফল রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। বুক ধড়ফড় এবং রক্তের নিম্নচাপ রোধেও সহায়ক। চিনি বা মিছরির সঙ্গে কদবেল পাউডার মিশিয়ে খেলে সঙ্গে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি হয় এবং রক্তা স্বল্পতাও দূর হয়।



মন্তব্য চালু নেই