দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় নিজামীদের আপিল হাইকোর্ট গ্রহণ করেছে

দশ ট্রাক অস্ত্র আটক সংক্রান্ত দু’টি মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ফাঁসি ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত চার আসামির আপিল মামলা শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট।

জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, এনএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম ও এনএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম ওই আপিল মামলাগগুলো করেছেন।

বুধবার বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানির জন্য আপিল মামলাগুলো গ্রহণ করেন। আদালতে আসামিদের পক্ষে ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, মোহাম্মদ আহসান ও শিশির মোহাম্মদ মুনীর।

গত ৩০ জানুয়ারি দশ ট্রাক অস্ত্র আটক সংক্রান্ত দু’টি মামলার মধ্যে চোরাচালান মামলায় (বিশেষ ক্ষমতা আইনে) সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়াসহ ১৪ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন চট্টগ্রামের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এস এম মুজিবুর রহমানের আদালত। অস্ত্র আইনে দায়ের করা অন্য মামলাটিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পেয়েছেন একই আসামিরা। এছাড়া অস্ত্র আটক মামলার অপর ধারায় সাত বছর কারাদণ্ড দেন বিচারক। দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ৫ লাখ টাকা করে জরিমানাও প্রদান করা হয়।

মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অন্য ১১ জন হচ্ছেন এনএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম, ডিজিএফআই’র সাবেক পরিচালক (নিরাপত্তা) অবসরপ্রাপ্ত উইং কমাণ্ডার সাহাবুদ্দিন আহমেদ, এনএসআই’র সাবেক উপ-পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর লিয়াকত হোসেন, এনএসআই’র সাবেক মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহসিন উদ্দিন তালুকদার, সিইউএফএল’র সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কে এম এনামুল হক, সাবেক ভারপ্রাপ্ত শিল্পসচিব নুরুল আমিন, চোরাচালানি হিসেবে অভিযুক্ত হাফিজুর রহমান, অস্ত্র খালাসের জন্য শ্রমিক সরবরাহকারী দীন মোহাম্মদ ও ট্রলার মালিক হাজী আবদুস সোবহান।

আদালত রায়ে উল্লেখ করেন, অস্ত্র আটক মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও সাত বছরের কারাদণ্ড একইসঙ্গে কার্যকর হবে। আর আসামিদের হাজতবাস তাদের শাস্তির মেয়াদ থেকে বাদ যাবে।

আর চোরাচালান মামলার রায়ে হাইকোর্টের অনুমোদন সাপেক্ষে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে বলে মন্তব্য করেন আদালত।

অস্ত্র চোরাচালান মামলায় ৫২ জনের মধ্যে বাকি ৩৮ জন আসামি বেকসুর খালাস পান। অস্ত্র আটক মামলায় ৫০ জনের মধ্যে বাকি ৩৬ জন বেকসুর খালাস পান।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর ৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রায়ের নথি ও ডেথ রেফারেন্স বই হাইকোর্টে পাঠানো হয়েছে। দুই মামলার রায়ের ৫১৪ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ নথি ও ডেথ রেফারেন্স বই পাওয়ার কথা উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার এ কে এম শামসুল আলম জানিয়েছেন, নথিপত্র ডেথ রেফারেন্স শাখায় পাঠানো হয়েছে। পেপারবুক তৈরি করার পর এ বিষয়ে শুনানি শুরু হবে।



মন্তব্য চালু নেই