থানা পুলিশের রহস্য জনক নিরবতা

ঝালকাঠির বিনয়কাঠির তৌহিদুল বাহিনী আবরো বেপরোয়া ও অপ্রতিরোধ্য

ঝালকাঠির বিনয়কাঠির তৌহিদুল বাহিনী সন্ত্রাসী-চাদাবাজী ও মাদক ব্যবসার মাধ্যমে আবরো বেপরোয়া ও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। তৌহিদুলের দাবীকৃত চাঁদা না দিলেই এ বাহিনীর ক্যাডারার যে কারো উপর হামলা চালাচ্ছে ও মারধর করছে। সেই সাথে পল্লী এলাকায় ঘাটি করে ফেন্সিড্রিল-ইয়াবা, গাজা সহ মাদকদ্রব্য ব্যাবসার কেন্দ্র গড়ে তুলেছে। পুলিশ প্রশাসনের কোন তৎপরতা না থাকায় ঝালকাঠি উত্তর জনপদের মানুষ তৌহিদুল বাহিনীর হাতে এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছে।

পুলিশের রহস্য জনক নিরবতার কারনে এ বাহিনীর ক্যাডারাদের হাত থেকে মসজিদের ইমাম, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক, ঠিকাদার-ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও সাধারন মানুষ নির্বিশেষে কেউই রেহাই পাচ্ছেনা। তাদের হাতে জিম্মি নির্যাতিতরা অধিকাংশই থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ করার সাহস না পেলেও গত একমাসে ঝালকাঠি থানায় ৩টি সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজীর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ১২ ফেব্রুয়ারী বেলা পৌনে ১২ টার দিকে ঠিকাদার মো: মেহেদী হাসান রিপন (৩৫) বিনয়কাঠির গগন কাচারীবাড়ী পুলের পাশে নির্মানাধীন বিল্ডিংয়ের লেবার পেমেন্ট ও ইটক্রয়ের জন্য যায়। সেখানে পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা তৌহিদবাহিনীর প্রধান তৌহিদুল সিকদার (৩৭), মুবিন বাবু ২২, সালমান (২৩), সেলিমরাজ (৪৩), ও মাসুদ খান (৩৪) হকিষ্টিক, রামদা, রড, ও হাতুড়ি দিয়ে অকর্তিত হামলা চালিয়া এলোপাথাড়ি মারধর করে।

এ সময় রিপনের পকেটে থাকা ১ লাক্ষ ২০ হাজার টাকা, ২ টি মোবাইল ও হেলমেট নিয়ে যায় এ বাহিনী। পওে স্থানীয় লোকজন গুরুতর অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ব্যাপারে ৫ জনকে আসামী করে ঝালকাঠি থানায় ১৫ জনকে আসামী কওে ঝালকাঠি থানায় ১৫ ফেব্রুয়ারী একটি মামলা (নং১২) দায়ের করা হয়। তৌহিদ বাহিনী ঠিকাদার রিপনের কাছে ২ লাখ টাকা চাদা দাবী কওে আসছিলো বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

এর পূর্বে গত ২ ফেব্রুয়রী রাত ৮ টার দিকে একটি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা, গ্রাম্য চিকিৎসক ও মসজিদের ইমাম হাফেজ সৈয়দ আহমেদ (৬০) কে চাঁদা না দেয়ায় একই কায়দায় মারধর করে এবং হাত পা ভেঙ্গে দেয় তৌহিদ বাহিনী। বরিশালে গ্রাম্য চিকিৎসকের ট্রেনিং শেষে বাড়ি ফেরার পথে এ গগন বাজারে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে এ বাহিনী তার উপর হামলা চালায় ও নগদ ১২ হাজার টাকা, মোবাইল, এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়ে সহ নিজের জন্য ক্রয়কৃত নতুন কাপড় ও ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়।

পরে ২ বোতল পেট্রোল সহ তাকে বোমাবাজ অভিযোগ দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরের দিন তার ছেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘তৌহিদুল বাহিনীর চাঁদা দাবী ও না দেয়ায় তার বাবার উপর হামলা-ছিনতাইয়ের পর পুলিশের কাছে মিথ্যা অভিযোগে সোপর্দ করেছে’ বলে অভিযোগ করেছে। এ ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট থানায় তৌহিদুল ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

এর তিন দিন পূর্বে ৩০ জানুয়ারী স্থানীয় দৈনিক অজানা বার্তা পত্রিকার সাংবাদকর্মী মো: ইমাম হোসেন কল্যানকাঠি টেম্পু ষ্টান্ডে ৫ বস্তাভর্তি সরকারী বই কালোবাজারে বিক্রিকালে উক্ত বইয়ের বস্তার ছবি তুলার সময় তৌহিদুলের নেতৃত্বে তার বাহিনী ক্যাডাররা তাকে মারধর করে মোবাইল, ক্যামেরার মেমোরী ও সাথে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেয় যায়। এ ব্যাপারে ঝালকাঠি থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রায় ১৫ দিন পরে এজাহার রেকর্য করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এছাড়াও গগন বাজার এলাকায় এক ইউপি সদস্যকে মারধর, এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে মারধর করে উল্টো রাজনৈতিক মামলায় ডুকালে পরীক্ষায় দিতে না পারা, এবং কয়েকদিন পূর্বে জনৈক এক বৃদ্ধের ঘরে ২ বোতল পেট্রোল রেখে তাকে বোমাবাজ বানানের পরিকল্পনা করে তৌহিদ বাহিনী। এছাড়াও এলাকার নিরীহ লোকজনকে নানা ভাবে হয়রানী ও মামলার ভয় দেখিয়ে তাদের কাছথেকে চাদা নেয়ার একাদিক অভিযোগ রয়েছে। এ বাহিনীল হাত থেকে রক্ষার জন্য এলাকাবাসী প্রশাসনের উর্ধতন কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা ও দৃষ্টান্ত মূলক বিচারের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগিরা।

প্রসঙ্গত, গত ২০০৩ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পূর্বে একজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর দূরসম্পর্কের আত্মীয়তার সুবাধে হঠাৎ করে পল্লী এলাকার ছ্যিঁচকে বখাটে তৌহিদুল ও তার বড়ভাই মহিদুলের নেতৃত্বে গড়ে উঠা সন্ত্রাসী বাহিনীর আত্মপ্রকাশ ঘটে। পরবর্তীতে তাদের সীমাহীন অপর্কেমর কারনে উক্ত ভাইস চেয়ারম্যান তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনের ছত্রছায়ায় তোহিদুল-মুহিদুল বাহিনী তাদের ডাকাতী-ছিনতাই, চাদাবাজী, মাদক ব্যবসায় ও সন্ত্রাসী চালিয়ে যেতে থাকে।

একপর্যায়ে স্থানীয় প্রতিপক্ষরা মহিদুলের উপর হামলা চালিয়ে ব্যাপক মারধর ও এক পায়ের রগ কেটে দেয়ার ঘটনায় সে কিছুটা নিস্কৃয় হয়ে পড়লেও এখোন পর্যন্ত তৌহিদুল বাহিনী তাদের অপরাধমূলক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তৌহিদুলের বিরুদ্ধে গত ২০০৩ সালে গগন স্কুলের তৎকালিন প্রধান শিক্ষাক গোলাম কিবরিয়াকে চাঁদা না দেয়ায় গুলি করে হত্যার চেষ্টা, খুলনার এক ব্যাবসায়ীকে জিম্মি করে কয়েক লাখ টাকা আদায় সহ তার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ছবি পায়ের নিচে ফেলে ভেঙ্গে ফেলা সহ বহু অভিযোগ রয়েছে।

পরবর্তীতে বরিশাল র‌্যাব-৮ এর অভিযানে তৌহিদুল অস্ত্র সহ গ্রেপ্তার হলেও জেলা আওয়ামীলীগের তৎকালীন এক প্রভাবশালী নেতার হস্তক্ষেপে সে কয়েক মাসের ব্যবধানে জামিনে বেড়িয়ে আসে। সে নিজেকে যুবলীগ নেতা ও ঝালকাঠি জনপ্রতিনিধি এক মন্ত্রীর নামভাংগিয়ে এঅঞ্চলে বহুঅপকর্ম-নির্যাতিত চালানোর কারনে নিরীহ মানুষ তৌহিদের ভয়ে মুখ খুলতে পারেনা।



মন্তব্য চালু নেই