ছিটমহল সিদ্ধান্তে দুই মন্ত্রণালয়কে ইসির চিঠি

ভারতের অভ্যন্তরে অবস্থিত বাংলাদেশের ৫১ ছিলমহলবাসীকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চেয়ে দুই মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

সোমবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মাহফুজা আক্তার স্বাক্ষরিত চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ১৫ মে থেকে সারাদেশে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ভারতের অভ্যন্তরে অবস্থিত ছিটমহলগুলো হস্তান্তরের বিষয়ে মতামত এবং ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়, সে বিষয়ে মতামত দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।

এর আগে ছিটমহলবাসীকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে ২০১২ সালের ৪ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতামত জানতে চেয়ে চিঠি দেয় ইসি। পরে ১১ এপ্রিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ৩০ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চিঠির জবাব দেয়। তারা জানায়, সীমানা বিরোধ সক্রিয় বিবেচনাধীন। বিরোধ নিষ্পত্তি হলেই ছিটমহল বিনিময় হবে। তখনই নাগরিকত্বে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

উল্লেখ্য, ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল রয়েছে। এর মধ্যে ৩৪টিতে ৫ লক্ষাধিক জনগণ বসবাস করে। তাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে দুই দেশের মধ্যে একাধিকবার বৈঠক হলেও কোনো ফল হয়নি।

২০১২ সালের ১০ মার্চ ভোটারতালিকা হালনাগাদ শুরু হলে নির্বাচন কমিশন পাঠগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম-আঙ্গরপোতার ছিটমহলবাসীকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পেরেছিল।

চিঠি পাঠানোর আগে ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘পাঠগ্রাম উপজেলার আঙ্গরপোতা-দাহগ্রামে চলাচলে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তাই আমরা এ তিন বিঘা করিডোরে অবস্থিত ছিটমহলবাসীকে ভোটারতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারবো। তবে বাকিগুলো যেহেতু অমীমাংসিত ও দু’দেশের স্থল সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়। তাই এগুলোর ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হবে এবং তাদের কাছে মতামত চাওয়া হবে ।’

প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালে ছিটমহলবাসীদের সঠিক তথ্য জানার জন্য বাংলাদেশ-ভারত সরকার যৌথ জরিপ চালায়। সেই দুই দেশের বিনিময়যোগ্য ছিটমহলের সংখ্যা ১৬২টি। এর মধ্যে ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ছিটমহলের সংখ্যা ৫১টি, যার মোট আয়তন সাত হাজার ১১০ একর।
অন্যদিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ছিটমহলের সংখ্যা ১১১টি। এর মোট আয়তন ১৭ হাজার ১৫৮ একর। ছিটমহলের অবস্থান ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। এর মধ্যে ৪৭টি কোচবিহার এবং চারটি জলপাইগুঁড়িতে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ছিটমহলে ৫ লক্ষাধিক জনগণ বসবাস করে।



মন্তব্য চালু নেই