সাদা পোশাকে গ্রেপ্তার করা যাবে না

ইউনিফর্ম না পরে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেপ্তারের ঘটনা ভয়াবহ বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্ট। আদালত বলেছেন, ‘কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর সদস্যকে ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় থাকতে হবে।’

মঙ্গলবার ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ও ১৬৭ ধারায় গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে হাইকোর্টের একগুচ্ছ নির্দেশনার বিরুদ্ধে সরকারের করা আপিলের ওপর শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা এসব মন্তব্য করেন।

এ বিষয়ে করা আপিলের রায় আগামী ২৪ মে ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেন আদালত। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ শুনানি শেষে রায়ের জন্য এই দিন ধার্য করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারলে মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারলে মুরাদ রেজা এবং রিটকারীর পক্ষে ব্যারিস্টার এম আমির উল ইসলাম শুনানি করেন।

আদালত শুনানির এক পর্যায়ে প্রধান বিচরাপতি এস কে সিনহা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে হাইকোর্ট রায়ে সুনির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা দিয়েছিল। ১৩ বছর পার হয়ে গেলেও আপনার একটি নির্দেশনাও (সরকার) প্রতিপালন করেননি।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধি একটি কলোনিয়াল আইন। ১৯৭০ সালে মালয়েশিয়া এই আইনের সংশোধনী এনেছে। মালয়েশিয়াকে অনুসরণ করে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতও তাদের ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন করেছে। কিন্তু আমরা এখনো এটি করতে পারছি না।’

এ পর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমাদের দেশের সামাজিক বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে হাইকোর্টের নির্দেশানসমূহ যথাযথ নয়। আর কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশ হেফাজতে যদি কেউ মারা যায় তাহলে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমাদের দেশে আইন রয়েছে।’

এরপর প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘যথাযথ চিন্তাভাবনা না করেই আইন প্রণয়ন না করার কারণেই বিচার বিভাগের ওপর মামলার চাপ আছে। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান আমাকে বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর বডিগার্ডের দায়িত্ব পালনকারী এক মুক্তিযুদ্ধের সন্তানকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু আজও তাদের খোঁজ পাওয়া যায়নি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলাবাহিনী কাউকে গ্রেপ্তার করেই গণমাধ্যমের সামনে হাজির করছেন না। এটি গ্রহণযোগ্য নয়।’ এর আগে মামলাটির আপিলের ওপর গত ২২ মার্চ প্রথম দিনের মতো শুনানি।



মন্তব্য চালু নেই