সাতক্ষীরার কলারোয়ায় খাদ্যগুদামে পঁচা চাল ও পাচারের ঘটনা
থানায় অভিযোগ ॥ দুদকে মামলার প্রক্রিয়া ॥ দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি
সাতক্ষীরার কলারোয়া খাদ্য গুদাম থেকে চাল পাচারের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় দূর্ণীতি দমন কমিশনে মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, কলারোয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু বাদি হয়ে ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা (ওসি-এলএসডি) আলীনূর রহমানকে আসামী করে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। এব্যাপারে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরীও (নং-৮০৬, তাং-২৫/৭/১৪ইং) হয়েছে। উল্লেখ্য, শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে কলারোয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকার পুরাতন খাদ্য গুদাম থেকে চাল পাচারের সময় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টুর নেতৃত্বে স্থানীয় জনতা ৪১ বস্তা পচা চালসহ ট্রাক (খুলনা মেট্টো ট- ০২- ০০৭২) আটক করে। এসময় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাটকেলঘাটার মেসার্স রূপালী ফুড প্রোডাক্টের ঠিকাদার নূর হোসেন ও তার দুই সহযোগী শামসুজ্জামান ও কামরুল ইসলামকে পুলিশ থানায় নিয়ে গেলেও পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। সূত্র আরো জানায়, গত ২৪ জুলাই জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহজাহান ভূইয়া স্বাক্ষরিত ১৩.০৫.০০৮৭.০০৭.৫০.০০৬.১১-১৭১৯ নং স্মারকে পাটকেলঘাটা খাদ্য গুদামের চাহিদা মোতাবেক ভিজিডি, জিআর ও বিভিন্ন খাতে বিলি বন্টনের জন্য কলারোয়া খাদ্য গুদাম থেকে পাটকেলঘাটা খাদ্য গুদামে ৫০ মে.টন আমন চাল পাঠানোর চিঠি দেয়া হয়। ওই চিঠির শর্তাবলীর ২নং -এ উল্লেখ আছে- কোন অবস্থাতেই পোকাক্রান্ত, নিন্মমানের ডাস্টযুক্ত চাল প্রেরণ করা যাবে না। কিন্তু শর্তাবলীর এই নিদের্শণা না মেনে কলারোয়ার ওসি-এলএসডি আলীনূর রহমানের যোগসাজশে খাওয়ার অনুপোযোগী আধাভাঙ্গা, লালচে সাদা, ভ্যাপসা ধরা, পঁচা ও ক্ষুদাকৃতির নিন্মমানের চাল সরিয়ে ফেলার লক্ষ্যে ওই ট্রাকে লোড দেয়া হয়। বিষয়টি জানতে পেরে জনতা খাদ্যগুদামের গেটেই ওই ট্রাকসহ চাল আটকে দেয়। এরও কিছুদিন আগে গত ২ জুলাই কলারোয়া পৌরসভায় দূঃস্থদের প্রদাণের জন্য খাদ্যগুদাম থেকে সরবরাহকৃত ৩০.৮ মেট্রিক টন পচা চাল ফের খাদ্য গুদামে ফেরত পাঠানো হয়। বিষয়টি জনসমক্ষে ফাঁস হয়ে পড়ে। এবিষয়ে খুলনা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের নির্দেশে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি কলারোয়া ২নং খাদ্য গুদামে ২৯.৫ মেট্রিক টন পচা চাল রয়েছে বলে রির্পোট প্রদান করেন। দীর্ঘদিনের অসাধু কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে শুক্রবার ওসি-এলএসডি তার অপকর্ম ধামাচাপা দিতে ওই পচা চাল সরিয়ে পাটকেলঘাটায় পাঠানোর চেষ্টা করেন ওই এলাকার দূঃস্থদের বিতরণের জন্য। এদিকে, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের নির্দেশে কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ কুমার তালুকদারের ২নং খাদ্য গুদাম সিলগালা করে দিয়েছেন বলে জানা গেছে। অবিলম্বে দূর্ণীতিবাজ ও অবিবেচক ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা (ওসি-এলএসডি) আলীনূর রহমানকে চাকরিচ্যুত করে গ্রেফতারের মাধ্যমে দৃষ্টানমূলক শাস্তি প্রদাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকার সাধারণ জনতা।
মন্তব্য চালু নেই