এক লাখ ওয়াই-ফাই হটস্পট হবে
আগামী দুই বছরের মধ্যে উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপনের মাধ্যমে দেশের এক হাজার ২০০টি ইউনিয়ন পর্যায়ে এক লাখ ‘ওয়াই-ফাই হটস্পট’ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ইউনিয়ন পর্যায়ে বাস স্টেশন ও লঞ্চঘাট এবং ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে এই হটস্পট স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া সারা দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে স্থাপন করা হবে ৫৫৪টি বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) সেন্টার। ‘ডেভেলপমেন্ট অব আইসিটি ইনফ্রা-নেটওয়ার্ক অব বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট ফেস-৩ (ইনফো-সরকার-৩)’ প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চীনের এক্সিম ব্যাংকের ঋণ সহায়তায় প্রকল্পটি আগামী ডিসেম্বর মাসে বাস্তবায়ন শুরু হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার জানান, ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়ে ২০১৭ সালের নভেম্বর মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে এক হাজার ৮৩৬ কোটি টাকা। চীনের এক্সিম ব্যাংক ১৬৯ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন ডলার বা এক হাজার ৩১৯ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দেবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পণ্য, ভৌত কাজ ও সেবা কেনার প্রস্তাব সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, এই প্রকল্পের আওতায় উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপনের মাধ্যমে সারা দেশে এক লাখ ‘ওয়াই-ফাই হটস্পট’ গড়ে তোলা হবে, যেখানে সাধারণ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে। তিনি বলেন, দেশে প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ে বাস স্টেশন, লঞ্চঘাট, বড় হাটবাজার ও তথ্যসেবা কেন্দ্র আছে। এসব জায়গায় ওয়াই-ফাই হটস্পট করা হবে। এ ছাড়া যেসব সরকারি অফিসে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে, সেখানে রাউটার বসিয়ে ওই অফিসে সেবা নিতে আসা লোকদেরও নেটওয়ার্কের আওতায় আনা যাবে।
ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য পাঠানো প্রকল্প প্রস্তাব বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রকল্পটির আওতায় উপজেলা থেকে এক হাজার ২০০ ইউনিয়ন পর্যন্ত অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ স্থাপন করা হবে। সারা দেশে ৫৫৪টি বিপিও সেন্টার স্থাপন করা হবে। পাইলট ভিত্তিতে নির্মাণ করা হবে ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম, বাড়বে বিদ্যমান নেটওয়ার্ক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের ধারণক্ষমতা। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় নেটওয়ার্ক যন্ত্রাদি ও হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হবে। এর প্রাথমিক উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (পিডিপিপি) প্রণয়ন করা হয়েছে, যা গত ১৭ জুন নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে পরিকল্পনা কমিশন।
ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদনের জন্য পাঠানো প্রস্তাবের সারসংক্ষেপে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চীন থেকে প্রাপ্য এক হাজার ৩১৯ কোটি টাকার প্রয়োজনীয় পণ্য, ভৌত কাজ ও সেবা কেনার অনুমোদন চেয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ বলেছে, ‘এটি একটি জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা একান্ত প্রয়োজন।’
মন্তব্য চালু নেই