আজো সোনার হরিণের অপেক্ষায়

আজো লাইনে দাঁড়িয়ে শত শত মানুষ অপেক্ষা করছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। প্রহর গুণছেন কখন পাবেন কাঙ্ক্ষিত টিকিটটি। কেউ কেউ টিকিট হাতে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেছেন। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উপভোগ করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অবশেষে যখন টিকিট মেলে তখন মনে হয় যেন সোনার হরিণ হাতে এসেছে।

শনিবার তৃতীয় দিনের মত ১৫ জুলাইয়ের ট্রেনের অগ্রিম টিকিট দেওয়া হচ্ছে। এভাবে অগ্রিম টিকিট আরো দুইদিন দেওয়া হবে। অর্থাৎ ১৩ জুলাই পর্যন্ত অগ্রিম টিকিট দেওয়া হবে। যা ছেড়ে যাবে ১৪ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত। আর ফিরতি টিকিট বিক্রি করা হবে ২০ থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত।

অন্যান্য দিনের মতো গতকাল রাত থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছে শত শত মানুষ অপেক্ষায় আছে কখন টিকিট হাতে পাবে, কখন সোনার হরিণের দেখা পাবে।

রাতে শ্যামলী থেকে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন ফারুক। তিনি যাবেন রংপুরে। তিনি বলেন, অপেক্ষা করছি টিকিটের জন্য, যদি টিকিট পাই তাহলে রাত জেগে যে কষ্ট করেছি তা ভুলে যাবো। কষ্ট আর কষ্ট মনে হবে না।

নারায়ণগঞ্জের আরেকজন যাত্রী মো. ওমর ফারুক। তিনি জামালপুরের ইসলামপুর যাবেন। তিনিও রাত জেগে লাইনে দাঁড়িয়ে। তিনি বলেন, প্রিয়জনের সান্নিধ্যের জন্য এই কষ্ট। কষ্ট করে শেষ পর্যন্ত বাড়ি পৌঁছাতে পারলেই হয় আর কিছু চাই না।

এভাবে ট্রেনের অগ্রিম টিকিটের জন্য সারারাত না ঘুমিয়ে অপেক্ষার পর অবশেষে স্বস্তির টিকিট পেয়ে আনন্দে আত্মহারা ঘরমুখো মানুষ; মুখে ফুটেছে হাসি। আরো অপেক্ষায় আছে শত শত মানুষ। শেষ পর্যন্ত কাক্সিক্ষত টিকিটটি পাবে কিনা সেই শঙ্কা তাদের মনে।

দিনাজপুরের টিকিটের জন্য পার্বতীপুর দ্রুতযান এক্সপ্রেস কাউন্টারের সামনে লাইন দিয়েছেন সুমন। সারারাত অপেক্ষার পর আজ সকাল সাড়ে ৯ টায় তিনি টিকিট পেয়েছেন। সারারাত না ঘুমিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টিকিট পাওয়ার পর তার মুখে স্বস্তির আনন্দ দেখা গেছে।

তিনি জানান, আজকে ১৩ জুলাইয়ের টিকিট কিনেছি। অনেক কষ্টে টিকিটটি পেয়েছি কিন্তু টিকিট পাওয়ার পর আনন্দ লাগছে। তবে প্রিয়জনের টানে বাড়িতে যেতে পারলে তখন আনন্দ আরো দ্বিগুণ হবে।

এভাবেই আরো অনেকে সারারাত না ঘুমিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন, অবশেষে হাতে টিকিট পাওয়ার পর সারারাতের কষ্ট ভুলে মুখে হাসি দেখা গেছে।

তবে কাউন্টার থেকে টিকিট দিতে দেরি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন অনেকে। লাইনে দাঁড়ানো যাত্রীরা বলেন, অনেকক্ষণ যাবৎ লাইনে দাঁড়ানো। টিকিট দেওয়া শুরু করেছে ৯টায়। এখনো যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম সেখানেই আছি।

কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, যাত্রীরা ঠিকমতো লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট নিয়ে যাচ্ছে। দুই দিন পার হল টিকিট দিচ্ছি। আজ তৃতীয় দিন। কোনো ধরনের সমস্যা দেখা যায়নি এই পর্যন্ত।



মন্তব্য চালু নেই