বাবা দিবসে বাবা হলেন অপহৃত রাজ্জাক

বাবা দিবসে বাবা হয়েছেন মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ-বিজিপি কর্তৃক অপহৃত বিজিবি নায়েক আব্দুর রাজ্জাক। তবে ফুটফুটে পুত্র সন্তাটির মুখ এখনো দেখার সৌভাগ্য হয়নি তার। কবে হবে বা আদৌ হবে কিনা এই নিয়ে সংশয়ে রয়েছে তার পরিবারের সদস্যরা।

পুত্র সন্তান জন্মানোর সংবাদে যেখানে সবার খুশি হওয়ার কথা- সেখানে নাটোরের সিংড়ায় রাজ্জাকের বাড়িতে এখন শুধুই কান্নার রোল। ছেলের ছবি বুকে জড়িয়ে ধরে রাজ্জাকের মায়ের কান্নায় এলাকার বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে।

জানা যায়, জেলার সিংড়া উপজেলার বলিয়াবাড়ি গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন তারা মোল্লার ছেলে আব্দুর রাজ্জাক দেশমাতৃকার সেবায় আত্মনিয়োগ করতে ২১ বছর আগে তৎকালীন বিডিআরে যোগ দেন। বার্মা সীমান্তে কর্মরত থাকা অবস্থায় গত বুধবার (১৭ জুন) মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ-বিজিপি তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

এ খবর পাওয়া পর থেকে তার পরিবারের সদস্যরা উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ রাজ্জাক অপহৃত হওয়ার পর বিজিবি তাদের কিছু জানায়নি। গণমাধ্যম্যে ছেলের হাত-পা বাঁধা ছবি দেখে তারা এ ঘটনা জানতে পারেন।

অপহরণের পর বিজিবির সিও ফোন করে তাদের জানান, পতাকা বৈঠক করে একদিনের মধ্যেই রাজ্জাককে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু এখনো সরকারের পক্ষ থেকে তাকে উদ্ধারের কোনো ব্যবস্থাই তারা দেখতে পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে তার পরিবারের সদস্যদের।

এদিকে আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে রাজ্জাকের স্ত্রী আসমা বেগম একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান প্রসব করেন। অথচ এই খুশির মুহূর্তে সন্তানটির বাবা-ই কাছে নেই। অপহৃত রাজ্জাকের বাবা তোফাজ্জল হোসেন, বোন তসলিমা খাতুনসহ পরিবারের সবাই কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। রাজ্জাকের বড় ছেলে রাকিবুল ইসলাম, মেয়ে ফারিয়া জাহান রিতুও বাবার জন্য কেঁদে বুক ভাসাচ্ছে।

আব্দুর রাজ্জাকের বাবা তোফাজ্জল হোসেন জানান, গত সোমবারে তার সঙ্গে ছেলে রাজ্জাকের শেষ কথা হয়। এর পর আর কোনো খবর পাননি। ফেসবুকে ও বিদেশি গণমাধ্যমে ছবি দেখে তারা রাজ্জাক অপহরণের খবর জানতে পারেন। রাজ্জাকের পরিবারসহ এলাকাবাসী সরকারের কাছে আব্দুর রাজ্জাককে সুস্থ অবস্থায় তাদের মাঝে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান।

নাটোর জেলা প্রশাসক মশিউর রহমান জানান, রাজ্জাকের আটক সংক্রান্ত কোনো তথ্য তার কাছে নেই বা সরকারি কোনো দপ্তর থেকেও তাকে জানানো হয়নি।

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা খাতুন বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা কোনো সরকারি বার্তা পাইনি। তবে অন্য একটি কাজে আমি ওই এলাকায় অবস্থান করছি। আমি ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করে আসব। তাদের জন্য কিছু করার থাকলে সেটা সরকারের উচ্চ মহলে জানানো হবে।’



মন্তব্য চালু নেই