মৃত কন্যার কঙ্কালকে ছ’মাস ধরে খাইয়েছেন বাবা
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মধ্য কলকাতার একটি আবাসিক ফ্ল্যাট থেকে এক নারী ও দুটি কুকুরের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার সকালে পুলিশ ওই কঙ্কাল উদ্ধার করে।
ওই নারীর বৃদ্ধ বাবার অগ্নিদগ্ধ দেহ-ও ওই ফ্ল্যাটে পাওয়া গেছে।
পুলিশ ওই মৃতের ভাইকে জেরা করে এক অদ্ভুত মানসিকবিকারগ্রস্ত পরিবারের কাহিনি জানতে পেরেছে।
পুলিশ বলছে, কলকাতায় শেকসপিয়ার সরণীর একটি ফ্ল্যাট থেকে মঙ্গলবার রাতে ধোঁয়া বেরতে দেখে তারা সেখানে যায় এবং ৭৭ বছর বয়সী অরবিন্দ দে-র অগ্নিদগ্ধ দেহ খুঁজে পায় বাথরুমে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
সেই সূত্রে পুলিশ যখন অরবিন্দ এর ছেলে পার্থ দে-কে জেরা করতে শুরু করে, তখনই কাহিনি অন্য দিকে মোড় নেয়।
পুলিশের কাছে পার্থ দে জানান যে তাঁর বড় বোন দেবযানী গত ডিসেম্বরে মারা গেছেন। তার কঙ্কাল বাড়িতেই রয়েছে। সঙ্গে আছে গতবছর অগাস্টে মারা যাওয়া দুটি পোষা কুকুরের কঙ্কালও। পুলিশ ওই কঙ্কালগুলি উদ্ধার করে আর দেখতে পায় সম্পূর্ণ পোষাক পরিহিত দেবযানী দে-র কঙ্কালের পাশে প্রচুর খাবার পড়ে রয়েছে।
জেরায় পার্থ দে জানান প্রিয় কুকুর দুটি মারা যাওয়ার পরে তার বড় বোন একদম খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তার ফলেই ডিসেম্বরে মৃত্যু হয় একটি নামী স্কুলের সঙ্গীতের শিক্ষিকা দের। কিন্তু ওই কুকুরদুটি বা নিজের বোনের সৎকার করেন নি পার্থ দে অথবা তার বাবা।
তারা কল্পনা করতেন মৃত দেবযানী আর তাদের প্রিয় কুকুরদুটি রোজই রাতের খাওয়ার সময়ে ফিরে আসে। সেজন্যই নিয়মিত খাবার দেওয়া হত। কঙ্কালদুটিকে নিয়েই বাবা আর ছেলে ঘুমোতেন গত ছয়মাস ধরে।
এমনকী নিজের বোনের গলার আওয়াজ ফ্ল্যাটের বিভিন্ন কোণে রাখা মিউজিক সিস্টেম থেকেও বাজানো হত।
পার্থ দে একটি নামী তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করতেন, কিন্তু সাত বছর আগে চাকরি ছেড়ে দেন তিনি।
পুলিশ বলছে গোটা পরিবারটি-ই সম্ভবত মানসিক বিকারগ্রস্ত ছিল।
কঙ্কালগুলি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি
মন্তব্য চালু নেই