প্রার্থনার মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু মোদির
ঢাকেশ্বরী মন্দির ও রামকৃষ্ণ মিশনে প্রার্থনার মধ্য দিয়ে সফরের দ্বিতীয় দিন শুরু করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রার্থনা শেষে তিনি রাজধানীর বারিধারায় ভারতীয় হাইকমিশেনে গিয়ে হাইকমিশনের চ্যান্সেরি উদ্বোধন করবেন। সেখান থেকে হোটেলে ফিরে বিশ্রাম নেন।
শনিবার সকালে নরেন্দ্র মোদির সফরের দ্বিতীয় দিন শুরু হয় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে প্রার্থনার মধ্য দিয়ে। মন্দিরে প্রার্থনা ও পরিদর্শন শেষে তিনি যান রামকৃষ্ণ মিশনে।
সেখানে পরিদর্শন শেষে রওনা হয়ে যান বারিধারা ভারতীয় হাইকমিশনে।
বিশ্রাম নিতে মোদি হোটেলে
সফরের দ্বিতীয় দিনের প্রথম ভাগের কর্মসূচি শেষে করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হোটেল সোনারগাঁওয়ে যান। রোববার সকাল ১০টার দিকে ভারতীয় হাইকমিশন থেকে হোটেলের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। সেখানে তিনি বিশ্রাম নেবেন।
বিশ্রাম শেষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। দুপুর ২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত সেখানে থাকবেন। এসময় অটল বিহারী বাজপেয়ীকে দেয়া সম্মাননা গ্রহণ করবেন মোদি। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এই সম্মাননা তার হাতে তুলে দেবেন।
এর আগে ঢাকেশ্বরী মন্দির ও রামকৃষ্ণ মিশনে প্রার্থনা শেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজধানীর বারিধারায় ভারতীয় হাইকমিশেনে যান। সেখানে তিনি হাইকমিশনের চ্যান্সেরি উদ্বোধন করেন।
ঢাকেশ্বরী ও রামকৃষ্ণ মঠ দেখলেন মোদি
চারদিকে পুষ্পবৃষ্টি আর শঙ্খধ্বনি। রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে মা কালির চরণামৃত (পবিত্র জল) নিতে এসেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাই সেখানে সাজসাজ বর। তিনি আসবেন তাই আগে থেকেই প্রস্তুত হয়ে ছিলেন মন্দিরের পুজারি ও সেবায়েতরা। সেবায়েতদের এই আনন্দযজ্ঞে যোগ দিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনও। মোদিকে বরণে তার তরফ থেকেও কমতি রাখা হলো না।
রোববার সকাল ৮টা ৪০মিনিটে হোটেল সোনারগাঁও থেকে বের হয়ে পৌনে ৯টায় নরেন্দ্র মোদি ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এসে পৌঁছান। তখন পুষ্প,শঙ্খ ও উলুধ্বনিসহকারে মোদিকে বরণ করে নেয়া হয়। মোদিও তার স্বভাবভঙ্গিতে উপস্থিত সবাইকে করজোড়ে নমস্কার জানালেন। ঢাকেশ্বরী পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে মোদি শুরু করলেন তার বাংলাদেশ সফরের দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম।
তিনি মূল মন্দির প্রাঙ্গণের শিব মন্দিরগুলো ঘুরে দেখেন এবং প্রণামপর্ব সারেন। সেখান থেকে কালি মন্দিরে গিয়ে দেবীর পায়ে অর্ঘ্য দিয়ে পুরোহিতদের আর্শিবাদ নেন এবং গ্রহণ করেন চরণামৃত। এরপর দেশের শীর্ষস্থানীয় হিন্দু নেতাদের সঙ্গে তিনি শুভেচ্ছা বিনিময় সারেন মোদি।
এর আগে মোদি ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পৌঁছলে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন তাকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান। এসময় উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জিতেন্দ্র লাল ভৌমিক ও সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ সাহা মণি। মন্দিরের অভ্যন্তরে মন্দিরের প্রধান সেবায়েত ও পরিচালক প্রদীপ চক্রবর্তী ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে মন্দিরের প্রধান বিগ্রহের সামনে নিয়ে যান এবং পুজা দেন। পূজা শেষে নরেন্দ্র মোদির হাতে একটি স্মারক তুলে দেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সিআর দত্ত মোদিকে একটি উত্তরীয় পরিয়ে দেন।
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন পরিদর্শন
ঢাকেশ্বরী মন্দিরের প্রার্থনা পর্ব শেষে মোদি ঢাকার রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন পরিদর্শনে যান। সকাল ৯টা ৭ মিনিটে তিনি সেখানে পৌঁছান।
ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে ঐতিহ্যবাহী রামকৃষ্ণ মিশনে পৌঁছুলে মোদিকে সেখানে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান মিশন কর্তৃপক্ষ। সেখানে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান রামকৃষ্ণ মিশন হেড কোয়ার্টারের (কলকাতা) প্রশাসনিক প্রধান স্বামী সুহিতানন্দ, মিশনের ঢাকার অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুভেশানন্দ, স্বামী সুহিতানন্দের ব্যক্তিগত সচিব স্বামী শুভকানন্দ ও স্বামী প্রিয়াতনন্দ।
মোদি রামকৃষ্ণ মঠে প্রার্থনায় অংশ নেন। প্রার্থনা শেষে তাকে একটি স্মারক উপহার দেয়া হয়। পরে মোদি মন্দিরের সেবায়েতদের সঙ্গে একটি ফটোসেশনে অংশ নেন। মিশনে আসা পুজারি ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে করমর্দন করেন মোদি। এসময় তার নিরপাত্তায় নিয়োজিত বিশেষ বাহিনীর কর্মীদের রীতিমতো হিমশিম বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।
মঠে পূজা-অর্চনা সেরে কিছুক্ষণ অবস্থান করে বেলা ১০টার দিকে রাজধানীর বারিধারাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের নতুন চ্যান্সারি কমপ্লেক্স উদ্বোধনে যোগ দিতে রওয়ান হন মোদি।
বিদায় নেয়ার আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী সবাইকে প্রণাম ও হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান।
মন্তব্য চালু নেই