গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় এক নারী রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ব্যাপক হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে স্থানীয় সহস্রাধিক লোক এ হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটায়। এ সময় টুঙ্গিপাড়া উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. পবিত্র কুমার কুণ্ডু, নার্স কাকতি লতা পাল ও এক পুলিশ সদস্যসহ ৪০ জন আহত হয়েছেন।

এলাকাবাসী জানান, গত ১৪ মে টুঙ্গিপাড়া মিত্রডাঙ্গা গ্রামের মনা ভারতী (২২) হিন্দু ধর্ম পরিত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে খাদিজাতুল কোবরা নাম ধারণ করেন। তিনি অসুস্থ হয়ে গত ১৯ মে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হন। গতকাল শুক্রবার সকালে নার্স কাকতি তাকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করায় ভর্ৎসনা করেন। পরে তাকে একটি ইনজেকশন পুশ করলে কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি সেখানে মারা যান।

এ ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে সহস্রাধিক এলাকাবাসী উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে জড়ো হন এবং একপর্যায়ে তারা ব্যাপক তাণ্ডব চালান। ঘণ্টাব্যাপী এ তাণ্ডবে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিচতলা থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত জানালা দরজা, টেবিল চেয়ার ও অন্য আসবাবপত্র তছনছ হয়ে যায়। এ সময় ডা. পবিত্র কুমার কুণ্ডু, নার্স কাকতি লতা পাল ও এক পুলিশ সদস্যসহ ৪০ জন আহত হন। পরে পুলিশ এসে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনার পরপরই ভর্তি অন্য রোগীরা হাসপাতাল ছেড়ে যায়।

এদিকে এ ঘটনার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মো. খলিলুর রহমান ও পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছে তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক উল্লেখ করে বিএমএ গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি ডা. আবিদ হোসেন বলেন, শনিবার থেকে শুধু জরুরি বিভাগ ছাড়া সব ধরনের চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকবে।