কতটা খোড়ার পর কতটুকু হীরা মেলে ?

পৃথিবীর বিস্তর মানুষ যে কোনো উপায়ে সম্পদ আহরণে লালায়িত। কতটা, সে ব্যাপারে বেশি কথা না বললেও চলে। টেলিভিশনে চোখ রাখলেই চোখে পড়বে মানুষ কিভাবে বনের পর বন উজাড় করছে, পাহাড়ের পর পাহাড় কেটে চলেছে, খনির পর খনি উন্মুক্ত করে পুরো অঞ্চল করে তুলছে বিষাক্ত। মানুষের ধ্বংসযজ্ঞগুলো নৈতিকতার প্রশ্নে ধোপে না টিকলেও, অর্থের অঙ্কের কাছে তুচ্ছ হয়ে যায় হয়ত।

diamond-pit-in-s-africa-2

এ লেখায় আমরা দেখাবো দক্ষিণ আফ্রিকার দুটো হীরার খনিকে। পরিকল্পিত এ বিপুল ধ্বংসযজ্ঞের পর কতটুকু হীরা পেয়েছে মানুষ, তার একটা ধারণা দিতে চেষ্টা করেছেন তরুণ আলোকচিত্রী ডিলন মার্শ। তিনি খনিসংশ্লিষ্ট নথি ঘেঁটে পরিমাণটুকু বের করেছেন, কতটুকু হীরা খনিগুলো থেকে কর্ষিত হয়েছে। তারপর কম্পিউটারে পরিমাণটুকু এক করে একটামাত্র হীরায় পরিণত করেছেন। এরপর বসিয়ে দিয়েছেন খুড়ে ফেলা জায়গার মধ্যখানে।

এবার বোঝা যাচ্ছে হাজারও রুগ্ন মানুষকে খাটিয়ে ঠিক কতটা কী পেয়েছে মেদবহুল মানুষগুলো। তবে, কথা আছে। আয়তনটা হতে পারে একটা ছোটো ফুটবলের সমান, তাতে কি। এর আড়ালে কিন্তু লুকিয়ে আছে সহস্র লক্ষ কোটি টাকা, যে টাকা বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় চালিকা, এবং বলা হচ্ছে ‘টাকাই ঈশ্বর!’

diamond-pit-in-s-africa

আলোকচিত্রী মার্শ দক্ষিণ আফ্রিকার তামার খনিগুলোতেও ঘুরে বেড়িয়েছেন। সেখানে তিনি দেখতে পান পরিশ্রমের বিপরীতে কত অল্প পরিমাণ দ্রব্যই না মিলছে। তখনই হীরার খনির আপেক্ষিক চিত্রটি তুলে আনার কথা মনে আসে তার। এবং সে অনুযায়ী গবেষণা করতে শুরু করেন।

দক্ষিণ আফ্রিকা ভৌগলিক কারণে খনিজ ধাতব সম্পদে দারুণ সমৃদ্ধ। এ মাটির যে রয়েছে শত বছরের শোষণ আর রক্তপ্রবাহের ইতিহাস- তার পেছনে সেটি একটি বড় কারণ হতে পারে। সেখানে দীর্ঘকাল সাদারা কুকুর লেলিয়ে দিয়েছে কালোদের দিকে। নেলসন ম্যান্ডেলার মুখ ভেসে ওঠে এ সংক্রান্ত ইতিহাসের পাতা ওল্টালেই। বর্তমানে কালোরা ক্ষমতায় গেলেও, গৃহযুদ্ধের অনিঃশেষ ধারাবাহিকতা থেকে নিজেদের বের করে আনতে যে এখনও অনেক পথ পাড়ি দেয়া বাকি- সেটুকুও বুঝতে পারছে না।

অতিসম্প্রতি সেখানে অন্য দেশ থেকে আগত শ্রমিকরা ভীষণ মার খেয়েছে স্থানীয়দের হাতে। এর পেছনে দায়ী হতে পারে শ্রমবাজার বেহাত হয়ে যাওয়ার ভীতি কিংবা জাতিগত দাঙ্গার দীর্ঘ অভ্যাস।



মন্তব্য চালু নেই