রিয়াল মাদ্রিদ, কেন এমন হয় !

২০০৩-০৪ মৌসুম। চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল মাদ্রিদ ও মোনাকো। প্রথম লেগে নিজেদের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ফ্রান্সের ক্লাব মোনাকোকে ৪-২ গোলে হারিয়ে দেয় স্প্যানিশ জায়ান্টরা।

ওই ম্যাচের ৮১ মিনিটেই ৪-১ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল রিয়াল। কিন্তু দুই মিনিট পরেই আরেকবার ব্যবধান কমিয়ে স্কোরলাইন ৪-২ করে মোনাকো। গোলটি কে করেন জানেন? রিয়ালেরই একজন প্রাক্তন খেলোয়াড়! নাম তার ফার্নান্দো মরিয়েন্তেস। তখন কে জানতো, তার ওই গোলই কাল হয়ে দাঁড়াবে রিয়ালের জন্য!

প্রথম লেগে ৪-২ গোলে এগিয়ে থেকে মোনাকোর মাঠে ফিরতি লেগের ম্যাচ খেলতে যায় রিয়াল। কিন্তু ফিরতি লেগে মোনাকোর কাছে ৩-১ গোলে হেরে বসে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। আর এই ম্যাচেও একটি গোল করেন মরিয়েন্তেস। দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৫-৫। কিন্তু অ্যাওয়ে গোলে এগিয়ে থেকে সেমিফাইনালে ওঠে মোনাকো। অর্থাৎ, প্রথম লেগে ক্লাবের প্রাক্তন খেলোয়াড় মরিয়েন্তেসের শেষ মুহূর্তের ওই গোলই রিয়ালকে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় করে দেয়।

১১ বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগের এবারের মৌসুমে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তির ঘটল রিয়ালের ক্ষেত্রে! মরিয়েন্তেসের পর এবার দলের আরেক প্রাক্তন খেলোয়াড় আলভারো মোরাতায় কপাল পুড়ল রিয়ালের। ২০০৩-০৪ মৌসুমে কোয়ার্টার ফাইনালে হলেও এবার যে একদম সেমিফাইনালে! জুভেন্টাসের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে রিয়াল। সেমির প্রথম লেগে ঘরের মাঠে রিয়ালকে ২-১ গোলে হারায় জুভেন্টাস। ওই ম্যাচে জুভেন্টাসের পক্ষে একটি গোল করেন রিয়ালের প্রাক্তন খেলোয়াড় মোরাতা। বুধবার সেমির ফিরতি লেগে রিয়ালের মাঠে ম্যাচটি শেষ হয়েছে ১-১ গোলে, ড্র এর মাধ্যমে। ম্যাচের প্রথমার্ধে রিয়াল এগিয়ে গেলেও দ্বিতীয়ার্ধে মোরাতার গোলে সমতায় ফেরে জুভেন্টাস।

আর রিয়ালকে বিদায় করে জুভেন্টাস ফাইনালে উঠতে মোরাতার ওই গোলই যথেষ্ট ছিল। অথচ চ্যাম্পিয়নস লিগের গত মৌসুমে রিয়ালের হয়েই শিরোপা জিতেছিলেন মোরাতা! শুধু তাই নয়, তার ক্লাব ক্যারিয়ারের শুরুটাও রিয়াল মাদ্রিদেই! রিয়ালের যুবদল, ‘বি’ দল ঘুরে ২০১০ সালে রিয়ালের হয়ে পেশাদার ফুটবলে অভিষেক হয় স্পেনে জন্ম নেওয়া মোরাতার। গত বছরের আগস্টে তাকে ২ কোটি ইউরোতে জুভেন্টাসের কাছে বিক্রি করে দেয় রিয়াল। রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলোত্তি হয়তো মনে মনে বলছেন, ‘কী ভুলটাই না আমি করেছি’!

মরিয়েন্তেসের গল্পটা অবশ্য একটু ভিন্ন। ২০০৩-০৪ মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদ থেকে ধারে মোনাকোতে খেলতে গিয়েছিলেন তিনি। আর তার গোলেই সেবার চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল রিয়াল। ১১ বছর পর আরেক প্রাক্তন খেলোয়াড় মোরাতার গোলে ইউরোপের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে কপাল পুড়ল রিয়ালের। রিয়াল মাদ্রিদের সমর্থকরা এখন বলতেই পারেন, কেন এমন হয়!



মন্তব্য চালু নেই