‘যৌন নিপীড়নের ঘটনা চাপা দিতে ব্লগার খুন’

তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘পুলিশ ও রাষ্ট্রের অবিরাম অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের এ অবস্থান। পুলিশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানে, পয়লা বৈশাখে কারা যৌন নিপীড়ন চালিয়েছে। তাই তারা অপরাধীদের গ্রেফতার করছে না।’

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘একটি ঘটনা ঘটিয়ে আরেকটি ঘটনা চাপা দেওয়া হচ্ছে। যৌন নিপীড়নের ঘটনা চাপা দিতে ব্লগার খুন হয়েছে। সামনে হয়ত আরেকটি নতুন ঘটনা ঘটানো হবে।’

মঙ্গলবার বিকেলে শাহবাগে ‘নারীর নিরাপত্তায় প্রতিরোধ গড়ে তুলি’ শীর্ষক প্রতিবাদ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। এতে লেখক-শিক্ষক-ছাত্র-শিল্পী-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও রাজনৈতিক কর্মীরা অংশ নেন। এ সভায় আনু মুহাম্মদ কথাগুলো বলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশের ওপর ভর করে সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই চান না এ ঘটনার বিচার হোক। তা না হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলে সরকারের লোকের এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে পারত না।’

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আহমেদ কামাল বলেন, ‘সরকারের কাছে স্ক্রিপ্ট তৈরি করা আছে। সেই স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী একের পর এক ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। প্রথমে পয়লা বৈশাখে নারী নির্যাতন, তারপর ভোটারবিহীন নির্বাচন ও সর্বশেষ আরেকজন ব্লগার হত্যা করা হল। আমাদের বোঝার বাকি নেই, কারা এ সব ঘটাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশে পার্লামেন্ট আছে, কার্যকর বিরোধীদল নেই। বিচারালয় আছে, বিচার নেই। সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি আছে, তার কোনো ক্ষমতা নেই। সবকিছু যেন এক ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠছে। মনে হচ্ছে, এ দেশ এখন আর স্বাধীন নেই। নয়া একটি উপনিবেশে আমরা ঢুকে পড়েছি।’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ দমনের জমিন সৃষ্টির জন্য এ দেশে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সরকারের উদ্দেশ্যেই এখন জঙ্গিবাদ দমনের নামে যে করেই হোক ক্ষমতায় থাকতে হবে। মানুষ খুন করে হোক, দেশে গণতন্ত্র থাকুক না থাকুক তাতে কোনো সমস্যা নেই। তাদের উদ্দেশ্য কী? যদি আমরা বুঝি তাহলে এখনই এ সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

সাকি বলেন, ‘বিরোধী দল ব্যর্থ। আমরা এ অসহায় অবস্থায় আর কতদিন থাকব? দেশের রাজনীতিতে ভূমিকম্পের অপেক্ষায় আমরা। নতুন রাজনীতি তৈরি করতে হবে। সরকারের জমিদারীর ভাব আমাদের ছুড়ে ফেলে দিতে হবে।’

প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, হাসনাত কাইয়ুম, শ্যামলী শীল, খুশি কবির, অরূপ রাহী, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি সৈকত মল্লিক, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি স্নেহাদ্রি চক্রবর্তী রিন্টু, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ফয়সাল ফারুক অভিক, ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক সাদিক রেজা প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই