দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছাবে ইন্টারনেটসেবা

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে ভারতবর্ষ ও মধ্যপ্রাচ্য হয়ে পশ্চিম ইউরোপ পর্যন্ত সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। এর মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেটসেবা পৌঁছে দেওয়া হবে।

এ ছাড়া আঞ্চলিক সাবমেরিন টেলিযোগাযোগ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বল্প চার্জে আন্তর্জাতিক ভয়েস ও ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে মানসম্পন্ন ও নিরবচ্ছিন্ন সেবা সরবরাহ সম্ভব হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল)। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য তোলা হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৬০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

অনুমোদনের জন্য প্রকল্পটি উপস্থাপন করছে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ। বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বর্তমান এসইএ-এমই-ডব্লিউই-৪ ক্যাবলটি কোনো কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে তার বিকল্প হিসেবে প্রস্তাবিত এসইএ-এমই-ডব্লিউই-৫ ক্যাবলের মাধ্যমে সংযোগ নিরবচ্ছিন্ন রাখা সম্ভব হবে। এ ছাড়া অতিরিক্ত ল্যান্ডিং স্টেশন সংযুক্তির মাধ্যমে ডাটার পরিধি বাড়বে।

প্রকল্পটির মাধ্যমে দেশের ব্যান্ড উইথ চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে ব্যান্ডউইথ সরবরাহ বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। আন্তর্জাতিক সাবমেরিন কমিউনিকেশন ব্যবস্থা বহুমুখীকরণ হবে ও তথ্যপ্রযুক্তিসেবা যেমন- কল সেন্টার, সফটওয়্যার এক্সপার্ট, ডাটা এন্ট্রি ও ফ্রি ল্যান্সিং সেবার পরিধি বাড়বে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্রাঞ্চ সেকশনের জন্য এক সেট টার্মিনাল ইক্যুইপমেন্ট, ১৪টি রিপিটার্স ও একটি ব্রাঞ্চিং ইউনিট, ১ হাজার ২২৫ কিলোমিটার সাবমেরিন ক্যাবল, প্ল্যান্ট স্থাপন, ৪ কিলোমিটার ল্যান্ড ক্যাবল ক্রয় করবে।

তবে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি) থেকে কঠিন শর্তে ঋণ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৬০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা । এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১৬৬ কোটি টাকা, আইডিবি থেকে ৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৩৫২ কোটি টাকা ঋণ নেয়া হচ্ছে। আর বাস্তবায়নকারী সংস্থা বিএসসিসিএল-এর তহবিল থেকে নেয়া হবে ১৪২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

তুলনামূলক পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আইডিবি থেকে নেওয়া ওই অর্থ বিশ্বব্যাংকের সহজশর্তের ঋণের হিসাবে ৬ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩৮ বছরে পরিশোধ করার সময় পাওয়া যেত, যার সার্ভিস চার্জ মাত্র শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ। কিন্তু আইডিবি সেখানে বাংলাদেশকে সময় দিয়েছে মাত্র ১৩ বছর।

যদিও পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আরাস্তু খান জানান, এটাকে নন-কনসেশনাল লোন বলা যায়। প্রকল্পটির গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে এ ধরনের ঋণ নেওয়া খারাপ কিছু নয়।

প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তিনি বলেন, বর্তমান যে সবমেরিন ক্যাবল আছে সেটি যদি কোনো কারণে বন্ধ হয়ে যায় তাহলে আমাদের জন্য বিপদ। তাই বিকল্প ব্যবস্থা থাকা উচিত। সে বিবেচনায় প্রকল্পটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।



মন্তব্য চালু নেই