পে-স্কেল নিয়ে চলতি সপ্তাহেই সচিব কমিটির সুপারিশ

চলতি সপ্তাহেই সরকারি কর্মকর্তাদের নতুন পে-স্কেল নিয়ে সচিব কমিটির সুপারিশ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে জমা দেওয়া হতে পারে।

সচিব কমিটির সুপারিশ পাওয়ার পরই অর্থমন্ত্রী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন। এরই মধ্যে সচিব কমিটির সুপারিশ চূড়ান্ত হয়েছে বলে অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, এর আগে গত সপ্তাহে অর্থমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে দেশে ফিরে পে-স্কেল নিয়ে সচিব কমিটির সুপারিশ দু’একদিনের মধ্যে জমা হওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু সে সময়ের মধ্যেও সচিব কমিটি তাদের সুপারিশ অর্থমন্ত্রীর কাছে জমা দিতে পারেননি। কিছু কাজ বাকি ছিল। গত সপ্তাহে তা শেষ হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে চলতি সপ্তাহে যে কোন দিন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব অর্থমন্ত্রীর কাছে তাদের সুপারিশ জমা দেবেন।

সূত্র জানায়, নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়নে আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এর আগে গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত পে কমিশনের মূল প্রতিবেদনে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য শতভাগ বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়। তাদের সুপারিশ পর্যালোচনা করতে এ বছরের জানুয়ারিতে গঠন করা হয় সচিব কমিটি।

আসন্ন বাজেটে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা বাবদ মোট বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ৪২ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা। বর্তমানে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ২৯ হাজার ৩২১ কোটি টাকা। অর্থাৎ বর্ধিত বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের জন্য আগের চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ লাগবে ১২ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা।

সরকার দুই ধাপে নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করবে। সে অনুযায়ী প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে আগামী বাজেটে উল্লেখিত অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। সরকারি চাকরিজীবীদের পেছনে এখন বছরে যে খরচ হয়, তা মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির আড়াই শতাংশ। নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হলে এটি জিডিপির ৩ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে।

বর্তমানে সরকারি চাকরিজীবীর সংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ। তবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত, উন্নয়ন প্রকল্পে নিয়োজিত চাকরিজীবীরা এ হিসাবের বাইরে। তারা সবাই সরকারি কোষাগার থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। সে হিসাবে বর্তমানে ২১ লাখ চাকরিজীবী রয়েছেন, যারা সরকারি কোষাগার থেকে নিয়মিত মাসিক বেতন পাচ্ছেন।

সূত্র জানায়, ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত পে-কমিশনের গত বছর ডিসেম্বরের শেষ দিকে জমা দেওয়া মূল প্রতিবেদনে সর্বনিম্ন ধাপের মূল বেতন ছিল ৮ হাজার ২০০ টাকা। কর্মচারীদের জন্য প্রস্তাবিত মূল বেতন আরও ৩০০ টাকা বাড়িয়ে ৮ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারনের সুপারিশ করেছে সচিব কমিটি।

তবে গ্রেড-১ পদমর্যাদার কর্মকর্তা তথা সচিব, সিনিয়র সচিবদের মূল বেতন কিছুটা কাটছাঁটের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের মূল বেতনে সামান্য পরিবর্তনের সুপারিশ করা হয়েছে। যারা নতুন চাকরিতে প্রবেশ করবেন তাদের জন্য সবচেয়ে বেশি বেতন বাড়ানোর সুপারিশ করা হয় ফরাসউদ্দিন কমিশনের প্রতিবেদনে। অন্যদিকে এই গ্রেডে বেতন কিছুটা কমানোর পক্ষে মত দিয়েছে সচিব কমিটি।

ফরাসউদ্দিনের দেওয়া প্রতিবেদনে গ্রেড-১-এর মূল বেতন ৮০ হাজার টাকা। এই গ্রেডের বেতন কমিয়ে ৭৫ হাজার টাকা নির্ধারণের সুপারিশ করতে পারে সচিব কমিটি। সিনিয়র সচিব, মুখ্য সচিবের মূল বেতন ৯০ হাজার টাকা নির্ধারণের সুপারিশ করতে পারে। পে কমিশনের সুপারিশ ছিল এক লাখ টাকা। এ ছাড়া অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার গ্রেডে বেতন ২ হাজার টাকা কমানোর প্রস্তাব করতে পারে সচিব কমিটি।



মন্তব্য চালু নেই