ইয়াবা পাচার রোধে বাংলাদেশ-মিয়ানমার বৈঠক

প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার থেকে ভয়ঙ্কর মাদক ইয়াবা ট্যাবলেটের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে উভয় দেশের মধ্যে দুই দিনব্যাপী দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকার প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ সংস্থার মধ্যে এ বৈঠকে শুরু হয়। বৈঠকে দেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বজলুর রহমানের নেতৃত্বে ১৫ সদস্য এবং মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় মাদকদ্রব্য নির্মূল কমিটির প্রধান পুলিশের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল চিউ হুইনের নেতৃত্বে চার সদস্য অংশ নেন।

বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ সংস্থার মধ্যে দ্বিতীয় দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে বুধবার সন্ধ্যায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) মহাপরিচালক (ডিজি) মো. বজলুর রহমান বলেন, ‘ইয়াবা নিয়ন্ত্রণে আমাদের কী সহায়তা প্রয়োজন, তা আমরা জানিয়েছি। মিয়ানমার বাংলাদেশকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে।১০টি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ইয়াবা কারখানা ও ব্যবসায়ীদের হালনাগাদ তালিকা দেওয়া হয়েছে।এ ছাড়া সীমান্ত এলাকায় লিঁয়াজো অফিস স্থাপনের ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে।’

জানা যায়, দুই দিনব্যাপী বৈঠকে ইয়াবা, পপি, গাঁজা এবং ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক দ্রব্য পাচারের নানা কৌশল নিয়ে কথা বলেন বক্তারা। এ সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ৩৯টি ইয়াবা তৈরির কারখানা বা ল্যাবরেটরির নাম-ঠিকানা হস্তান্তর করে এগুলো ধ্বংস করার অনুরোধ জানানো হয়। মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্ত ব্যবহার করে মাদকদ্রব্য চোরাচালান বন্ধে সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৪ সালের ১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে মাদকদ্রব্যের অবৈধ ব্যবহার ও এ সংক্রান্ত বিদ্যমান আইন-বিধির তথ্যের বিনিময়, মাদকপাচার রোধ, মাদক থেকে অর্জিত অর্থের পাচার প্রতিরোধ, অর্থপাচার শনাক্তকরণ, মাদক থেকে অর্জিত সম্পত্তি বাজেয়াপ্তিতে পারস্পরিক সহযোগিতা, টেলিফোন, টেলেক্স ও ফ্যাক্সযোগে দ্রুত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পারস্পরিক যোগাযোগ রক্ষা, দুই দেশের মাদক অপরাধীদের প্রোফাইল বিনিময় ইত্যাদি উল্লেখ রয়েছে। সম্পাদিত চুক্তির ফলে ২০১১ সালের নভেম্বরে মিয়ানমারের ইয়াংগুনে দুই দেশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে প্রথম দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দুই দেশের সম্মতিতে ঢাকায় দ্বিতীয় দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু পরে বিভিন্ন সময় ঢাকায় বৈঠক করার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হলেও মিয়ানমার সাড়া দেয়নি।



মন্তব্য চালু নেই