বদি, মান্নান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কক্সবাজার-৪ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি, সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান ও তার স্ত্রী হাসিনা সুলতানার বিরুদ্ধে আলাদা তিনটি অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।

ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের সাধারণ শাখায় (জিআর) বৃহস্পতিবার বিকেলে দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে আলাদা তিনটি অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। বুধবার আলাদা তিনটি অভিযোগপত্র অনুমোদন দেয় দুদক।

দুদক সূত্র জানায়, অভিযোগপত্রে সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে ৬ কোটি ৩৩ লাখ ৯৪২ টাকা, আবদুল মান্নান খানের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৬৫ লাখ ৫৭ হাজার ৪৪২ টাকা এবং সৈয়দা হাসিনা সুলতানার বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৩৫ লাখ ২৭ হাজার ২৯ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া বদির বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৫৩ হাজার ২৭ টাকার, মান্নান খানের বিরুদ্ধে ৩০ লাখ ৯৬ হাজার ৬১২ টাকার এবং হাসিনা সুলতানার বিরুদ্ধে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৩ হাজার ৯১২ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

তদন্তে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিনজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬ (১) ও ২৭ (২) ধারায় কমিশন অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় বলে দুদক সূত্র জানিয়েছে।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামার তথ্যের সূত্র ধরে ক্ষমতাসীন দলের সাবেক তিন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও তিন সংসদ সংসদের বিরুদ্ধে গত বছরের শুরুতে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। এর মধ্যে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, সংসদ সদস্য আসলামুল হক ও এনামুল হককে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আবদুর রহমান বদি, আবদুল মান্নান খান ও সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ইতোমধ্যে মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।

আবদুল মান্নান খানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শেষে প্রায় সাড়ে ৭৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত বছরের ২১ আগস্ট রমনা থানায় মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন। পরে নাসির উদ্দিন মামলাটির তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দাখিলের অনুমতি চেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন জমা দেন। মান্নান খানের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করতে গিয়ে তার স্ত্রী সৈয়দা হাসিনার বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান করে দুদক। প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত বছরের ২১ অক্টোবর উপ-পরিচালক নাসির উদ্দিন তার বিরুদ্ধেও রমনা থানায় মামলা করেন। এ মামলারও তদন্ত করেন তিনি।

সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে অভিযোগের অনুসন্ধান কর্মকর্তা সাবেক উপ-পরিচালক আহসান আলী। অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বদিকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অনুসন্ধান শেষে প্রায় ১৩ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৪ সালের ২১ আগস্ট বদির বিরুদ্ধে নতুন অনুসন্ধান কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুস সোবহান মামলা করেন। এ মামলায় প্রায় তিন সপ্তাহ কারাগারে ছিলেন বদি। বদির বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. মঞ্জুর মোর্শেদ।



মন্তব্য চালু নেই