বাজেটে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশের দিকনির্দেশনা চায় ডিসিসিআই

২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার দিকনির্দেশনার ওপর জোর দাবি জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই)।

ডিসিসিআইয়ের মতে, বিগত দিনে রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রতিকূল থাকার কারণে ব্যাংকে অলস টাকা পড়ে থাকলেও নতুন বিনিয়োগ হচ্ছে না। এ ছাড়া ঋণের অতিরিক্ত সুদহার এবং ব্যবসা ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় আগামী বছরের বাজেটে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার নির্দেশনা থাকা উচিত।

মঙ্গলবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনায় ডিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়। সংগঠনের সভাপতি হোসেন খালেদ বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করতে ৫৩টি প্রস্তাব দেন। এর মধ্যে আয়কর খাতে ২৩টি, শুল্ক খাতে ২৩টি এবং ভ্যাট খাতে ৭টি প্রস্তাব রয়েছে।

এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন— শুল্কনীতির জ্যেষ্ঠ সদস্য ফরিদ উদ্দিন, মূসক বাস্তবায়নের সদস্য এনায়েত হোসেন, আয়কর নীতির সদস্য পারভেজ ইকবাল ও ডিসিসিআইয়ের পরিচালকরা।

লিখিত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি হোসেন খালেদ বলেন, ‘দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সঠিক রাজস্ব নীতির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সুষ্ঠু রাজস্বনীতি প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন জরুরী।’

করের আওতা বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, করহার বৃদ্ধি করতে করতে একপর্যায়ে আর বাড়ানো সম্ভব হবে না। তাই করদাতার আওতা বৃদ্ধি করা ছাড়া রাজস্ব আয় বৃদ্ধির আর কোনো বিকল্প নেই। ১৬ কোটি জনসংখ্যার এ দেশে মাত্র ১৮ লাখ লোকের আয়কর সনদ থাকলেও চলতি করবর্ষে তিন দফা সময় বাড়ানোর পরও প্রায় ১০ লাখ ২৬ হাজার ৯১৩ জন করদাতা আয়কর বিবরণী জমা দিয়েছেন। এটা হতাশাজনক।

আয়কর সংক্রান্ত প্রস্তাব : করমুক্ত আয়ের সীমা ২ লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং মহিলা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী করদাতাদের জন্য ৪ লাখ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে ডিসিসিআই। এ ছাড়া বয়স্ক নাগরিকদের কর রেয়াত সুবিধা প্রাপ্তির বয়স ৬৫ থেকে কমিয়ে ৬০ বছর করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া কালো টাকার উৎস বন্ধ, ট্যাক্স কার্ডের সুবিধা বৃদ্ধি, চেম্বারের ওপর কর প্রত্যাহার, ন্যূনতম কর প্রত্যাহার, ব্যাংকবহির্ভূত চ্যানেলের মাধ্যমে লেনদেন ৫০ হাজার টাকার পরিবর্তে ১ লক্ষ টাকা নির্ধারণ, সারচার্জের স্তর ২ কোটি থেকে বাড়িয়ে ৪ কোটি নির্ধারণ, অগ্রিম আয়কর ৫ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ নির্ধারণ করে এই করকেই চূড়ান্ত দায় বিবেচনা, সফটওয়্যার পার্কের জন্য ২০ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা দেওয়ায় প্রস্তাব করা হয়।

ভ্যাট : নতুন আইনে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) আইনে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ না করে ৭.৫ শতাংশ নির্ধারণ, মূল্য ঘোষণার নিময় বাতিল, প্যাকেজ ভ্যাটের হার, ইন্টারনেটের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

শুল্ক খাত : আইটিইএস পণ্যের জন্য এইচএস কোড নির্ধারণ, স্থানীয় শিল্পের সংরক্ষণ এবং সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সর্বোচ্চ শুল্ক হার আরোপের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় হারে সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি, বাজেট ঘোষণার পর অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে শুল্ক করের হার হ্রাস বা বৃদ্ধি না করার প্রস্তাব দিয়েছে ডিসিসিআই।



মন্তব্য চালু নেই