বুদ্ধপূর্ণিমা আজ
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্রতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধপূর্ণিমা আজ রোববার। যথাযথভাব গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সারা দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় এই উৎসব উদ্যাপন করছে।
বৌদ্ধধর্মের প্রবক্তা গৌতম বুদ্ধের শুভজন্ম, বোধিলাভ ও মহাপরিনির্বাণ লাভ- এই তিন স্মৃতিতে জড়ানো বুদ্ধপূর্ণিমা। এর আরেক নাম বৈশাখী পূর্ণিমা। বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসব হয় বলে এ রকম নাম হয়েছে। বৌদ্ধপ্রধান দেশসহ বাংলাদেশ এবং বিশ্বের সব বৌদ্ধধর্মানুসারী উৎসব উদ্যাপন করছে মহা ধুমধামে।
বাংলাদেশের বৌদ্ধরা বৈশাখী পূর্ণিমা উদ্যাপনে ধর্মীয় রীতিনীতির মধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। দিনটিতে দেশে সরকারি ছুটি রয়েছে। ফলে উৎসবে সবার শামিল হওয়ার সুযোগ আছে।
বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা এবং বিএনপির চেয়ারপারসন পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বৌদ্ধধর্ম মতে, এখন থেকে ২ হাজার ৫৫৮ বছর আগে এই দিনে মহামতি গৌতম বুদ্ধ পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তার জন্ম, বোধিলাভ ও মহাপ্রয়াণ বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে হয়েছিল। তাই তার অনুসারীরা এই দিনে যেমন আনন্দ করে তেমনি বুদ্ধের মহাপ্রয়াণের কথা স্মরণ করে প্রার্থনা করে এবং তার প্রচারিত বাণী সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
সবুজবাগ বৌদ্ধবিহারের অফিস সেক্রেটারি বিদর্শন বড়ুয়া জানান, শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে রোববার সকাল সাড়ে ৭টায় ধর্মরাজি বৌদ্ধবিহার থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হবে। ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে স্বধর্মসভা। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। বিশেষ অতিথি থাকবেন প্রাক্তন মন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া।
বিদর্শন বড়ুয়া আরো জানান, বিকেল ৫টায় সবুজবাগ বৌদ্ধবিহার মিলনায়তনে ‘বৌদ্ধধর্ম ও বিশ্বশান্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি থাকবেন নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফাদার বেঞ্জামিন ডি কস্তা।
বিদর্শন বড়ুয়া আরো জানান, এ ছাড়া বুদ্ধপূজা, মহাসংঘদান, মহা অষ্টপরিষ্কারদানসহ বিভিন্ন ধর্মীয় কর্মকাণ্ড পালন করা হবে। এর মধ্যে জগতের সব প্রাণীর সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে অনুষ্ঠিত হবে বিশেষ প্রার্থনা।
বৌদ্ধধর্মালম্বীদের বিশ্বাস, গৌতম বুদ্ধ বিশ্বের মানুষের দুঃখ-বেদনাকে নিজের দুঃখ বলে হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করেন। মানবজীবনের দুঃখ তার দৃষ্টিগোচর হলে তিনি সম্পদ, ঐশ্বর্য তথা সংসার জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েন এবং জন্ম, জরা, ব্যাধি ও মৃত্যু- এ চারটির কারণ উদ্ঘাটন এবং মানুষের শান্তি ও মুক্তির লক্ষ্যে নিমগ্ন হন।
একসময় রাজপ্রাসাদের বিত্তবৈভব, সুখ ও স্বজনের মায়া ত্যাগ করে সিদ্ধি লাভের পন্থা অন্বেষণে তিনি বেরিয়ে পড়েন অজানার পথে। দীর্ঘ সময় সাধনার পর গৌতম বোধিপ্রাপ্ত হন।
বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ও সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন এবং মহাসচিব নির্মল রোজারিও এক যুক্ত বিবৃতিতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
এ ছাড়া দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক, সংস্কৃতিক ও বিভিন্ন পর্যায়ের সংগঠন, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বৌদ্ধসম্প্রদায়ের উদ্দেশে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই