রাউজানে সড়ক পাশে বাড়িঘর মাকের্ট নির্মাণ, রাখা হচ্ছে না পাকিং পানি নিষ্কাশনের জায়গা

রাউজানের সর্বত্র চলছে অপরিকল্পিত ভাবে বাড়ি ঘর নির্মাণ। রাস্তার পাশে খালি জায়গা ভরাট করে যত্রতত্র বাড়ি ঘর নির্মাণের ফলে বর্ষার পানি নিষ্কাশনের জায়গা থাকছে না। ফলে বর্ষার মৌসুমে সড়ক বা রাস্তা হয়ে পড়ছে পানি নিষ্কাশনের নালা। এই অবস্থার মধ্যে সড়ক বা রাস্তা গুলোর অবস্থা অল্পতেই বেহাল দশা হয়। জনচলাচলের সবগুলো পথ হয়ে পড়ে স্বাভাবিক ভাবে অযোগ্য।

এলাকার জনসাধারণ জানিয়েছে দেশে ইমারত নির্মাণ ও ভূমির ব্যবহার আইন থাকলেও এই আইন কোথাও কার্যকর হয় না। একারণে যার যেমন ইচ্ছে তেমন ভাবে নিজেদের জায়গা সম্পত্তিতে দালান কোটা বা দোকান মার্কেট নির্মাণ করছে। উপজেলার বিভিন্নস্থানে দেখা গেছে অনেকেই রাস্তার উপর এসে বাড়ি ঘর নির্মাণ করেছে। সামনে রাখা হয়নি জনচলাচলের পথ অথবা নালার জায়গা। অনেক এলাকায় দেখা গেছে সরকারি রেকর্ড পত্রে চিহ্নীত রাস্তার উপর করা হয়েছে ঘর।

অন্যদিকে চলে গেছে সেই পুরানো রাস্তা। এই রকম পরিস্থিতিতে বিভিন্ন গ্রামে পূর্ব চিহ্নীত সিমানা হারিয়ে যাচ্ছে। এই নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের জের ধরে প্রায় প্রতিদিন দাঙ্গা হাঙ্গামায় হচ্ছে। চলমান আছে শালিশ নালিশ মামলা মোকর্দমা। এলাকার সূত্র সমূহ জানিয়েছে গত প্রায় এক দশকে রাউজানে সম্পত্তির বিরোধ নিয়ে সৃষ্ট দাঙ্গাহাঙ্গামায় অনেকই হতাহত হয়েছে। মামলা মোকর্দমা হয়েছে প্রায় দুই শতাধিক। দক্ষিণ রাউজানে গুরুত্বপূর্ণ বানিজ্যিক এলাকা নোয়াপাড়া পথের হাটের ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন ভূমি মালিকরা এখানে বড় বড় মার্কেট করে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করছে। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পাশ ঘেঁষে মাকের্ট নির্মাণের আগে তাদের কেউ পানি নিষ্কাশনের জন্য নালা, গাড়ি পাকিং করার মত জায়গা রাখেনি।

একারণে উত্তর ও দক্ষিণ মুখি সড়ক পথে প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হয়। বর্ষায় গোটা সড়ক পথ একটি নালায় পরিণত হয়। বিশাল এলাকার বর্ষার পানি সড়কের উপর দিয়ে নামতে গিয়ে সড়কটি ক্ষত বিক্ষত হয়ে পড়ে। নোয়াপাড়ার মত পাহাড়িতলী চৌমুহনী, উপজেলা সদরের মুন্সিরঘাটা, জলিলনগর থানা সড়ক, কাগতিয়া বাজার, অলিমিয়াহাটসহ সর্বত্র এই অবস্থা বিরাজমান।

এলাকার লোকজন বলেছেন রাউজানের সড়ক সমূহে নিবিঘেœ চলাচল উপযোগি করে রাখাতে স্থানীয় সাংসদের নিদ্দেশে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রতি বছর সংস্কার কাজ করে থাকে। তবে এই কাজ ঠেকসই হয় না বর্ষার কারণে। ভুমি পরিমাপ কাজে নিয়োজিত এক সার্ভের বলেছেন যার যেমন ইচ্ছে তেমন ভাবে জমি ভরাট করে বাড়ি ভিটা করার প্রবণতায় সরকারি ভূমি রেকর্ড এর সাথে এলাকার চিত্রে গরমিল হয়ে যাচ্ছে। এতে করে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ভূমি পরিমাপে বিভ্রান্ত হচ্ছে সার্ভেয়ারগণ।

সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, রাউজান পাহাড়তলী ইউনিয়নে ঊনসত্তুরপাড়া বাজারের উত্তর পাশে একটি দ্বিতল বাড়ি নির্মিত হয়েছে আগের সড়কের উপর। এ্খন সড়ক পথটি পরিবর্তন হয়ে এসে পড়েছে ফসলি জমিতে। স্থানীয় প্রবীণ এক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন সিট খতিয়ানে চিহ্নীত থাকা রাস্তাটি পরিবর্তন করার ফলে সার্ভেরগণ জমি পরিমাপে বিভ্রান্ত হবে। আগামী প্রজন্মও চিহ্নীত সীমানা জটিলতার মধ্যে পড়ে হাবুডুবু খাবে। এলাকার সূত্র সমূহ জানিয়েছে উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় এখন পুকুর , ডোবা ভরাট করার মহোৎসব চলছে। কৃষিজমি থেকে মাটি কেটে ওসব জলাশয় ভরাট করে ফেলার কারণে জলাবদ্ধতা বাড়ছে। বর্ষার পানি ধারণ করার মত জায়গা না পেয়ে মৌসুমী বর্ষনের পানি বেশি সময় ধরে জমে থাকে গ্রামীণ রাস্তাঘাটে।

এলাকার সচেতন নাগরিকগণ মনে করেন এই সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কঠোর আইনী পদক্ষেপের মাধ্যমে। এটি করা হলে রাউজানের প্রতিটি সড়ক পথ ঠেকসই হবে। সংঘাত সংঘর্ষ কমবে, সুন্দর থাকবে এলাকা।



মন্তব্য চালু নেই