খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা (ভিডিও দেখুন)

রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা কারওয়ান বাজারে নির্বাচনী প্রচারণার সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়েছে। সেখানে বক্তব্য দেওয়ার একপর্যায়ে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়ে মারা হয়। এ ছাড়া লাঠি ও লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে বেশ কয়েকটি গাড়ির গ্লাস ভাঙা হয়।

হামলায় চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তারসহ পাঁচজন আহত হন। তাদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে খালেদা জিয়া নিরাপদ ও সুস্থ আছেন। পরে তার গাড়িবহর মগবাজারের উদ্দেশে কারওয়ান বাজার ত্যাগ করে।

গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৮টায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি ছাড়া সারা দেশে বুধবার হরতালের আহ্বান করা হয়।

গাড়িবহরে উপস্থিত প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান জানান, খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় তার একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার, এনাম, ফারুক, ফজলুল করিম এবং খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত অপর একটি গাড়ির চালক শাহেদ আহত হন। তাদের ইউনাইটেড হাসপাতাল ও শাহাবুদ্দিন মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় হামলার এ ঘটনা ঘটে। এতে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকর্মীদের ব্যবহৃত একটি গাড়িসহ কয়েকটি গাড়ির গ্লাস ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত গাড়িতে রক্তের দাগ দেখা যায়।

বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িবহরে হামলা প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম কাজল বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসনের গণসংযোগের সময় একদল যুবক কালো পতাকা নিয়ে সেখানে মিছিল করে। এ সময় চেয়ারপারসনের নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে তাদের উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িবহর মগবাজারের উদ্দেশে চলে যায়।’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের পক্ষে তৃতীয় দিনের মতো প্রচারণায় নামেন খালেদা জিয়া। রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা কারওয়ান বাজারে সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে গণসংযোগ শুরু করেন তিনি। এ সময় সেখানকার ব্যবসায়ীদের কাছে তিনি তাবিথ আউয়ালের পক্ষে ভোট চান।

খালেদা জিয়া এ সময় বলেন, ‘চোরদের ভোট দেবেন না। সারা দেশে তারা শুধু চুরি আর চুরি করছে। আপনারা তাবিথ আউয়ালকে ভোট দেবেন।’ বক্তব্য শেষ হওয়ার আগেই একদল উচ্ছৃঙ্খল যুবক খালেদা জিয়ার গাড়িবহর লক্ষ্য করে ইট ছুড়ে মারে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িবহরে উপস্থিত প্রতিবেদক এর আগে জানান, বাসা থেকে বের হয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িবহর গুলশান-২, বনানী, মহাখালী ফ্লাইওভার হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনের সড়ক দিয়ে বিজয় স্মরণীর মোড়ে উপস্থিত হয় বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে। এরপর গাড়িবহরটি ফার্মগেটের উদ্দেশে রওনা দেয়। সাড়ে ৫টার একটু আগে বহরটি কারওয়ান বাজারে উপস্থিত হয়। এরপর খালেদা জিয়া গাড়ি থেকে নেমে গণসংযোগ শুরু করেন।

গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে সোমবার বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বের হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী এ্যাডভোকেট শামসুল রহমান শিমুল বিশ্বাস উপস্থিত আছেন। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকর্মীরাও (সিএসএফ) উপস্থিত আছেন। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যকে তার বহরে দেখা যায়নি।

খালেদা জিয়ার প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান চেয়ারপারসনের গাড়িবহরের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন রবিবার উত্তরায় গণসংযোগ করেন। ওই সময় আওয়ামী লীগের সমর্থকরা তাকে প্রচারণায় বাধা দেন। পরে তিনি খিলক্ষেত ও যমুনা ফিউচার পার্কে প্রচারণা চালিয়ে আবার বাসভবনের ফিরে আসেন।

এর আগে শনিবার বিকেলে তিনি গুলশান, মহাখালী ও হাতিরঝিল এলাকায় গণসংযোগ করেন।



মন্তব্য চালু নেই