মানবপাচার ও যৌনব্যবসা
দুই ওসিসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
মানবপাচার ও পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করার অভিযোগে রাজধানীর সবুজবাগ থানার দুই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ১২ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছে।
মামলাটি করেছেন মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড হেলথ ফাউন্ডেশনের পরিচালক মিয়াজী সেলিম আহমেদ। বুধবার তিনি ঢাকার পাঁচ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।
আসামিরা হলেন- সবুজবাগ থানার ওসি বাবুল মিয়া, ওসি (তদন্ত) তাজুল ইসলাম, এসআই মিন্টু, ইমন, মোসাঃ বৃষ্টি, রহম আলী, স্বপন, আকাশ, নাজমা, নাছিমা, সুরমা বানু ওরফে সূর্য বানু ও সুমনা সরদারনী।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি আলী আজগর স্বপন।
তিনি জানান, বিচারক তানজীনা ইসমাইল বাদীর জবানবন্দি গ্রহন করলেও বুধবার এ সংক্রান্ত কোন আদেশ দেননি। তবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে আদেশ দেয়া হতে পারে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, পুলিশ বাদে অপর আসামিরা দেশের বিভিন্ন স্থানের আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে এবং বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে মিনি যৌনপল্লী গড়ে তুলেছে। এসব স্থানে তারা প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত-অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের ফুসলিয়ে, কখনো প্রেমের ফাঁদে ফেলে, আবার কখনো মডেল বানানো কিংবা চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে এসে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ১৪ মে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাদীর সংস্থাটি জানতে পারে আসামি ইমনসহ কয়েকজন সবুজবাগ থানাধীন মধ্যবাসাবোর একটি বাড়িতে কয়েকজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের বিভিন্ন কৌশলে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ধরে এনে দেহ ব্যবসা করাচ্ছে। বিষয়টি বাদীর সংস্থা সবুজবাগ থানার ওসি বাবুলকে জানান। কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।
বিষয়টি খিলগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) নুর আলম সিদ্দিকীকে জানানোর কিছুক্ষণ পর এসআই মিন্টু ঘটনাস্থলে আসেন। তিনিও মেয়েগুলোকে উদ্ধার না করে উল্টো তাদের বকাঝকা করেন।
বিষয়টি ফের এসি নুর আলম সিদ্দিকীকে জানালে তিনি এসআই মিন্টুকে বাদীর সংস্থার লোক নিয়ে সেখানে যেতে বলেন। এবার তারা সেখান থেকে ১১টি অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে উদ্ধার করে।
মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়, মেয়েগুলো উদ্ধারের পর এসআই মিন্টু মামলার আসামিদের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে ৫ জনকে ছেড়ে দেয় এবং ৬ জনকে পুলিশের গাড়িতে উঠায়। বাকিদের ছেড়ে দেয়ার কারণ জানতে চাইলে এসআই মিন্টু ক্ষিপ্ত হয়ে বাদীর সংস্থার লোকজনকে মামলায় জড়ানোর হুমকি দেয়। মেয়েগুলোকে তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দেয়ার জন্য প্ররোচিত করে।
এরপর সবুজবাগ থানা পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে তারা নগদ ৩২ হাজার টাকা ও গলায় থাকা একটি এক ভরি সোনার চেইন পুলিশের হাতে দিলে তারা দু’জনকে ছেড়ে দেয়। সংস্থাটির বাকি দু’কর্মীকে মানব পাচারের মামলা দিয়ে আদালতে পাঠায়।
এভাবে মিথ্যা মামলায় হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড হেলথ ফাউন্ডেশন নামক মানবাধিকার সংস্থার কর্মীদের হয়রানি করে সবুজবাগ থানার দু’ওসির সহায়তায় অপর আসামিরা নির্বিঘ্নে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
মন্তব্য চালু নেই