নেদারল্যান্ডসে চুরির অভিযোগে শাস্তির মুখে বাংলাদেশের কূটনীতিক
নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগে একটি দোকান থেকে হেডফোন চুরির অভিযোগে শাস্তির মুখে পড়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক শিক্ষানবিশ কর্মকর্তা।
মাহবুব শহীদ শিশির নামের ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারি বিধি অনুয়ায়ী ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশ না করে জ্যেষ্ঠ এই কর্মকর্তা বলেন, “তিনি চাকুরি হারাতে পারেন বা তার চাকুরি স্থায়ীকরণ বিলম্বিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।
“আমরা এর মধ্যেই তাকে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমি কোর্স থেকে সরিয়ে নিয়েছি।”
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে পুরকৌশল বিভাগে পড়াশোনা শেষে ২০১২ সালের জুনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন।
গত ফেব্রুয়ারিতে একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নিতে অপর ৯ সহকর্মীর সঙ্গে শহীদকে নেদারল্যান্ডসের ইন্সটিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনসে পাঠানো হয়।
এর মধ্যেই একটি ইলেকট্রনিকসের দোকান থেকে হেডফোন চুরি করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে ডাচ পুলিশ ৩৫০ ইউরো জরিমানা পরিশোধ করে ছাড়া পান শহীদ।
তার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ এনে বাংলাদেশের ডাচ মিশনকে চিঠি দিয়েছে নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, শহীদ পুলিশকে জানান, তার সহকর্মীদের বেশ কয়েকজন হেগের দোকানগুলিতে চুরি করে সফল হওয়ার পর তাদের অনুসরণ করেছেন তিনি।
তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শহীদ।
জ্যেষ্ঠ ওই কর্মকর্তা বলেন, “তিনি আমাদের বলেছেন, তিনি একজনকে (অপরিচিত) সিকিউরিটি ট্যাগ খুলে দোকান থেকে জিনিস চুরি করতে দেখেছেন। তার কথা হয়তো ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে (হেগ পুলিশ) থাকতে পারে।
“আমরা তার অন্য সহকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলেছি। তাদের কেউ ওই সময়ে তার সঙ্গে ছিল না।”
পশু চিকিৎসা কর্মকর্তা বাবার একমাত্র ছেলে শহীদ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণারয়ের অপর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, তারা তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে চিন্তিত।
ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে তার ক্লাস নেওয়া এই কর্মকর্তা বলেন, “শুরুতে তিনি অন্যদের থেকে আলাদা ছিলেন। তিনি এক ধরনের মানসিক রোগে আক্রান্ত এবং আমরা জানতে পেরেছি দীর্ঘদিন ধরে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন।”
তিনি বলেন, “মেধাবী ছাত্র হিসেবে তিনি বিসিএস ফরেন সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। অ্যাকাডেমির তত্ত্বীয় বিষয়েও তিনি ভাল করছিলেন। তবে তিনি ততোটা সামাজিক নন এবং অন্তর্মুখী স্বভাবের।”
মন্তব্য চালু নেই