‘সবকিছুই আমাদের বিপক্ষে ছিল’ বললেন মাশরাফি
সফল বিশ্বকাপ মিশন শেষে দেশে ফিরে এখন অফুরন্ত অবসর সময় কাটাচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। এর মধ্যে অনেকে গ্রামের বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ছুটি কাটাতে গেছেন। আবার তাসকিন-মাহমুদুল্লাহ-মাশরাফিসহ কয়েকজন রয়েছেন ঢাকাতেই। তবে তারা খুব একটা মিরপুর স্টেডিয়াম এলাকাতে আসেন না। রোববার বিশ্বকাপের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরদিন অর্থাৎ সোমবার দুপুরে হঠাৎ মিরপুর স্টেডিয়ামে দেখা মিলল মাশরাফি বিন মর্তুজার। অবশ্য ব্যক্তিগত একটা কাজেই এসেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
আগামী ৫ এপ্রিল থেকে মাঠে গড়াতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) তৃতীয় আসর। আর এই আসরে খেলার কথা রয়েছে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের। এসব জানতেই মাশরাফির স্টেডিয়ামে আসা। আর এখানে এসেই বিশ্বকাপ নিয়ে নানা অজানা কথা অকপটে বললেন টাইগার দলপতি। মাশরাফি এখনও বিশ্বাস করেন যে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে সেদিন আম্পায়াররা যদি তিনটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে না দিতেন, তাহলে ম্যাচের ফলাফল অন্যরকম হলেও হতে পারত।
প্রায় দুই মাসের বিশ্বকাপ মিশন শেষে গত ২২ মার্চ দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। তাইতো গত কয়েকদিন ব্যাট-বলের কিটস ব্যাগস নিয়ে সেভাবে ভাবতে হয়নি বাংলাদেশ অধিনায়ককে। আইসিসির দুই সহযোগী দেশকে হারানো আর শেষ আটে খেলার স্বপ্ন নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে গিয়েছিল বাংলাদেশ দল। শেষ পর্যন্ত দুটি টার্গেট পূর্ণ করে টাইগাররা উঠেছিল কোয়ার্টার ফাইনালে। আর ভারতের সঙ্গে কোয়ার্টার ফাইনাল হওয়ায় আরও আশাবাদী ছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
কারণ ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়ে বাংলাদেশ খেলেছিল দ্বিতীয় পর্বে। আর সেবার টাইগারদের কাছে হেরে ভারতের বিশ্বকাপ মিশন শেষ হয়েছিল। তাইতো গত ১৯ মার্চ মেলবোর্নের মাঠে জয়ের ব্যাপারে দারুণ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
তবে ওই ম্যাচে শুধু বিতর্কিত তিনটি সিদ্ধান্ত নয়। ম্যাচের বাইরেও ভারতীয় দলকে আরও সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়েছে (প্রাকটিস সুবিধাসহ অন্যান্য)। সেই তুলনায় বাংলাদেশ ছিল উপেক্ষিত; জানিয়েছেন মাশরাফি। যদিও একই হোটেলে ছিল বাংলাদেশ এবং ভারতীয় দল।
মাশরাফি বলেন, ‘কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ শুরুর আগে একই সময় পৃথক দু’টি বাসে করে হোটেল থেকে মেলবোর্ন মাঠের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল দুটি দল। মাঠে পৌঁছাতে সময় লাগে মাত্র ১০ মিনিট, তবে আমাদের অনেক সময় লেগেছিল। আমরা মাঠে পৌঁছাই ম্যাচ শুরুর মাত্র আধা ঘণ্টা আগে। অথচ ভারত নির্ধারিত সময়েই পৌঁছায় মাঠে। ভারত দল যানজটে না পড়লেও আমরা তার শিকার হয়েছিলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর আগে ভারতের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচের সময় একই ঘটনা ঘটেছিল বলে ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়ে সংবাদ মাধ্যমে ফলাও করে বলেছিলেন প্রোটিয়া পেসার ডেইল স্টেইন। তখন আমার মনে কোন সন্দেহ হয়নি। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে এই কাজটি করার পর মাঠে গিয়ে মনে হলো সবকিছুই আজ আমাদের বিপক্ষে।’
বাংলাদেশ অধিনায়ক আরও বলেন, ‘ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের ২৬ ওভার পর্যন্ত আমরা ঠিকমতো বোলিং করে যাচ্ছিলাম। তারপরও আগে একবার স্লো ওভার রেটের কারণে আমাকে সতর্ক করা হয়েছিল। তাই এদিকটাতেও আমাকে ভাবতে হচ্ছিল। বিরাট কোহলিকে আমরা গেম-প্ল্যান অনুযায়ী আউট করেছি। কিন্তু সুরেশ রায়নাকে যখন আম্পায়াররা নিশ্চিত এলবিডব্লু দিল না তখন আমরা প্রথম হোঁচটটা খেলাম। এপর যখন রোহিত শর্মার ঘটনা ঘটল তখনে আমরা ক্রমশ ভেঙে পড়তে থাকি।’
তারপরও বাংলাদেশের আরও ভালো করা উচিৎ ছিল বলে মনে করেন মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘তবে এটাও ঠিক সেদিন আমাদের ব্যাটসম্যানদের আরও ভালো খেলা উচিৎ ছিল। যেটা আমরা করতে পারেনি। কারণ আম্পায়ারদের এসব কাণ্ডে আমাদের ভালো খেলার স্পিরিটটা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। যদিও ভারতের সঙ্গে এখন ১০টি খেলা হলে হয়তো আমরা ৮টিতে হারবো। তবে আমি এটুকু বলতে পারি আম্পায়াররা সেদিন ওসব কাণ্ড না ঘটালে আমরা জিততে পারতাম। ছেলেদের বডি-ল্যাঙ্গুয়েজ অন্যকরকম ছিল।’
মন্তব্য চালু নেই