বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে ৭ জনের মৃত্যু

চৈতের তাপে বৃষ্টির পরশ

চৈতের তাপে বৃষ্টির পরশ পেলো প্রাণিকূল। গত কয়েকদিন থেকে চৈত্র তার দাপট দেখাতে শুরু করেছিল। রোদে ঝলসে যাচ্ছিল প্রকৃতি। সেই তাপে অস্থির হয়ে পড়েছিল প্রাণিকুল। সেই তাপের মধ্যে শীতল পরশ নিয়ে এলো বৃষ্টি।
সোমবার সন্ধ্যার পর বৃষ্টিতে সিক্ত হলো দেশের বিভিন্ন অঞ্চল।
এমন ঝুম বৃষ্টি বছরে এটাই প্রথম বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিসের কর্তারা।
হঠাৎ ভারি বৃষ্টিতে আম, বোরো চাষীদের জন্য আশির্বাদ হয়ে এসেছে বলে জানালেন রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আব্দুল আলিম।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা থেকেই আকাশে চলছিল মেঘের গর্জন। সেইসঙ্গে প্রকৃতি অন্ধকার করে আসে। এর কিছুটা সময় পর আকাশ ভেঙে নামে মুষলধারে বৃষ্টি, সঙ্গে বিজলীর চমক! হঠাৎ বৃষ্টিতে অনেকেই ভিজে সিক্ত হয়েছেন।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক দেবল কুমার মৈত্র বলেন, সোমবার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬ মিলিমিটিার। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে শুরু হওয়া ঘণ্টাব্যাপী এ বৃষ্টি ছিল এ বছরে রাজশাহীতে সেরা বৃষ্টিপাত।
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আব্দুল আলিম বলেন, এখন গুটি আমে সেচ দেয়ার সময়। কিন্তু বৃষ্টি হওয়ায় আর সেটা করতে হবে না। এই বৃষ্টি আম ও বোরো চাষের জন্য অনেক উপকার বয়ে আনবে।

বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে ৭ জনের মৃত্যু
বজ্রপাতদেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪ জন, দিনাজপুরে দাওয়াত খেয়ে বাড়ি ফেরার পথে ২ জন এবং লালমনিরহাটে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসব ঘটনায় ১ বছরের শিশুসহ আহত হয়েছেন আরও ৭ জন। এছাড়া মারা গেছে ৯টি গরু।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৃথক স্থানে বজ্রপাতের ঘটনায় মা মেয়েসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলায় বজ্রপাতের এসব ঘটনা ঘটে। মৃতরা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের সোনারদিচর গ্রামের মো. আশরাফুলের স্ত্রী ফুলেরা বেগম (৩৫), তার মেয়ে ববিতা (৯), একই উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের ছাবানিয়া গ্রামের এনামূল হকের স্ত্রী রেবিনা বেগম (৫০) ও শিবগঞ্জ উপজেলার ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের বহালাবাড়ী গ্রামের মোফাজ্জ্বল হোসেনের ছেলে সাইদুর রহমান (২৫)।
পুলিশ, সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান ও স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যার আগে হঠাৎ ঝড় বৃষ্টি শুরু হলে সদরের সোনারদিচর গ্রামের গৃহবধূ ফুলেরা বেগম ও তার মেয়ে ববিতা ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এসময় গোয়াল ঘরে থাকা ৯টি গরুর মৃত্যু হয়। একইভাবে বজ্রপাতে ছাবানিয়া গ্রামের গৃহবধূ রেবিনা বেগম (৫০) ও শিবগঞ্জের বহালাবাড়ীর সাইদুর ঘটানস্থলে মারা যায়।

দিনাজপুর: বিরলে আত্মীয়র বাড়িতে দাওয়াত খেয়ে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে মোছা. মনোয়ারা বেগম (৫০) ও মো. মহবুর রহমান (৩২) নামে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন মহবুর রহমানের স্ত্রী মোছা. নাসিমা বেগম (২৫) ও ছেলে বাবু (০১)।
নিহত মনোয়ারা বেগম উপজেলার কালিয়াগঞ্জ গোপিনাথপুর গ্রামের মো. আব্দুল খালেকের স্ত্রী এবং মহবুর রহমান বামনগাঁও গ্রামের মো. এমাজ উদ্দিনের ছেলে।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার উপজেলার ঢেলাপীর নামকস্থানে এ ঘটনা ঘটে।

লালমনিরহাট: পাটগ্রামে বজ্রপাতে আমিনুর ইসলাম (৩৭) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনা আহত হয়েছেন আরও পাঁচ জন।
সোমবার দুপুরে উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আমিনুর ইসলাম একই এলাকার মৃত আকাশুরের ছেলে।
এলাকাবাসী জানান, মাঠে কাজ করার সময় হঠাৎ বজ্রপাতে আমিনুর ইসলাম মারা যান। এ ঘটনায় শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকার জসিমুদ্দিনের ছেলে রুহুল আমীন (২৭), সফিকুল ইসলামের ছেলে নাজমুল (২৫), একই উপজেলার পাটগ্রাম ইউনিয়নের ধবলসতী এলাকার ইসমাইল হোসেনের মেয়ে নূর বানু (১০), একই এলাকার ফরিদুলের মেয়ে ফেরদৌসি (১৬), দহগ্রাম ইউনিয়নের কালারডাঙ্গা এলাকার আজিজুল হকের ছেলে জয়নাল আবেদিন (২৫) আহত হন।



মন্তব্য চালু নেই