জয়কে অপহরণ চেষ্টা ঘটনার তদন্ত দাবি
প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে যুক্তরাষ্ট্রে অপহরণ চেষ্টার নিন্দা জানিয়েছেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা।
তারা এ ষড়যন্ত্রের সঙ্গে বিএনপির হাইকমান্ডের কারা জড়িত তা তদন্ত করে তাদের বিচার করার দাবিও জানিয়েছেন।
রোববার জাতীয় সংসদের পঞ্চম অধিবেশনে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বাণিজ্য মন্ত্রী তোফয়েল আহমদ এ বিষয়ে সংসদের দৃষ্টি আকষর্ণ করেন।
তিনি সংসদে মার্কিন আদালতের রায় পড়ে শোনান। এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে জয়কে অপহরণ চেষ্টার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এর সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
পরে এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, আমির হোসেন আমু, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রাক্তন আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু, স্বতন্ত্র সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী, জাসদের মইনুদ্দিন খান বাদল, জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান, অ্যাডভোকেট তারানা হালিম পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এই জঘন্য ষড়যন্ত্রের তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।
তোফায়েল আহমদ বলেন, এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের কোর্টে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে রিজভী আহমেদ সিজার ও জোহানেস থেলার বলেছে তারা বিএনপির হাইকমান্ডের নির্দেশে এটি করেছেন। তাই অবিলম্বে কারা এই হাইকমান্ড তা খুজে বের করতে হবে।
এ সময় ডেপুটি স্পিকার সংসদকে অবহিত করে বলেন, সজিব ওয়াজেদ জয় শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র নয়। তিনি (জয়) একজন প্রতিথ যশা বিজ্ঞানীর পুত্র। তাকে অপহরণ করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এজন্য আমি সরকারকে অনুরোধ করবো এই ব্যাপারে ফারদার ইনভেস্টিগেশন দরকার।
তিনি বিধি সঙ্গতভাবে এই হাইকমান্ডকে চিহ্নিত করে বিচারের ব্যবস্থা করতে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়কে অনুরোধ জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে উপস্থিত ছিলেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, রিজভী ও অপর জন তাদের জবানবন্দিতেই বলেছেন পাঁচ লাখ ইউএস ডলার চুক্তিতে তারা এটা করেছে। তারা প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়ের তথ্যাদি সংগ্রহ করে তাকে অপহরণের চেষ্টা করছিল। এটা যুক্তরাষ্ট্রের কোর্টে তারা বলেছে। এটা আমাদের কোন আদালতে বলেনি। তাই বিষয়টি নিয়ে উচ্চ তদন্ত হওয়া দরকার।
আমির হোসেন আমু বলেন, এর তদন্ত, বিচার ও রায় যদি বাংলাদেশের আদালতে হতো তাহলে বলা হতো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। কিন্তু এটি হয়েছে মার্কিন আদালতে। তাই কোন প্রশ্ন তোলার আর সুযোগ নেই।
সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত বলেন, মার্কিন আদালতে অপরাধীদের স্বীকারোক্তি দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে এই হত্যাষড়যন্ত্রের সঙ্গে বিএনপির হাইকমান্ড নির্দেশনা রয়েছে। এটা বাংলাদেশের আদালতের কথা নয়। আন্তর্জাতিক স্বীকৃত তদন্ত সংস্থা এফবিআই ও মার্কিন আদালতের বিচারের রায়। কিন্তু আমেরিকার আদালতের রায় ও আইন বাংলাদেশে প্রযোজ্য নয়। তাই বাংলাদেশের আইনে তদন্ত করে এর বিচার করতে হবে।
সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু বলেন, বর্তমান প্রজন্মের অহংকার জয়কে অপহরণ করে ধ্বংস করার চক্রান্ত হয়েছিল। এর কলকাঠি নেড়েছে বিএনপির হাই কমান্ড। এই হাইকমান্ড কারা তদন্ত করে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। কারা টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রতি দিয়ে ছিল খুঁজে বের করতে হবে।
তিনি বলেন, এটা কোন সাধারণ ঘটনা নয়। এই ঘটনার তদন্ত হওয়া দরকার। তারা সেখানে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। এফবিআই যদি আমাদের দেশে এসে তদন্ত করতে পারে তাহলে আমাদের সেখানে যেতে সমস্যা কি। সেখানে গিয়ে তদন্ত করে আসতে হবে। কারা এই কমান্ড। কার এতো শক্তি আমরা দেখতে চাই।
একই দাবি জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, এরা কারা এদের শক্তির উৎস কি। এর গভীর তদন্ত করতে হবে। তিনি সংসদে জানান, পাঁচ লাখ ডলারের চুক্তি হয়েছিল। এই হত্যা ষড়যন্ত্রে সাজাপ্রাপ্ত রিজভী আহমেদ সিজারের পিতা জাসাসের সহ সভাপতি মাহমুদুল্লাহ হোসেন মামুন। তিনি প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদের ঘনিষ্ট বন্ধু।
এ সময় সংসদ অধিবেশনের শেষ লগ্নে ডেপুটি স্পিকার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আমেরিকা থেকে বিধি মোতাবেক মামলার নথি এনে তা বিচার বিশ্লেষণ করে দেখার আহ্বান জানান।
মন্তব্য চালু নেই