অবৈধ সরকার অস্ত্রের জোরে জনগণের সকল গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দোহাই দিয়ে প্রতিমুহূর্তে মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জনকে পদদলিত করে গণতন্ত্রকেই বিলুপ্ত করছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর স্মরণ রাখা উচিৎ তার পিতা বাকশাল গঠনের মাধ্যমে গণতন্ত্র হত্যা করে যেমন আওয়ামী লীগকে অস্তিত্বহীন করে দিয়েছিল, তেমনি তিনিও পিতার পথ অনুসরণ করে পুণর্বার আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে দাফন করার আয়োজন করে চলেছেন।’

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে শনিবার বিকেলে তিনি এ সব কথা বলেন।

‘বর্তমান নিপীড়ক শাসকচক্রের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলন-সংগ্রাম কেবলই বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের ক্ষমতায় যাওয়ার লড়াই নয়’ বলে দাবি করেছে দলটি। ‘রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণের কাছে ফেরতের আন্দোলনকে সরকার জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি কর্মকাণ্ড হিসেবে উপস্থাপনের সীমাহীন অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে’ বলেও বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়।

সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের নিভৃত পল্লীতে গতকাল মিথ্যা মামলায় বিএনপি নেতাকে ধরতে গিয়ে পুত্র রেজওয়ানুলকে হত্যা করে স্ত্রী-কন্যাকে গুলিবিদ্ধ করে পুলিশ গ্রামবাসীর প্রতিরোধে পলায়ন করতে বাধ্য হয়। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আজ দেশের সকল পাড়ায়-মহল্লায় জনগণের নেতৃত্বে স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিরোধ-সংগ্রাম কমিটি গড়ে উঠেছে। জনতার স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধের মুখেই অবৈধ সরকারও অতি শিগগিরই পলায়নে বাধ্য হবে।’

সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘বিনা ভোটের অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হুকুমে র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবির কতিপয় দলবাজ সেবাদাস কর্তাব্যক্তিরা আন্দোলনরত বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন নৃশংস কায়দায় ক্রসফায়ারের মাধ্যমে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করে সমগ্র দেশকে বধ্যভুমিতে পরিণত করলেও তারা অবৈধ সরকারকে রক্ষা করতে পারবে না। ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকা পর্যন্ত সর্বত্র ওই সব দলবাজ পিশাচ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তালিকা প্রণয়ন অব্যাহত রেখেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীকে পুনরায় পুলিশ রিমান্ডে নেওয়ায় আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। গুরুতর অসুস্থ রিজভীকে হত্যার উদ্দেশ্যেই সরকার গ্রেফতারের পর থেকে আজ পর্যন্ত কারাগারে না নিয়ে ২৯ দিন লাগাতার পুলিশি রিমান্ডে নেওয়ার নজিরবিহীন ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে। রিজভী আহমেদের যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে এর দায়দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।’

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘পুলিশ বেষ্টনীর মধ্যেও ব্লগার অভিজিৎ রায়ের হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা দিতে সরকার ব্যর্থ। আমরা অভিজিৎ হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।’

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রবিবার থেকে ৭২ ঘণ্টার হরতাল পালন করতে বিবৃতিতে নেতাকর্মীসহ জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।