ফটোশপের কারিকুরি
অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত ভারতীয় আলোকচিত্রী ডেভিড ডি সুজার কথা মনে পরে গেল। ভারতে বসবাসরত এই শিল্পীর সঙ্গে আজ থেকে চার বছর আগে ঘটনাচক্রে এক আড্ডায় আলাপ হয়ে যায়। শিল্পীর সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে খেয়াল করি আমাদের মধ্যে আলাপের চেয়েও বাহাস হচ্ছিল বেশি। ব্যক্তি আমি নিজেও আলোকচিত্রী হওয়ায় বাহাসটা যেন জমে ক্ষীর হয়ে উঠছিল ক্রমশ। সেই বাহাসের অনুষঙ্গ ছিল ফটোশপ নামের একটি সফটওয়্যার। ডেভিড তার আলোকচিত্রে ফটোশপের ব্যবহার করে দুর্দান্ত সব সুররিয়াল আবেশ তৈরি করেছিলেন, যা অন্তত আমার কাছে তৎকালীন সময়ে নতুন ছিল।
আমাদের বাহাসের মূল জায়গাটা ছিল আলোকচিত্রে ফটোশপের ব্যবহার প্রসঙ্গে। এক পর্যায়ে ডেভিড যে কথাটি আমাকে বলেছিলেন তা আজও কানে বিধে আছে। ‘আমার হাতে যে ক্যামেরাটি আছে সেটা একটা প্রযুক্তি, আবার আমার কম্পিউটারে ফটোশপ নামের যে সফটওয়্যারটি আছে সেটাও প্রযুক্তি। আমি আমার তোলা ছবিতে অনেক কিছু বলতে চাই, যা সচরাচর আমি বা আমরা সবাই স্বপ্নে দেখি। মানুষ ভাবে, স্বপ্ন সত্যি হয় না। কিন্তু আমার কাছে স্বপ্ন হলো বাস্তবতা থেকে উঠে এসে আগামীর পথে হেটে যাওয়া। তাই ফটোশপ এবং ক্যামেরা আমার কাছে সমান্তরাল।’
চারবছর আগে ডেভিডের ওই কথাগুলো শুধু একজন আলোকচিত্রীর বক্তব্য ছিল না। ছিল একজন স্বপ্ন বিশেষজ্ঞ ও শিল্পীর কথা। সুররিয়াল ফটোগ্রাফির দুনিয়ায় অনেকেই বেশ দাপট দেখিয়েছেন কিন্তু ডেভিড সেই দাপটে যোগ করেছেন বাড়তি রস, যা মানুষকে দ্বিতীয়বার টেনে আনে আলোর সন্ধানে। সম্প্রতি লাতিন আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনার এক শিল্পী মার্টিন ডি প্যাসকেল তার চিত্রকর্মকে ভিন্নতা দিতে ব্যবহার করেছেন ফটোশপ। গতানুগতিক ফর্মের বাইরে দাড়িয়ে এধরনের কাজ করা যতটা সহজ বলে মনে হয় আদতে তার চেয়েও বহুগুন কঠিন। প্যাসকেলের সৃষ্টিকর্মগুলোর দিকে একটু দৃষ্টি দিলেই সেটা অনুধাবন করা যায়। পাঠকদের জন্য এই আলসেমি ঘেরা ছুটির দিনে তাই প্যাসকেলের সুররিয়াল (পরাবাস্তব) শিল্পকর্ম তুলে ধরা হলো। হয়তো আপনাদের কারও স্বপ্নের সঙ্গে মিলেও যেতে পারে।
মন্তব্য চালু নেই