গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগ

বাংলা সাহিত্যের ধারাকে আরও উন্নত ও আলোকিত করার লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে

একটি জাতির আশা-আকাঙক্ষা ও চিন্তা -চেতনার প্রতিফলন হয় তার সাহিত্যে । সাহিত্যের সাথে মানবজাতির জীবন ও সমাজের যোগাযোগ খুবই ঘনিষ্ঠ। মানুষের দর্শন ,বিজ্ঞান ,ধর্মনীতি,অনুরাগ-বিরাগ,আশা-নৈরাশ্য,তার অন্তরের সত্য ও সপ্ন-এ সবই সাহিত্য। দর্পনে যেমন আমাদের পূর্ণাঙ্গ মুখচছবি প্রতিফলিত হয়, তেমনি সাহিত্যেও একটি জাতির পরিপূর্ণ চিএ ফুটে উঠে । যে জাতি যত উন্নত সে জাতির সাহিত্য তত সমৃদ্ধ ।

জাতির অতীত ইতিহাস ও ঐতিহ্য সাহিত্যের বিষয়ুবস্তুু হিসেবে গৃহীত হয়।জাতি হিসেবে কোন দেশের মানুষ বর্তমান বিশ্বে কতটা অগ্রসর তা সে দেশের সাহিত্য পাঠে সহজেই জানা যায়। তাই কোন জাতিকে জানতে হলে সে জাতির সাহিত্যের সাথে পরিচিত হতে হবে। কেননা প্রত্যেক জাতির কবি-সাহিত্যিকগন তাদের লেখনির নিপুন আচরে সে জাতির নিজস্ব জীবনধারা ও বৈশিষ্ট্য ,এছারাও জাতীয় জীবনে মানুষের উথ্থান-পতন,প্রেম-ভালবাসা,সুখ-দুঃখের কাহিনী ফুটিয়ে তোলেন।তাই সাহিত্য কেবল কবির কবিতা ও সাহিত্যিকের রচনা নয়,তা একটি জাতির ধারক ও বাহক বটে ।

বাংলা সাহিত্যের ধারাকে আরও উন্নত ও আলোকিত করার লক্ষ্যে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৮ সালে মৌল ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে বাংলা ভাষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগ চালু হয়।

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি একটি দেশের জনগনের জন্য মূল ভিত্তি হিসেবে পরিলক্ষিত হয়। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকতে হলে ভিত্তিকে মজবুত করা অবশ্য কর্তব্য। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভুদ্ধ গণ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগ চালু করে।
মাতৃভাষা বাংলাকে উপযুক্ত মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে হলে বাংলা সাহিত্য সম্পর্কে অবহিত থাকা প্রয়োজন। বাংলা বিভাগের অনার্স কোর্সের সুবিধা হল : শুদ্ধ বাংলা উচ্চারণ, আবৃত্তি চর্চা, সঙ্গীত শিক্ষা, উপস্থাপনা, নাট্যভিনয়, ইংরেজী, আরবী ও সংস্কৃত ভাষা শিক্ষা এবং অফিস ম্যানেজমেন্ট ও ইন্টারনেট ব্যাবহারসহ কম্পিউটার শিক্ষা কোর্স ।

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ পরিচালিত হচ্ছে পূর্ণকালীন ৮ অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী দ্বারা। যাদের প্রায় প্রত্যেকে বাংলা ভাষা সাহিত্য ও সংস্কৃ্তির ওপর গবেষণা করেন এবং দেশের বুদ্ধিজীবি হিসেবে পরিচিত।

সঠিক ও চেতনাভিত্তিক দিক নির্দেশনার মাধ্যমে মৌল ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন ও বাংলা ভাষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. মাহমুদ শাহ কোরেশী বাংলা বিভাগকে এগিয়ে নিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। যিনি প্যারিস, চবি ও রাবির বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে এবং বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্বরত ছিলেন।

বাংলা, ইংরেজী ও ফরাসি ভাষায় তিনি বহু প্রকাশনাসহ শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদক এবং ফরাসি সরকার তিনটি সম্মাননা পদক প্রদান করেন।

পরিপূর্ণ লাইব্রেরী ও সেমিনার কক্ষ রয়েছে গণবির বাংলা বিভাগে। যেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় সকল বই ছাড়াও দুষ্প্রাপ্য কিছু বই রাখা হয়েছে। যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের জ্ঞান ভান্ডারের প্রসারণের কাজ সম্পাদন করতে পারছে আরও দ্রুত।

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে সর্বদা সুসম্পর্ক বিদ্যমান। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলা বিভাগের শিক্ষকেরাও শিক্ষার্থীদের সাথে যথেষ্ঠ বন্ধুভাবাপন্ন। পরীক্ষার খাতা পর্যালোচনার ক্ষেত্রে এখানে ২য় পরীক্ষক ব্যাবস্থা চালু আছে।

সম্প্রতি বাংলা বিভাগের অধীনে মিউজিক ক্লাব চালু করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। যেখানে শিক্ষার্থীরা সঙ্গীত চর্চা ক্লাসের পাশাপাশি কবিতা আবৃতির ক্লাসেরও সুবিধা পায়।

তাছাড়া সেমিনার আয়োজনে পটু এই বিভাগটির সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে গণস্বাস্থ্যের রয়েছে নিজস্ব গণমুদ্রণ। যেখানকার প্রকাশিত বইগুলোর মোড়ক উন্মোচন করা হয় গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রাঙ্গণে।

ভাল মানের লেখক হওয়ায় ক্ষেত্রে উৎসাহ হিসেবে বই কিংবা লেখালেখি প্রকাশে অগ্রাধিকার পায় গণবির শিক্ষার্থীরা।
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগকে পরিপূর্ণ করার লক্ষ্যে ২০১৩ সালে ১ ও ২ বছর মেয়াদী মাস্টার্স কোর্স চালু হয়।

এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের চতুর্থ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ফরহাদ হোসেন ও জানান-“গণস্বাস্থ ও গণ বিশ্ববিদ্যালয় বাঙ্গালীর জাতীয়তাবাদ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত। এই আলোকে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের পথ চলা শুরু। এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আগামী দিনের সাহিত্য ও সংস্কৃতির সকল শাখায় অবিরাম পদচারনায় দৃঢ় প্রত্যয় ব্যাক্ত করছি।”

গণবির বাংলা বিভাগের সিনিয়র লেকচারার কৃষ্ণা ভদ্র বলেন-“এই বিভাগে পড়ালেখার পাশাপাশি যদি শিক্ষার্থীরা নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তি, বিতর্ক প্রতিযোগীতা, শুদ্ধ উচ্চারণ ও সেমিনার প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিপূ্র্ণরুপে জ্ঞান অর্জন করে তবে লেখক, সমালোচক, দোভাষী ও অনুবাদক হিসেবে সর্বক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারবে।”

বাংলা বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর আবেদা আফরোজ জানান-”আমরা গর্ব করতে পারি যে অন্যান্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগ থাকলেও আমাদের বাংলা বিভাগের সিলেবাস পরিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ। আমরা বাংলা ভাষার পাশাপাশি সংস্কৃত, ইংরেজী ও আরবী ভাষার কথোপকথন শিক্ষা দিয়ে থাকি। আমাদের সিলেবাসে মঞ্চনাটকও রয়েছে।”



মন্তব্য চালু নেই