দিল্লিকে ঢাকার আশ্বাস :
হাসিনা সরকার আরো কঠোর হবে
বাংলাদেশে অশান্ত পরিস্থিতি সামলাতে শেখ হাসিনার সরকার প্রয়োজনে আরো কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলে প্রতিবেশী ভারতকে তারা আশ্বস্ত করেছে বলে জানা গেছে।
শেখ হাসিনার সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসও মনে করছে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়নি, এবং অবস্থা সামাল দিতে জরুরি অবস্থা বা সামরিক হস্তক্ষেপেরও এখনই প্রয়োজন হবে না।
বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ শরন (সোমবার) দিল্লিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে এই মর্মেই ‘ব্রিফ’ করেছেন বলে বিবিসি জানতে পেরেছে।
ভারত এই বৈঠক নিয়ে সরকারিভাবে মুখ খোলেনি। বরঞ্চ বলা হয়েছে এটা নিয়মিত রুটিন বার্ষিক বৈঠক।
শুধু পঙ্কজ শরনই নন, আসলে এই মুহূর্তে সারা দুনিয়া জুড়ে ভারতের যত রাষ্ট্রদূত আছেন তারা সবাই দিল্লিতে এসেছেন তাদের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে।
দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্রে বিবিসি জানতে পেরেছে মি. শরন তার মন্ত্রীকে এটাই জানিয়েছেন যে বাংলাদেশ সরকার এখনও মনে করছে পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে এবং দরকারে তারা আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতেও প্রস্তুত।
কিন্তু জরুরি অবস্থা বা সামরিক বাহিনী নামানোর মতো অবস্থা এখনও হয়নি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো বিবিসিকে বলেছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেছে বা তিনি আপোষের জন্য প্রস্তুত এমন কোনও ইঙ্গিত কিন্তু তারা এখনও পাননি। বরং তিনি আরও কড়া হাতে সহিংসতার মোকাবিলা করবেন বলেই কথা দিয়েছেন।
পেট্রলবোমা ও বিএনপির জনপ্রিয়তা
ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের আর একটি মূল্যায়ন – বিরোধী বিএনপি-র পেছনে যথেষ্ট জনসমর্থন থাকা সত্ত্বেও গত এক মাসের টানা অবরোধ বা পেট্রলবোমা-হামলার জেরে সেই জনপ্রিয়তাতেও কিন্তু আস্তে আস্তে ভাঁটা পড়ছে।
সাধারণ মানুষ আস্তে আস্তে ক্লান্ত, বিরক্ত হয়ে পড়ছেন বলেই তাদের ধারণা।
কিন্তু দিল্লি চাইছে বাংলাদেশের সংকটটা দ্রুত মিটুক, কিন্তু সেই সমাধানে ভারতের যেন কোনো ছায়া বা পক্ষপাত না দেখা যায়। এই বিষয়টা নিয়েও ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
কিন্তু ভারত বাংলাদেশে সংকটের ঠিক কী ধরনের সমাধান দেখতে চাইছে? এই প্রশ্নে ভারতের কর্মকর্তারা বলছেন, স্থিতিশীলতাই প্রধান কাম্য।
তারা বলছেন, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ-রেল-পরিবহন ইত্যাদি নানা খাতে ভারতীয় কোম্পানিগুলো গত কয়েক বছর ধরে শত শত কোটি টাকা লগ্নি করে ফেলেছে। কিন্তু টানা অবরোধ আর অস্থিরতায় সেই সব বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ নিয়েও এখন উদ্বেগ বাড়ছে।
ভারতীয় কর্মকর্তারা বলছেন, স্ট্র্যাটেজিক দিক থেকে ভারতের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব অনেক। কিন্তু একইসাথে অর্থনীতির দিক থেকেও বাংলাদেশের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। সেজন্যই ভারত চায় বাংলাদেশে একটা সুস্থির গণতান্ত্রিক কাঠামো, যা ব্যবসা-বাণিজ্যকে সাহায্য করবে।- বিবিসি
মন্তব্য চালু নেই