নারায়ণগঞ্জে ৭ খুন

চাকরিচ্যুত তিন র‌্যাব কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ হাইকোর্টের

নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত অপহরণ ও খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চাকরিচ্যুত র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদসহ ৩ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রোববার এ বিষয়ে দায়ের করা রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

প্রচলিত আইনে র‌্যাব কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করতে না পারলেও ৫৪ ধারায় তাদের গ্রেপ্তার করতে বলেছেন আদালত। গ্রেপ্তার করার পর তা আদালদকে জানাতে বলা হয়েছে। এদেরকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদের ব্যবস্থা করতেও বলা হয়েছে। পাশাপাশি র‌্যাব কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদ সংক্রান্ত আদেশ বাস্তবায়নের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দশ দেয়া হয়েছে।

জান-মাল ও মৌলিক অধকার রক্ষায় সংবিধান অনুযায়ী পর্যাপ্ত আইন করার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর (র‌্যাব, পুলিশ) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রচলিত আইন হালনাগাদ (আধুনিক), সংশোধন করার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।

আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদেরকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ সিনিয়র আইনজীবী ড. কামাল হোসন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল এমকে রহমান।

এদিকে, রোববার নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত অপহরণ ও খুনের ঘটনায় সাবেক প্রধান বিচারপতি বা আপিল বিভাগের ১ জন বিচারপতির নেতৃত্বে বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন কারার জন্য একটি রিট দাযের করা হয়।
একইসঙ্গে অভিযুক্ত র‌্যাব সদস্যদের গ্রেপ্তারের নির্দেশনা কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আবেদন করা হয়।

রোববার সকালে রিটটি দায়ের করেন নিহত চন্দন সরকারের মেয়ে জামাই ডা. বিজয় কুমার পালসহ তিন ব্যক্তি। রিটকারী অন্যারা হলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. সাখাওয়াত হোসেন ও আইনজীবী মাহাবুবুর রহমান ইসমাইল।

রিটে স্বরাষ্ট্র, আইন ও জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে বিবাদী করা হয়েছে।

এর আগে ওই তিন কর্মকর্তাকে অবসরে পাঠায় স্ব-স্ব বাহিনী।

গত ২৭ এপ্রিল সাতজনকে অপহরণের পর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাতা র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদ এবং দুই কমান্ডার নৌবাহিনীর মেজর আরিফ হোসেন ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমএম রানাকে ২৮ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রত্যাহার করা হয়।

গত ৩০ এপ্রিল লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদকে অকালীন (পূর্ণ সুবিধাসহ) এবং মেজর আরিফ ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমএম রানাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়।

এর আগে গডফাদার নূর হোসেনের দেয়া ৬ কোটি টাকার বিনিময়ে র‌্যাব-১১ এর সিওসহ অন্যরা ৭ জনকে হত্যা করেছে এমন অভিযোগ করেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নিহত নজরুল ইসলামের পরিবার।

নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম ও তার বাবা (নজরুলের শ্বশুর) শহীদুল ইসলাম জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে র‌্যাবের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন।



মন্তব্য চালু নেই