খালেদার মোবাইল কথোপকথন নিয়ে মন্ত্রিসভায় তোলপাড়

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মোবাইলে গোপন কথোপকথন নিয়ে মন্ত্রিসভায় তোলপাড় হয়েছে।

সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে খালেদা জিয়ার বেশ কয়েকটি মোবাইলে গোপন কথোপকথনের অডিও বার্তা শোনানো হয়।

এক অডিওতে খালেদা জিয়া মোবাইলে চট্টগ্রামের এক নেতাকে বলেন, ‘আপনার এটা করেন, খসরুর বাধা শোনবেন না। বাধা দিলে তাকে বের করে দেবো।’ এ অডিও রেকর্ডসহ খালেদা জিয়ার আরো কিছু দিকনির্দেশনামূলক মোবাইল কথোপকথন মন্ত্রিসভায় বাজিয়ে শোনানো হয়।

তবে খালেদা জিয়ার এসব কথোপকথন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনো মন্তব্য না করলেও, মন্ত্রিসভার অনেক সদস্যই বলেছেন- ‘এটি চিহ্নিত করা উচিৎ।’

অপর এক অডিও বার্তায় খালেদা জিয়াকে বলতে শোনা যায়, ‘রাজধানীতে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে কেন লোক হয় না?’ এ বিষয়ে খালেদা জিয়া বিভিন্ন নেতাকর্মীদের কাছে তা জানতেও চেয়েছেন।

এক বিশ্বস্ত সূত্র মন্ত্রিসভায় খালেদা জিয়ার কথোপকথন নিয়ে আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয় ও তার আশপাশে বর্তমানে মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে কার্যালয়ে থাকা টেলিফোন লাইনটিও বিচ্ছিন্ন।

 

রূপকল্প বাস্তবায়ন সহায়ক নতুন আইসিটি নীতিমালা
মধ্য ও উন্নত আয়ের দেশ গড়ার সরকারের দুটি রূপকল্প বাস্তবায়ন সহায়ক নতুন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এ জন্য ‘জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা, ২০১৫’ অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অনুমোদনের কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছিল। ছয় বছর পর এটি হালনাগাদ করার প্রয়োজন হয়েছে। হালনাগাদ করে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়।’

নতুন নীতিমালায় তথ্য ও যোগাযোগ খাতের পরিচালনার দিক-নির্দেশনা রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘নীতিমালাটি পেশাদারিত্বের সঙ্গে প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা করে কোন মন্ত্রণালয় কি কাজ, কোন সময়ে করবে তা বলা হয়েছে।’

মোশাররাফ হোসাইন বলেন, ‘কাজগুলোতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি এই তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যে কাজগুলো ২০১৬ সালের মধ্যে শেষ করা হবে সেগুলো স্বল্প মেয়াদি, মধ্য মেয়াদি কাজগুলো ২০১৮ সালের মধ্যে শেষ করা হবে। ২০২১ সালের মধ্যে দীর্ঘ মেয়াদি কাজগুলো সম্পন্ন করা হবে।’

‘নীতিমালায় ১০টি উদ্দেশ্য, ৫৬টি কৌশলগত বিষয়বস্তু ও ৩০৬টি করণীয় বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। প্রত্যেকটি কোন মেয়াদে কার মাধ্যমে বাস্তাবায়িত হবে তা উল্লেখ করা হয়েছে’ বলেন মোশাররাফ হোসাইন।

তিনি বলেন, ‘সরকারে যারা কাজ করেন তাদের জন্য এটি একটি অনুসরণীয় নির্দেশিকা। পাশাপাশি নীতিমালায় আইসিটি বিকাশে বেসরকারি খাত, এনজিও ও সিভিল সোসাইটির ভূমিকা হাইলাইট (তুলে ধরা) করা হয়েছে। আর এ সব কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য হচ্ছে নাগরিকদের সেবার মান উন্নয়ন।’

নীতিমালায় একটি রূপকল্প রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এতে রয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্প্রসারণ, বহুমুখী ব্যবহারের মাধ্যমে এটি স্বচ্ছ, দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিতামূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করা, দক্ষ মানব সম্পন্ন উন্নয়ন নিশ্চিত করা, সামাজিক ন্যায়পরায়ণতা বৃদ্ধি করা, সরকারি-বেসরকারি খাতে অংশীদারিত্বে সুলভে জনসেবা নিশ্চিত করা। ২০২১ সালের মধ্যে দেশেকে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের সারিতে উন্নীতকরণের জাতীয় লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করা।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের ভিশন ২০২১ ও ভিশন ২০৪১ রূপায়নে নানা কলাকৌশল আছে। এর মধ্যে অন্যতম প্রধান কৌশল হল আইসিটির ব্যবহার। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যাপকতর ও গভীরতর ব্যবহার আমাদের উন্নতির প্রধান অবলম্বন।’

তিনি জানান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এর আগে ২০১৩ সালের ১১ মার্চ নীতিমালাটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য এনেছিল। মন্ত্রিসভা তখন এটি অনুমোদন না দিয়ে কিছু অনুশাসন দিয়েছিল। আইসিটি বিভাগ এখন নীতিমালাটি রিভাইস করে আবার এনেছে। অনুমোদন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এবার কিছু বিষয় সংশোধন করতে বলেছে মন্ত্রিসভা। এরপরই এটি প্রকাশ করবে তারা।

এ ছাড়া বৈঠকে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর মালয়েশিয়া সফর ও তেহরানে একটি সম্মেলনে মন্ত্রীর অংশগ্রহণ সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই