রুবেলের জন্য নিয়ম ভাঙলো রাষ্ট্রপক্ষ!

ধর্ষণ মামলায় সাধারণত রাষ্ট্রপক্ষ ধর্ষিতার পক্ষেই অবস্থান নিয়ে থাকে। কিন্তু জাতীয় দলের পেসার রুবেল হোসেনের ক্ষেত্রে তার ব্যত্যয় ঘটলো। চিত্রনায়িকা নাজনীন আক্তার হ্যাপির ধর্ষণ মামলায় রুবেলের জামিন আবেদনের বিরোধিতা করা থেকে বিরত থাকে রাষ্ট্রপক্ষ। এই ব্যতিক্রমের বিষয়টি বিচারক তার আদেশে উল্লেখ করেছেন।

গত রোবাবার ওই জামিন আবেদনের ওপর শুনানির পর রুবেলের জামিন মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. ইমরুল কায়েস। এর ফলে আসন্ন বিশ্বকাপে রুবেলের অংশ নিতে আর বাধা রইল না। সোমবার রুবেল অনুশীলনেও ফিরেছেন। অবশ্য জামিন পেলে রুবেল বিশ্বকাপ খেলতে পারবেন এ কথা আগেই নিশ্চিত করেছিল বিসিবি।

সোমবার প্রকাশিত ওই জামিন আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রসিকিউশন পক্ষ দরখাস্তকারী আসামি (রুবেল হোসেন) বিশ্বকাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের একজন মনোনীত খেলোয়াড় বিধায় জাতীয় স্বার্থে ও দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে তার জামিনের বিরোধিতা করেন নাই।

এ সম্পর্কে ওইদিন আদালতে উপস্থিত ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু জানান, বাদীপক্ষের ব্যক্তিগত আইনজীবী থাকায় তারা কোনো বক্তব্য দেননি। তবে রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউশন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আমিনুর রহমান যা বলার বলেছেন। কারণ ফৌজদারি বিবিধ মামলায় তিনিই রাষ্ট্রপক্ষে বক্তব্য দেন।

তবে এ সম্পর্কে সহকারী পুলিশ কমিশনার আমিনুর রহমান বলেন, ‘ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শাহ আলম তালুকদারই রাষ্ট্রপক্ষে বক্তব্য রেখেছেন। মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলা হওয়ায় তিনি রাষ্ট্রপক্ষে কোনো বক্তব্য রাখেননি।’

রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা না করার বিষয়ে বাদীর ব্যক্তিগত আইনজীবী শাহজামান তুহিন হাওলাদার বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা না করে পেশাগত দায়িত্বে অবহেলা করেছেন। আদালতের আদেশে বুঝা যায়, রাষ্ট্রপক্ষ সরাসরি আসামি রুবেল হোসেনের জামিন হোক, এটাই চেয়েছেন।’

উল্লেখ্য, গত ১৩ ডিসেম্বর রাজধানীর মিরপুর থানায় চিত্রনায়িকা নাজনীন আক্তার হ্যাপি ধর্ষণের অভিযোগ এই মামলা করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, প্রায় ৮ মাস আগে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রুবেলর সঙ্গে হ্যাপির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর রুবেল হ্যাপির ইচ্ছের বিরুদ্ধে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। সর্বশেষ ২ ডিসেম্বর রুবেল হ্যাপিকে ধর্ষণ করেন। পরে তাকে বিয়ের করতে বললে তিনি এড়িয়ে যান।

মামলাটিতে গত ১৫ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুবেল হোসেনের ৪ সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করে সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।

ওই নির্দেশ অনুযায়ী গত ৬ জানুয়ারি রুবেল সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলে ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মাদ আনোয়ার সাদাত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠান।



মন্তব্য চালু নেই