ব্রেইন স্ট্রোকের নানা কারণ
মস্তিষ্ক শরীরের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের প্রধান অংশ এবং পুরো শরীরের চালিকা শক্তি। দেহের কোষকলা সঠিকভাবে কাজ করার জন্য মস্তিষ্কে রক্তের মাধ্যমে অবিরাম অক্সিজেন এবং গ্লুকোজ সরবরাহ জরুরি। সেখানে রক্ত প্রবাহের পরিমাণ আকস্মিকভাবে হ্রাস পেলে তাকে ব্রেইন স্ট্রোক বলা হয়।
যেকোন কারণে মস্তিষ্কের কোনো একটি অংশে রক্ত প্রবাহ হ্রাস পেলে কোষকলার মৃত্যু ঘটে এবং শরীরবৃত্তীয় স্বাভাবিক কাজে বাধা সৃষ্টি হয়। মস্তিকের মধ্যস্থ কোন ধমনী বা শিরা সরু হয়ে গেলে অথবা কোন কারণে রক্ত জমাট বেঁধে গিয়ে রক্তপ্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ার হলে স্ট্রোক হয়। এই ধরণের স্ট্রোককে ‘ট্রানজিয়েন্ট ইসকেমিবা অ্যাটাক’ বলা হয়। বেশির ভাগ রোগীর এ ধরনের স্ট্রোকই হয়ে থাকে।
কখনও মস্তিষ্কের মাঝে এবং খুলির মধ্যবর্তী কোন অংশ বা শিরায় রক্তপাত ঘটার কারণে স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারে। এ ধরনের স্ট্রোককে ‘হেমোরেজিক স্ট্রোক’ বলা হয়। ‘ইসকেমিক’ স্ট্রোক ক্ষণস্থায়ী হয় এবং এক্ষেত্রে অল্প সময়ের মধ্যে রোগের লক্ষণ থেকে মুক্তি লাভ করতে দেখা যায়। ইসকেমিক স্ট্রোকে আক্রান্তদের আবার একই ধরনের স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা বেশি থাকে। পরবর্তীতে এদের হেমোরেজিক স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশংকাও বেশি।
হেমোরেজিক স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। চিকিৎসা নিয়েও শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে উঠতে অনেক সময় লাগে। কখনো সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হতে দেখা যায়। সেক্ষেত্রে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে বা নড়াচড়ায় নিয়ন্ত্রণহীনতা দেখা দেয়। স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাশক্তির ক্ষমতা কমে যায়, ভাষা ব্যবহারে এবং বুঝতে অসুবিধা হয়। আবেগের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিকতা এবং ব্যথাসহ স্নায়ুবিক সমস্যা দেখা দেয়ার আশংকা থাকে।
কোনো ক্ষেত্রে জটিলতার কারণে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। রোগীর সেরে ওঠার মাত্রা নির্ভর করে মস্তিষ্কের কোন অংশের কতটা কোষকলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার ওপর। তবে যে কোনো ধরনের স্ট্রোকেই চিকিৎসা নিতে বেশি দেরি হলে তা জটিল হয়ে উঠতে পারে।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রেইন স্ট্রোক হওয়ার আশংকা বাড়তে থাকে। বিশেষ করে ৫৫ বছরের ঊর্ধ্বে বয়স্ক পুরুষদের ক্ষেত্রে এ রোগের ঝুঁকি বেশি। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তে উচ্চমাত্রার কোলস্টেরল বা হৃদযন্ত্রের সমস্যায় আক্রান্ত এবং ধূমপায়ীদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা বেশি।
মন্তব্য চালু নেই