ফরেনসিক রিপোর্টে হ্যাপিকে ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি

ক্রিকেট তারকা রুবেলের বিরুদ্ধে দায়ের করা চিত্রনায়িকা হ্যাপির ধর্ষণের অভিযোগ ফরেনসিক রিপোর্টে প্রমানিত হয়নি। বুধবার সন্ধ্যায় মিরপুর থানার কতর্ব্যরত অফিসার আল মামুন এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, হ্যাপির ফরেনসিক রিপোর্টে সম্প্রতি তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণের কোন আলামত পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ রয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি জানান, সাম্প্রতিক সময়ে তার সঙ্গে জবরদস্তিমূলক যৌন সম্পর্ক হয়েছে- এমন চিহ্ন বা আলামত পাওয়া যায়নি। এর আগে, দুপুরে মিরপুর থানা পুলিশের একজন কর্মকর্তা ফরেনসিক বিভাগ থেকে প্রতিবেদনটি থানায় নিয়ে আসেন। প্রথমে এ ব্যাপারে থানা পুলিশ মুখ খুলতে না চাইলেও সন্ধ্যার দিকে বিষয়টি পরিষ্কার করেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন খান বলেন, আমি বাইরে আছি। ডিউটি অফিসারকে সব বলা রয়েছে। আপনি তার কাছে ফোন করেন। পরে থানার ডিউটি অফিসার এসআই আল মামুন ধর্ষণের আলামত না পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গত ১৩ ডিসেম্বর এই থানাতেই নারী ও শিশু নির্যাতন ৯/১ ধারায় রুবেলের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছিলেন হ্যাপি। মামলার প্রসঙ্গে ওই দিন হ্যাপি বলেছিলেন, গত আট-নয় মাস ধরে রুবেলের সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সে বিভিন্ন সময় আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে। কিন্তু আমি যখনই বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকি তখন সে টালবাহানা করতে থাকে। পরবর্তী সময়ে সে আমার গায়ে হাত তোলে। এ অবস্থায় আমি মামলা করতে বাধ্য হলাম। মামলার পরপরই সন্ধ্যায় নায়িকা হ্যাপিকে প্রথমে নেয়া হয় তেজগাঁও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে। এর পরদিন ধর্ষণের অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে তাকে নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগে।

হ্যাপির ফরেনসিক টেস্ট করার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট নারী ডাক্তার দিয়ে বোর্ড গঠন করেন ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান হাবীবুজ্জামান। প্রায় ১১ দিন পর বুধবার বিকেলে ফরেনসিক প্রতিবেদনটি মিরপুর থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়। হাবীবুজ্জামান বলেন, ফরেনসিক প্রতিবেদনটি দুপুরের দিকে আমরা হস্তান্তর করি। তিনজন নারী ডাক্তার দিয়ে হ্যাপির ফরেনসিক টেস্ট করা হয়েছে। এদিকে অভিযোগ ওঠার পর কার্যত লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যান ক্রিকেটার রুবেল। এরপর ১৫ ডিসেম্বর স্বশরীরে আদালতে হাজির হয়ে আগাম জামিন আবেদন করেন রুবেল। শুনানি শেষে আদালত রুবেলকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। ওই দিন প্রায় ৮ ঘণ্টা আদালতে কাটাতে হয় রুবেলকে।

এ সম্পর্কিত অন্য একটি খবরে জানানো হয়েছে ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণ মামলার বাদী চিত্রনায়িকা নাজনীন আক্তার হ্যাপির ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে পেয়েছে পুলিশ। এতে সাম্প্রতিক সময়ে তাকে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।

ফরেনসিক রিপোর্টে লেখা রয়েছে, ‘নো সাইন অব রিসেন্ট ফোর্সফুল সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স।’ অর্থাৎ জোর পূর্বক যৌন সংসর্গের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।

বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ থেকে এই রিপোর্ট মিরপুর থানা পুলিশের কাছে পৌঁছে।

মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা পুলিশের মিরপুর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) সাখাওয়াত বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল থেকে ফরেনসিক রিপোর্ট পুলিশের কাছে পৌঁছেছে। আইন অনুযায়ী ফরেনসিক রিপোর্টটি আদালতে উত্থাপন করা হবে। রিপোর্টে যা রয়েছে তা বিশ্লেষণ করে আদালত সিদ্ধান্ত নেবে।’

ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক সূত্র জানায়, তারা হ্যাপীর ফরেনসিক পরীক্ষায় ধর্ষণের কোনো আলামত পাননি।

গত ১৩ ডিসেম্বর জাতীয় দলের পেসার রুবেলের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মিরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন চিত্রনায়িকা নাজনীন আক্তার হ্যাপী। ওই দিন পুলিশ হ্যাপীকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখে।

পরদিন মেডিকেল টেস্টের জন্য হ্যাপীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে নেয়া হয়। পরীক্ষা শেষে হ্যাপীকে তার বাবা-মায়ের হেফাজতে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ।

হ্যাপীর মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। পরীক্ষা শেষে বুধবার তারা পুলিশের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করে।

গত ১৩ ডিসেম্বর মিরপুর থানাতে নারী ও শিশু নির্যাতন ৯/১ ধারায় জাতীয় দলের ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছিলেন হ্যাপি। মামলার প্রসঙ্গে ওই দিন হ্যাপি বলেছিলেন, ‘গত আট-নয় মাস ধরে রুবেলের সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সে বিভিন্ন সময় আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে। কিন্তু আমি যখনই বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকি তখন সে টালবাহানা করতে থাকে। পরবর্তী সময়ে সে আমার গায়ে হাত তোলে। এ অবস্থায় আমি মামলা করতে বাধ্য হলাম।’

এর আগে রিপোর্টের বিষয়ে জানতে চাইলে এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর থানার উপ-পরিদর্শক মাসুদ পারভেজ বলেছিলেন, ‘থানায় রিপোর্টটি জমা হয়েছে আমি শুনেছি। তবে আমি এখন ঢাকার বাইরে আছি। রিপোর্টে কী আছে তা আমি এখনও জানি না।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. মোহাম্মদ হাবিবুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী পুলিশের কাছে রিপোর্ট দেয়ার কথা, দেয়া হয়েছে। রিপোর্টে কী আছে সে বিষয়ে কথা বলার এখতিয়ার আমাদের নেই।’

১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রুবেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর নায়িকা হ্যাপিকে প্রথমে নেয়া হয় তেজগাঁও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে। এর পরদিন ধর্ষণের অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে তাকে নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগে।

ডা. মোহাম্মদ হাবিবুজ্জামান চৌধুরী ওইদিন জানিয়েছিলেন, এটি একটি স্পর্শকাতর বিষয়, এ কারণে নারী সদস্যসহ তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। সাধারণত এ ধরনের রির্পোট দেয়ার জন্য ৭ থেকে ১০ দিন সময় লাগে। আমরা চেষ্টা করবো যতো দ্রুত সম্ভব সততার সঙ্গে রিপোর্টটি দেয়ার।

অভিযোগ ওঠার পর কার্যত লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যান ক্রিকেটার রুবেল। এরপর ১৫ ডিসেম্বর স্বশরীরে আদালতে হাজির হয়ে আগাম জামিন আবেদন করেন রুবেল। শুনানি শেষে আদালত রুবেলকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। ওইদিন প্রায় ৮ ঘণ্টা আদালতে কাটাতে হয় রুবেলকে।



মন্তব্য চালু নেই